দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় এই মরশুমে লাস্ট ইনিংস খেলছে শীত। ভোরে হিমেল পরশ, বেলা বাড়লে চড়া রোদ। এরই মাঝে ফাল্গুনের তৃতীয় দিনে ফের ঊর্ধ্বমুখী হল পারদ।
আবহাওয়ার বড় আপডেট দিল হাওয়া অফিস। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সোমবার পর্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া রাজ্যে।
কোথাও মুষলধারে, কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে। কোথাও ঝড়-বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড চারিদিক তো কোথাও শিলাবৃষ্টি। সবমিলিয়ে গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টির দাপট। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই উত্তরবঙ্গের (Rain in North Bengal) একাধিক এলাকায় বুধবার ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। সেই ধারা অব্যাহত বৃহস্পতিবার সকালেও। গতকাল সন্ধের পর থেকে ঝড় শুরু হয় ডুয়ার্সের (Dooars) বিভিন্ন এলাকায়। সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি। মালবাজারে শিলাবৃ্ষ্টি (Hailstrom at Malbazar) হয়। গয়ারকাঁটায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি নামে। একই অবস্থা জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরেও। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারেও এদিন সন্ধের পর ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়। বৃষ্টি নামে দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) ঘুমে।
শুক্রবারও দক্ষিণবঙ্গে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি রাজ্যের সব জেলাতে। সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া। বিক্ষিপ্ত ভাবে দু-এক জায়গায় হতে পারে কালবৈশাখী।
এদিকে, ঝড়বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গাতেই এদিন লোডশেডিং (Loadsheading) হয়। যা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে ট্যুইট করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। তিনি বলেন, ঝড়বৃষ্টির কারণে লোডশেডিং হয়ে যাওয়ায় ‘এক ডাকে অভিষেক’-এ অনেক ফোন পেয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ফের বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করতে আড়াইশোর বেশি কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের উপরের পাঁচ জেলায় ঝড়-বৃষ্টি সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এই পাঁচ জেলাতে ঝড় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকবে। বিক্ষিপ্ত ভাবে শিলাবৃষ্টি হবে সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হাওয়া। মালদা এবং দুই দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি সঙ্গে দমকা ঝড়ো হওয়া। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও হালকা ঝোড়ো হওয়া থাকবে উত্তরবঙ্গের উপরের দিকের পাঁচ জেলাতে রবিবার পর্যন্ত।
দক্ষিণবঙ্গে জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে হতে পারে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকবে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাতে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার ১৬ ও ১৭ মার্চ বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বইবে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে।
কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে। কলকাতায় মেঘলা আকাশ। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতাতেও।
১৮ এবং ১৯ মার্চ শনি ও রবিবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ ও ঝড়ের গতিবেগ দুটোই বাড়বে। এই পর্বের পিক বা চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এই দুদিন হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি ও দমকা ঝড়ো হাওয়া সোম মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে।
ঝাড়খন্ডে ঘূর্ণাবর্ত এবং তার জেরে জলীয় বাষ্প ঢুকবে বঙ্গোপসাগর থেকে। বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস এবং পশ্চিমের শীতল বাতাসের সংঘাতে ঝড় বৃষ্টির পরিবেশ তৈরি হবে। কখনওই একটানা ঝড় বৃষ্টি হবে না। দু-এক ঘন্টার জন্য করে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষিপ্ত এলাকায় এই বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হবে।
উত্তর-পশ্চিম ভারতে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রয়েছে। ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে রাজস্থানে। একটি অক্ষরেখা রয়েছে তামিলনাড়ু থেকে কঙ্কন পর্যন্ত কর্নাটকের উপর দিয়ে। সক্রিয় অক্ষরেখা একটি রয়েছে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণ ওড়িশা পর্যন্ত যেটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে গিয়েছে।
আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল এই তাপমাত্রা ছিল ২৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৩৫ থেকে 88 শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা থাকবে ২৫ ডিগ্রি থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।