দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ সিপিএমের গোপন নির্দেশ ছিল এবারের ধর্মঘটে ছক পাল্টাতে হবে। সাত সকালেই দলে দলে গ্রেফতার হয়ে ফেসবুকে ছবি দিয়ে ধর্মঘট করা যাবে না। অন্তত দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে হবে। আর সেই নির্দেশ পালন করতে গিয়ে অভিনব পন্থা নিল যাদবপুরের বাম ছাত্রছাত্রীরা। কখনও রাস্তার মাঝে চলল ক্রিকেট। কখনও আবার চেয়ার-টেবিল পেতে চলল দেদার দাবার চাল।
এদিন সকাল ১১টা নাগাদ যাদবপুর থেকে গ্রেফতার হন বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী-সহ যাদবপুর অঞ্চলের শীর্ষ বাম নেতারা। তারপর দ্বিতীয় আরেকটি দল মিছিল নিয়ে বেরোয়। তাঁদেরও পুলিশ ধাওয়া করে সরিয়ে দেয়। দুপুরের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসেন রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়রা।
এসব দেখে বাম নেতারা উৎফুল্ল হলেও রাজনৈতিক মহলের অনেকের মনে পড়ছে ২০০৯ সালের নভেম্বরের কথা। নন্দীগ্রাম পুনর্দখল নিয়ে তখন উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। সিপিএমের ‘অপারেশন সূর্যোদয়’ দেখে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বলেছিলেন, “হাড় হিম করা সন্ত্রাস।” রাস্তায় নেমেছিলেন বুদ্ধিজীবীরা।
কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সময়ে বামেদের বিরুদ্ধে চলে যাওয়া বুদ্ধিজীবীরা এক্সাইড মোড়ে রাস্তা জুড়ে বসে পড়েছিলেন। কখনও গান ধরেছেন পল্লব কীর্তনীয়া, কখনও আবৃত্তি করেছেন অপর্ণা সেন। সেই সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী (অনেকের মতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অফিসার) কার্যত কলার ধরে বুদ্ধিজীবীদের সরিয়েছিলেন।
বলেছিলেন, “রাস্তায় গান গাওয়ার অধিকার থাকলে গান না শোনারও অধিকার আছে!” তৃণমূলের অনেকে বলছেন, আজকের বাম ছাত্র নেতাকর্মীদের স্মরণে নেই ১০ বছর আগে কী হয়েছিল।
যদিও পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সিপিএম ছাত্রদের নামিয়েছিল কৌশল করেই। কারণ জেএনইউ ইস্যু এখন টাটকা। তা ছাড়া দু’দিন আগে সুলেখা মোড়ে যাদবপুরের ছাত্রদের উপর পুলিশের লাঠি নিয়ে কার্যত ফুঁসে উঠেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুকে পোস্ট করে হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর। অনেকের মতে, সিপিএম নেতারা জানতেন ছাত্রদের পুলিশ কিছু বলবে না। তাই রাস্তাজুড়ে তাঁদের নামানোর কৌশল খানিকটা হলেও সফল হয়ে গিয়েছে।