“মেঘ আমার জীবনে ভেসে ভেসে আসে কিন্তু অন্ধকার নিয়ে না; বরং আমার জীবনের সূর্যাস্তে এক নতুন রং যোগ করতে।”
পিয়ালী মুখার্জী: আজ ২২ শে শ্রাবণ। রবি ঠাকুরের মহা প্রয়ান দিবস। ১৯৪১ সালের বৃহস্পতি বার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি তথা বঙ্গজীবন তথা গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল সব থেকে বড় অঘটন। নিমতলা মহা স্বশানে তার শেষকৃত্যের চিতার আগুনে মানুষের হৃদয় হয়েছিল নিষ্প্রদীপ। কিন্তু মৃত্যু তো হয় মানুষের, “ঠাকুরের” নয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আপামর বাঙালির হৃদয় মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন। তাঁকে সাধনা করতে পুজোর উপাচার লাগে না। তাঁর পুজো হয় গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজোর মতোই। তাঁরই রচিত অর্ঘ তাঁকেই প্রদান করে।
কোনো একটা উপমায় তাঁকে বাঁধা যায় না। তিনি মহান কবি, উপন্যাসিক, সংগীত স্রষ্টা, নাট্যকার, ছোটগল্পকার, চিত্রকর, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও সর্বোপরি সব চেয়ে বড় দার্শনিক। তাঁর জীবনাদর্শে দেখানো পথেই আমরা পথ চলি।
আমরা অনুভব করি তুমি আছো “আমার হিয়ার মাঝে…” শয়নে স্বপনে জাগরণে “তুমি ছাড়া আর এ জগতে কেহ নাই, কিছু নাই”… আজ “তোমায় নতুন করে পাবো বলে” হয়তো অন্তরালে আছো। তুমি আছো সর্বত্র।
হে প্রেমিক পুরুষ তোমাকে ছাড়া আমরা বাঙালিরা তো কিছু না, প্রতি টা ভাবনায় তুমি। সুখে, দুঃখে, আনন্দে, শোকে, সমাগমে একাকিত্বে তোমারই রচনায় মিল খুঁজে পাই। সেই কবে তুমি সেই অনুভূতি সেই উপলব্ধি তে স্থাপন করেছিলে পরম যত্নে। চেতনা, অবচেতনে তুমি। তোমাকে ছাড়া যে কোনো ভাবনাই সম্পূর্ণ নয়।
গোটা বিশ্ব তাঁকে চেনে বিশ্বকবি বলে। আমরা প্রতিটা প্রজন্ম গর্বিত আমরা তাঁর দেশের মানুষ। তাঁকে দেশ কাল গন্ডি তে আবদ্ধ করা যায় না। যাঁরা সান্নিধ্য পেয়েছিলেন কবির তাঁরা তো বটেই, এখনো রবীন্দ্রনাথ সব বয়সেই সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক। তিনি বিশ্ববন্দিত এক চেতনার উন্মেষ। তাঁকে নিয়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে গবেষণা চললেও আজও তিনি রহস্য, আজও তিনি অনাবিষ্কৃত। তাঁর গভীরতা সীমাহীন। তিনি কোনো একটা দিনের নয়, প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন।
প্রণাম জীবন দেবতা, শ্রদ্ধা প্রানের ঠাকুর।