দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কুড়ি দিন পিছিয়ে গিয়ে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে রাজ্যের চার পুরসভার নির্বাচন ৷এ দিন নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ কলকাতা হাইকোর্টের গতকালের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর পুরভোটের নতুন দিন ঘোষণা করা হল৷
আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের চার পুরসভা বিধাননগর, শিলিগুড়ি, চন্দননগর এবং আসানসোলে ভোটগ্রহণ ছিল৷ কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কমিশনকে পরামর্শ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল হাইকোর্ট৷
ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আদালত তাদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছিল। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাঁধেই৷ কমিশন আদালতে জানাল, কোভিড পরস্থিতির কথা বিবেচনা করে আদালতের পরামর্শ মতো ভোট পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তিত দিন ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভোট হবে বিধাননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি এবং চন্দননগরে।
চার পুরনিগমের ভোট নিয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চেয়েছিল কমিশন। শনিবার সকালে কমিশনকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায় নবান্ন। এদিন নবান্ন থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখা হয়। সেখানেই জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে চার পুরনিগমের ভোট পিছিয়ে দিলে রাজ্যের তাতে কোনও আপত্তি নেই। এরপরই কমিশন ভোট পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়।
কোভিডের উত্তাল পরিস্থিতিতে পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার মামলায় শুক্রবার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত বলে, কমিশন বিবেচনা করে দেখুক, এই পরিস্থিতিতে চার কর্পোরেশনের ভোট চার থেকে ছয় সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না। এ ব্যাপারে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় আদালত। তারপরই আলোচনা শুরু করে কমিশন।
ইতিমধ্যেই কমিশন আদালতে জানিয়ে রেখেছে, বাকি ১০৮টি পুরসভার ভোট হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। এই চার কর্পোরেশনের ভোট পিছিয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নিয়ে যাওয়ায় সেই সূচি নিয়ে আবার কৌতূহল তৈরি হয়েছে। যদি ২৭ ফেব্রুয়ারি শ্তাধিক পুরসভার ভোট করতে হয় তাহলে জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির গোড়াতেই বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। অনেকের মতে, ১০৮টি পুরসভার ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অবকাশ হয়তো কমিশনের নেই। কারণ মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয় রয়েছে। এখন দেখার কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়।
ভোট পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়৷ তিনি বলেন, ‘আশা করা যায় কুড়ি দিনের মধ্যে করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমে যাবে৷ ফলে আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি৷’
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘আমরা অনেক দিন আগেই একমাস ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম৷ গরিবের কথা বাসি হলে কাজে লাগে৷ তবে কুড়ি দিন পরেও যদি করোনা সংক্রমণ না কমে এবং মানুষের ভোট দেওয়ার মতো পরিস্থিতি না থাকে, তাহলেও ভোট গ্রহণ উচিত হবে বলে আমরা মনে করি না৷’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাঁর নেত্রীর মনে হয়েছে, তাই এখন কমিশন ভোট পিছিয়ে দিচ্ছে৷’