দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গে বর্ষা এসেছে। শুধু বাংলা নয়, দেশের ৮০ শতাংশ জায়গা জুড়ে বর্ষা কমবেশি প্রবেশ করেছে, তেমনটাই বলছে পরিসংখ্যান। বর্ষার শুরুতেই একাধিক রাজ্যের বানভাসি পরিস্থিতি। রাজ্যের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বেশ ভাল পরিমাণ বৃষ্টি হলেও এখনও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি দেখেনি দক্ষিণের জেলাগুলি। রাজ্য জুড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ছবি। 

আলিপুর হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বুধবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টি নামবে উত্তরবঙ্গে (weather)। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির (Rain) সম্ভাবনা আছে। উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে বৃষ্টি হলেও কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে আগামী কয়েকদিন।

বৃহস্পতিবার থাকে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা ফের বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা হাওয়া অফিসের। ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবংদক্ষিণ ২৪ পরগনায় বৃষ্টি হবে। বাকি জেলাগুলিতে বৃষ্টি কমবে বুধবার থেকে।

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, মৌসুমী অক্ষরেখা পোরবন্দর, আমদাবাদ, উদয়পুর, নারনাউল ও ফিরোজপুরের উপর অবস্থান করছে। আগামী দু’দিনে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু গুজরাত এবং রাজস্থানের আরও কিছু অংশে থাকবে এবং তারপর হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের বাকি অংশে ঢুকে পড়বে। এই মুহূর্তে ছত্তীসগড়ে নিম্নচাপ রয়েছে। এই নিম্নচাপ ক্রমশ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-পশ্চিমে সরে মধ্যপ্রদেশের দিকে এগিয়ে যাবে।

বৃষ্টি অক্ষরেখার কারণে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে আগামিকাল থেকেই তুমুল বৃষ্টি হবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে। ইতিমধ্যেই তিস্তা তোর্সা জলঢাকা সহ উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্তর বাড়ছে। বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে বলে খবর। একটানা ভারী বৃষ্টি হলে নদীর জলস্তর আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

রাতভর প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত মুম্বই, ঠানে-সহ অন্যান্য মহারাষ্ট্রের শহরতলি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ২৯ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ভারী বর্ষণ চলবে মুম্বইয়ের শহরতলি এলাকাগুলিতে। ফলে স্থানীয়ভাবে দেখা দিতে পারে আ‍ঞ্চলিক বন্যা।

লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশও। হড়পা বানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। আহত অন্তত ১০। হড়পা বান এবং ধসের জেরে বন্ধ চণ্ডীগড়-মানালি হাইওয়ে। আটকে পড়েছেন পর্যটকরা।

দুর্যোগ থেকে রেহাই পায়নি দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলও। অসমের ডিব্রুগড়ে প্রবল বর্ষণ চলেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, মঙ্গলবারও ডিব্রুগড়ে দু’ এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘাচ্ছন্ন।

মুম্বই এবং এর সংলগ্ন ঠানে ও পালঘর জেলায় সোমবার কমলা সতর্কতা বা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে পুণাতেও বুধবার পর্যন্ত।

তবে অসমের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র এবং অন্যান্য নদীর জল কমতে শুরু করেছে।

অসমে বন্যা পরিস্থিতিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লক্ষের বেশি মানুষ। ভেসে গিয়েছে বিস্তৃত চাষের জমি।

বর্ষণ চলছে ভূস্বর্গেও। জম্মু কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে সোমবার বৃষ্টি চলেছে। ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জম্মু কাশ্মীর জাতীয় সড়কে। পাশাপাশি বৃষ্টি চলছে এবং বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকা, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাতেও।

জমিয়ে বর্ষা চলছে মরুরাজ্য রাজস্থানেও। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি চলবে রাজস্থানের আজমের, আলওয়ার, বনসওয়ারা, ভরতপুর, ভিলওয়াড়া, বুঁদি, চিত্তোরগড়, ঢোলপুর, দুঙ্গারপুর, জয়পুর এলাকাগুলিতে। আজমের, ভিলওয়াড়া, টঙ্ক-সহ কিছু জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here