দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর গত ৬ ঘন্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে গিয়ে মধ্যরাতে বাংলাদেশে আছড়ে পড়েছে হামুন। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে তুমুল ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। ফুঁসে উঠেছে সমুদ্র।
এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে দুর্বল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে চলে যাবে। এরপর সেটি গভীর নিম্নচাপে বদলে যাবে। এই নিম্নচাপের প্রভাব কি পড়বে বাংলায়?
আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস,ক্রমশ রাজ্যের উপকূল থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’। বাংলাদেশের দক্ষিণ চট্টগ্রাম এলাকায় স্থলভাগে প্রবেশ করেছে সকালে। স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর ৷
হামুনের প্রভাবে এ রাজ্যে দুর্যোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে বাংলার উপকূলের জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। আজ সুন্দরবন এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে উত্তাল থাকবে সমুদ্র। ফলে মৎস্যজীবীদের আজ সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
হামুন বাংলাদেশে দাপট দেখালেও এ রাজ্যে একাদশীর সকাল থেকেই ঝলমলে রোদ উঠেছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
হামুনের জন্য উপকূলের জেলাগুলিতে সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। দিঘা, শংকরপুর , তাজপুর, মন্দারমণি এলাকায় পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করেছে প্রশাসন। তবে পুজোর মরশুমে খুব একটা পর্যটকদের ভিড় নেই সৈকত নগরীতে। অন্যান্য বার যেমন দিঘা-মন্দারমনিতে পর্যটকদের ঢল থাকে এ বছরের ছবিটা আলাদা।
তবুও সতর্ক জেলা প্রশাসন। নবমী ও দশমীর দিনে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেই ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তবে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমছে। বৃষ্টির তেজ ধীরে ধীরে কমবে। হিমেল শিরশিরানি হাওয়া জানান দিচ্ছে শীত আসছে।
ঘূর্ণিঝড়ের রেশ কাটতেই উত্তুরে হাওয়া প্রভাব বিস্তার করবে বাংলায়। আগামী দু-তিন দিনে রাতের তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমবে। ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে সরে যাওয়ায় ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা আর নেই বাংলায়।
তবে উত্তর বঙ্গোপসাগর উপকূল আজও উত্তাল থাকবে। গত দু’তিনদিনের বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে। সব মিলিয়ে শীতের আমেজ পশ্চিমের জেলায় খুব বেশি অনুভূত হবে। বাকি জেলাগুলিতে আগামী কয়েকদিন হাল্কা শীতের আমেজ থাকবে। তাপমাত্রার পারদ ২-৩ ডিগ্রি কমতে পারে। সন্ধে হলেই শীতের আমেজ বেশ ভাল করেই টের পাওয়া যাবে।
আগামিকাল, বৃহস্পতিবার থেকে রাতের তাপমাত্রাও কমবে। শীতের আমেজ অনুভূত হবে সকাল সন্ধ্যায়। কলকাতায় আজ, বুধবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৬৮ থেকে ৯৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৮.৯ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের তাপমাত্রা থাকবে ২৪ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।