দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবারের বার বেলায় বিজেপির ভার্চুয়াল সভা থেকে অমিত শাহ তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। মমতার করোনা এক্সপ্রেস মন্তব্যকে হাতিয়ার অমিত শাহ বলেছিলেন, “ওই এক্সপ্রেসই তৃণমূলকে বাংলার এক্সিট গেট দেখাবে! শ্রমিক মজুররা কিচ্ছু ভোলেন না।”
চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েদিলেন, তিনি করোনা এক্সপ্রেস বলেননি। বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত অমিত শাহের অভিযোগ খণ্ডন করতে চান মমতা। এদিন তিনি বলেন, “আমি কিন্তু কোনও দিনই করোনা এক্সপ্রেস বলিনি। অমি বলেছিলাম পাবলিক বলছে। আপনারা যদি আমার সেদিনের স্টেটমেন্ট বের করেন দেখবেন, আমি বলেছিলাম পাবলিক এটাকে করোনা এক্সপ্রেস বলছে!” আর যা শুনে রাজ্যে বিজেপির নেতারা টিপ্পনি কেটে বলছেন ডিগবাজির নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
সরকারি কর্মচারীদের দুই শিফটে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই ঘোষণা করতেই এদিনের সাংবাদিক বৈঠক ছিল। কিন্তু শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ করতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী সরকারকে লকডাউন গভর্মেন্ট বলেও কটাক্ষ করেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “লকডাউনের শুরুতে বলল বেসরকারি সংস্থাগুলি যেন কর্মীদের মাইনে দেয়। তারপর মাইনে দিতে বাধ্য নয়, এরকম কিছু একটা বলেছে। এ তো জোচ্চরের বাড়ির ফলার খাওয়া! শ্রমিকদের প্রতারিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।”
তবে করোনা ‘এক্সপ্রেসে বলিনি’ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, সন্দেহ নেই করোনা এক্সপ্রেস মন্তব্য শ্রমিকদের কানে বিঁধেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি তাকে রাজনৈতিক অস্ত্র করেছে। তাঁদের বক্তব্য, তাতে যে তৃণমূলের উপর চাপ তৈরি হয়েছে আজকে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে পরিষ্কার। এটা স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রী পিছু হঠেছেন।
প্রসঙ্গত, ওই মন্তব্যের দু’দিন পরেই মমতা দাবি তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার পরিযায়ী শ্রমিক ও নির্মাণ শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে নগদ ১০ হাজার টাকা করে দিক। সেই সময়ে বঙ বিজেপির নেতাদের বক্তব্য ছিল, করোনা এক্সপ্রেস মন্তব্য ব্যুমেরাং হওয়াতেই এসব বলে ‘পুলটিস’ দিতে চাইছেন। তাঁরা এও বলেছিলেন, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে বহু সংখ্যালঘু ভাইয়েরাও ফিরছেন। তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীর কথাকে ভাল ভাবে নেননি।
তবে এদিনও মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অব্যবস্থার অভিযোগ তোলেন। বলেন “এই সরকারের কোনও প্ল্যান নেই। কর্মে সর্বনাশ আর পরিকল্পনায় বিনাশ। যে ট্রেনে ৮০০ লোক আসার কথা সেখানে ১২০০ লোক তুলে দিচ্ছে। তাই করোনা বেড়ে যাচ্ছে।”