দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনার আবহেই ঢাকে কাঠি পড়ল। শুরু হয়ে গেল দুর্গা পুজো। ষষ্ঠীর দিন দিল্লিতে বসেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কলকাতার পুজো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গরদের ধুতি–পাঞ্জাবি পরে সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলায় শুরু করলেন অভিনন্দন জানানো। কখনও রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বাংলার বন্দনা। তো কখনও দুর্গাস্তব পাঠ করে তার অর্থ বিশ্লেষণ। মোদীর ভাষণে শুরু থেকে শেষ অবধি ছিল বাঙালিকে কাছে টানার আপ্রাণ চেষ্টা। সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাঙালি কৃতীদের নাম নিয়ে তুলে ধরতে চাইলেন বাংলার সাংস্কৃতিক গরিমা। ছুঁতে চাইলেন বাঙালির ভাবাবেগ। তাই ভাষণ শুরুও করলেন বাংলায়।
মোদীর ভাষণের আগে উদ্বোধনী সঙ্গীত করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ছিল ডোনা গাঙ্গুলির নাচ। তার পরেই ভাষণ শুরু করেন মোদী। সূচনা ছাড়া বাকি বক্তৃতা হিন্দিতে দিলেও মাঝেমাঝেই এসেছে বাংলা শব্দ, বাক্য। আর ভাষণেরই বিষয় ছিল বাংলা ও বাঙালি।
বাংলার মানুষকে দুর্গাপুজোর অভিনন্দন জানিয়ে লোকনাথ বাবা, অনুকূল ঠাকুরের নাম স্মরণ করেন তিনি। তাঁর মতে, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নিলেই অন্তরে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানে জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম নেন প্রধানমন্ত্রী। সিনেমা জগতে ঋত্বিক ঘটক, সুচিত্রা সেনের মতো শিল্পীদের অবদানও উল্লেখ করেন তিনি।
মোদী এও বললেন, বাংলার মানুষ চিরকাল দেশকে উন্নতির পথ দেখিয়েছে। ‘আমার আশা আগামী দিনেও বাঙালিরা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ তবে উৎসবের মুরসুমেও সাবধান করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা বিধি মেনে পুজো দেখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
মায়ের পুজোর আবহে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিলেন, মহিলাদের জন্য কেন্দ্র কী কী পদক্ষেপ করেছে। ২২ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ১২ সপ্তাহ থেকে ২৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। ‘বেটি বাচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়েছে। এসবের মাঝে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ কবিতার দু’ লাইনও বলেছেন তিনি।
Feeling blessed to be a part of Maa Durga Pujo’s Mahashashti celebrations. https://t.co/i2BHHu33jX
— Narendra Modi (@narendramodi) October 22, 2020
বাংলায় রাজ্যের মানুষকে পুজোর অভিনন্দন জানান তিনি।
• তিনি বলেন, দিল্লিতে রয়েছি। কিন্তু উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে দিল্লি নয় কলকাতায় আছি।
• রাম মন্দিরের ভূমিপূজনে যে রঙের পোশাক পরে গিয়েছিলেন, আজও সেই রঙের পোশাকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। শুধুমাত্র উত্তরীয় নেওয়ার ধরনে ছিল বাঙালি ছোঁয়া।
• অনুকুল ঠাকুর, বাবা লোকনাথের নাম স্মরণ করেন তিনি।
• শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রাজা রামমোহন রায়ের নাম নিলেই অন্তরে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয় বলে মত মোদীর।
• বিজ্ঞানে জগদীশচন্দ্র বসু ও আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদানও স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
• সিনেমা জগতে ঋত্বিক ঘটক, উত্তমকুমার সুচিত্রা সেনের মতো শিল্পীদের অবদানও আজ উল্লেখ করেছেন তিনি।
• উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রের বাঙালি মনীষী ও বাংলার উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের নাম নিয়েছেন মোদী। স্মরণ করেছেন তাঁদের অবদান।
• বাংলার লোকেরা চিরকাল দেশকে উন্নতির পথ দেখিয়েছে। আমার আশা আগামী দিনেও বাঙালিরা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাবে: মোদী
• মা দুর্গার উপাসনার পাশাপাশি করোনা সঙ্কটের কথাও স্মরণ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
• মণ্ডপে লোক প্রবেশ কমেছে, সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু উৎসবে বাঙালির উৎসাহের কোনও অভাব নেই। এটাই তো বাংলা। এটাই বাংলার পরিচয়: মোদী।
• বাংলার দুর্গাপুজো দেশের পরিচিতিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় বলে মত প্রধানমন্ত্রীর।
• দুর্গাপুজোয় মাস্ক পরে, করোনা থেকে সাবধান থাকার জন্য রাজ্যবাসীরে আর্জি প্রধানমন্ত্রীর।
• মা দুর্গা দুর্গতিনাশিনী। দুর্গাপুজো যেখানেই হয়, সেখানে অভাব দূর হয়। গরীবের কল্যাণ হয়: মোদী।
• দুর্গার দেশে মহিলাদের শক্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর। ২২ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
• মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ১২ সপ্তাহ থেকে ২৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। ‘বেটি বাচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়েছে: মোদী
• আত্মনির্ভর ভারতের পাশাপাশি সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
• রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ কবিতাটি দু’কলি পাঠ করে তিনি।
• বাংলার লোকদের সুবিধার জন্য কেন্দ্রে কাজের কথা উল্লেখও ষষ্ঠীর অনুষ্ঠানে তিনি করেছেন।
• প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাংলায় কী কী কাজ হয়েছে, সেই পরিসংখ্যানও এ দিন দিয়েছেন মোদী।
• শান্তি, প্রেমের ভাবনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, হিংসাকে অহিংসা দিয়ে জয় করতে হবে।
• সবশেষে প্রতিবছর মা দুর্গা ও মা কালীর সেবা যাতে করতে পারেন সে জন্য প্রার্থনা করেছেন।
• হিন্দিতে বললেও বক্তৃতার শুরুতে ও শেষের অধিকাংশ অংশ ছিল বাংলায়।