দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আমরা সবাই নাগরিক’। বুধবার এই শপথগ্রহণের মাধ্যমে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে সুর বেঁধে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর একইসঙ্গে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কড়া বার্তাও দিলেন।
এই আইনের বিরুদ্ধে গান, স্লোগানে তখন মুখরিত হাওড়া থেকে কলকাতা। মিছিলে অংশ নেন সব ধর্ম–সম্প্রদায়ের মানুষজন। তবে এই তিন দিনের মিছিল যে শান্তির জন্য করা হয়েছে তাও জানিয়ে দেন জনগণের নেত্রী। আর বৃহস্পতিবার ছাত্র–যুব এবং শুক্রবার পার্ক সার্কাসে সভা হবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
মিছিল হাওড়া ময়দান, বঙ্কিম সেতু, গুলমোহর, হাওড়া ব্রিজ ব্র্যাবোন রোড হয়ে টি বোর্ডের সামনে দিয়ে লালবাজার, বেন্টিক স্ট্রিট, ধর্মতলা ধরে ডোরিনা ক্রসিংয়ে আসে। এখানেই মিছিল শেষ হয়। তখন রাস্তার পাশে জমায়েত হয়েছেন অগনিত মানুষ। যেখানে দাঁড়িয়ে বাংলার নেত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন বুলেট, আগুন জ্বালিয়ে হয় না।
গণতান্ত্রিক আন্দোলন রাস্তায় দাঁড়িয়ে হয়। হিংসা চাই না বলেই রাস্তায় নেমেছি। এই আইনের বিরুদ্ধে সবাই প্রতিবাদ করুন, গান করুণ, ছবি আঁকুন। কিন্তু অবরোধ নয়।’
এদিন মিছিল শুরু হল লোকগান দিয়ে। টানা তিন দিন রাস্তায় নেমে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাউল সম্প্রদায়ের অনেকেই এদিন হাজির ছিলেন মমতার মঞ্চে। গানের কথায় বলা হল, ‘আমরা সবাই নাগরিক, এনআরসি হবে না।
বিজেপি ওয়াপাস লো ওয়াপাস লো। ক্যাব–এনআরসি নেহি চ্যালেগা।’ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কড়া বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন নেভানো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজ। তাঁকে অনুরোধ, আগুন জ্বালাবেন না। আগুন নেভান। নিজের দলকে সামলান, নিয়ন্ত্রণ করুন। আমার হাতজোড় করে আপনার কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান রইল। আপনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শপথ নিয়েছেন। এটা আপনাকেই দেখতে হবে। কেন একাধিক রাজ্য জ্বলছে?’
উল্লেখ্য, প্রথম দিন মিছিল শুরু করেছিলেন রেড রোডের বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে। গান্ধীমূর্তি হয়ে মিছিল শেষ হয়েছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। মঙ্গলবার মমতার মিছিল ছিল যাদবপুর ৮বি থেকে ভবানীপুর যদুবাবুর বাজার পর্যন্ত। আর এদিন হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল শুরু হয়ে ডোরিনা ক্রসিংয়ে শেষ হয়। তখন জনসমুদ্র ধর্মতলা চত্বর।
বৃহস্পতিবারও জনসভা রয়েছে তৃণমূলনেত্রীর। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ডাকে রানি রাসমণি রোডের সমাবেশে বক্তৃতা করবেন তিনি। শুক্রবার পার্ক সার্কাস ময়দানে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাতেও প্রধান বক্তা নেত্রীই। এদিন তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, ‘আধারে নাগরিকত্বের প্রমাণ না হলে সংযুক্ত করা হল কেন? আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়? আধার চলবে না তো কী বিজেপি’র মাদুলি চলবে?
মুখে বলছেন সবকা সাথ সবকা বিকাশ। আর কাজে করা হচ্ছে সবকা সাথ সবকা বিনাশ। আগামী ২৩ ডিসেম্বরও বড় সমাবেশ হবে। কারণ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অসাংবিধানিক, অনৈতিক।’