দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চৈত্রের পয়লা তারিখেই মরশুমের প্রথম কালবৈশাখী পেল কলকাতা ৷ দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় বৃষ্টি ৷ কেবলমাত্র তাই নয় সঙ্গে চলল ঝড়ো হাওয়া। আর এই প্রথম কালবৈশাখীর হাত ধরে পারদ নামল রাজ্যে।

আজ, শুক্রবারও রাজ্যে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস। শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে। কোথাও কোথাও বজ্রপাতের আশঙ্কা। মরশুমের প্রথম জোড়া কালবৈশাখী হয়েছে কলকাতায় বৃহস্পতিবার। শুক্রবারেও কালবৈশাখীর মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।

মরশুমের প্রথম কালবৈশাখীর দাপট শুরু হয় বৃহস্পতিবার রাতে। দমদমে কালবৈশাখী আছড়ে পড়ে ঘণ্টায় ৬৪ কিলোমিটার বেগে। এর স্থায়িত্ব ছিল দেড় মিনিট। আলিপুরে কালবৈশাখীর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৮ কিলোমিটার। এর স্থায়িত্ব ছিল দু’মিনিট। এ ছাড়াও কালবৈশাখীর তাণ্ডব দেখা গিয়েছে নদিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলায়। তবে দক্ষিণবঙ্গের যে সকল জেলায় কালবৈশাখী হয়নি সেখানে শুক্রবার দুপুরের পর যে কোনও সময় কালবৈশাখীর সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা আগে সতর্কতা জারি করবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

এদিকে, উত্তরবঙ্গেও বজ্রবিদ্যুৎ সহ কালবৈশাখীর পূর্বাভাস রয়েছে। উত্তরবঙ্গের কোনও কোনও জায়গায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। বৃষ্টি হতে পারে দর্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, দুই দিনাজপুর এবং মালদায়। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে এদিনও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি এবং বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা।

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দক্ষিণবঙ্গে আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি বজায় থাকবে। দিনের বিভিন্ন সময়ে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ১৮ থেকে ১৯ মার্চ বৃষ্টির পরিমাণ একটু বাড়তে পারে। তবে শনিবার থেকে ঝোড়ো হাওয়ার গতি কমে দাঁড়াবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।

বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়বৃষ্টির পর শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের আকাশ মেঘলা। এদিন সূর্যের দেখা মেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কালবৈশাখীর হাত ধরে রাতারাতি কমেছে মহানগরের তাপমাত্রা। ফিরেছে স্বস্তি। বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কমে ৩১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কমে ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি চলবে সোমবার পর্যন্ত। শনিবার থেকে ঝড়ের গতিবেগ কিছুটা কমবে তবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। শনি ও রবি দক্ষিণবঙ্গে বেশিরভাগ জেলাতেই মাঝারি থেকে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে। কলকাতা সহ-সংলগ্ন জেলার এবং উপকূলের জেলাগুলিতে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা। রবি ও সোমবারে দমকা হাওয়ার গতিবেগ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থাকবে সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে।

প্রসঙ্গত, আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন, এ বছর উষ্ণতম ফেব্রুয়ারির সাক্ষী থেকেছে বাংলা। মার্চের শুরু থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেছিল গরম। তাপমাত্রা ক্রমশই চড়ছিল। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তাপমাত্রা প্রায় ৩৫ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছিল। ফলে চৈত্রের প্রথমেই এই কালবৈশাখী ঝড় কিছুটা হলেও স্বস্তি দিল রাজ্যবাসীকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here