একুশের যুদ্ধ: অমিত শাহ বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-দামামা বেজে গেল বাংলায়

0
840

দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ লোকসভা ভোটে বিজেপি বাংলায় ১৮ টি আসন জেতার পর অনেকের ধারণা হয়েছিল, রাজ্য রাজনীতিতে এই বুঝি তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। এ ব্যাপারে গেরুয়া শিবিরে যেমন আশা ছিল, তেমনই আশঙ্কা ছিল শাসক দলের একাংশের মধ্যে।

অথচ গত সাত-আট মাসে তেমন কিছু হয়নি। উল্টে বিধানসভার তিনটি আসনের উপ নির্বাচনে ডাহা হেরেছে বিজেপি। তাতে স্বাভাবিক ভাবে বল পেয়েছে তৃণমূল। তা ছাড়া ঝাড়খণ্ড ও দিল্লি ভোটে বিজেপির বিপর্যয়ের পর দৃশ্যত আরও দমে গিয়েছিলেন বিজেপির নেতা কর্মীরা। আর সে সবের মাঝে বাম-কংগ্রেস আবার জোরদার প্রচার শুরু করেছিল, সেটিং হয়ে গেছে-সেটিং হয়ে গেছে!

কিন্তু গত চব্বিশ ঘণ্টায় দুটি সভা অন্তত স্পষ্ট করে দিল, বাংলায় আগামী দিনে রাজনৈতিক লড়াইটা কতটা তীব্র হতে চলেছে। বস্তুত লোকসভা ভোটের পর এই প্রথম তা এতটা সাদা-কালোয় স্পষ্ট হল। একদিকে বিজেপির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা অমিত শাহ তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে কোনও আগল রাখলেন না।

দুর্নীতি, সিন্ডিকেট, অনুন্নয়ন, পরিবারতন্ত্র, রাম মন্দির, নাগরিকত্ব সবই তুলে আনলেন বক্তৃতায়। আর অন্যদিকে দলীয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রে প্রধান শাসক দলের গায়ে খুনের অভিযোগ লাগাতে চাইলেন মমতা। বললেন, দিল্লিতে পরিকল্পিত ভাবে গণহত্যা করা হয়েছে। এহেন আক্রমণের তীব্রতাও প্রশ্নাতীত।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এই দুই সভা থেকেই আপাত ভাবে পরিষ্কার যে পারস্পরিক সমঝোতার অবকাশ হয়তো বিশেষ রইল না। বরং এটা বোঝা যাচ্ছে যে রাজনৈতিক ভাবে বাংলার দখল নিতে চান অমিত শাহরা। তা তাঁদের রাজনৈতিক কৌশলের জন্য সঙ্গতও। বাংলায় লোকসভার ৪২ টি আসন রয়েছে।

একুশ সালে বাংলায় আর বাইশ সালে উত্তরপ্রদেশে তাঁরা ক্ষমতা দখল করতে পারলে ২০২৪ এ লোকসভা ভোটে জেতাও অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলতে পারবেন অমিত শাহরা।
সুতরাং বাংলায় সরকার গঠনের পর এই প্রথম বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখে মমতাও। দশ বছর শাসন করার পর রাজনীতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হয়েছে।

নিচুতলার অনেক নেতার উপর এলাকার মানুষ খুশি তো নয়ই বরং অসন্তুষ্ট। সাধারণ মানুষ ও নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে অনেক নেতার বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। সরকারের অর্থ সংকটের জন্য অনুন্নয়নের সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া তিনি বুঝতে পারছেন বাংলায় তীব্র মেরুকরণ ঘটাতে চাইছে বিজেপি।

সুতরাং সেই ফাঁদে দলের কেউ যাতে পা না দিয়ে ফেলে তার ঝুঁকিও রয়েছে। এবং সম্ভবত সেই কারণেই দিদি এদিন দলীয় বৈঠকে বলেছেন, বাংলায় সাম্প্রদায়িক হানাহানির চেষ্টা রুখে দিতে হবে। কিন্তু তা করতে হবে শান্তিপূর্ণ ভাবেই।

সুতরাং সবমিলিয়ে বলা যেতেই পারে যে একুশের দামামা বেজে গেল বাংলায়। আশা করা যায় রাজ্যে রাজনীতি আগামী দিনের আরও রোমহর্ষক ও মজাদার হবে।

Previous articleনির্ভয়া-আসামিদের ফাঁসি ফের পিছিয়ে গেল!দিল্লি আদালতের স্থগিতাদেশ
Next articleবড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর,সব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here