দেশের সময় : দিল্লিতে সোমবার ভোরে শূন্যতে নেমে গেল দৃশ্যমানতা। পুরু কুয়াশার চাদরে ঢেকেছে রাজধানী। তাপমাত্রার পারদও হাড় কাঁপানো ঠান্ডার জানান দিচ্ছে। মৌসম ভবনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবারও দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। দেখুন ভিডিও
এদিকে মকর সংক্রান্তির ভোরে ঘন কুয়াশা। আর তার জেরে ব্যাহত বিমান, রেল, সড়ক ও জলযান যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে একদিকে যেমন কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান ওঠানামা থমকে রয়েছে, তেমনেই বন্ধ গঙ্গাসাগরমুখী বাস ও ভেসেল যাত্রাও রয়েছে। ধীরে চলছ ট্রেনও। এর ফলে সমস্যায় পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।
বিমানমন্দর সূত্রে খবর, দৃশ্যমানতা আড়াইশ মিটারের নিচে নেমে গিয়েছে। ফলে যে বিমানগুলির সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল, সেগুলি এখনও পর্যন্ত নামতে পারেনি। আবার যে বিমানগুলি কলকাতা বিমানবন্দর থেকে টেক-অফ করার কথা ছিল তার মধ্যে হাতে গোন কয়েকটি ছাড়া সমস্ত বিমানই আটকে রয়েছে।
কুয়াশার কারণে দিল্লির অনেক বিমানই বাতিল করে দিতে হচ্ছে। ফলে দিল্লি বিমানবন্দরের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাত্রীরা যেন অবশ্যই বিমানের টিকিট কাটার আগে বা যাত্রা শুরু করার আগে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে নেন। সে ক্ষেত্রে বিমান বাতিল হয়ে গেলে বা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে চললে আগেভাগে খবর পাওয়া যাবে। যাত্রীদের হয়রানি কিছুটা কম হবে।
কুয়াশার কারণে শুধু বিমান নয়। দিল্লিতে ট্রেন চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিল্লির উদ্দেশে যাওয়া অন্তত ১৮টি ট্রেন সোমবার সকালে দেরিতে চলছে।
সেক্ষেত্রে কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, দিল্লি, মুম্বই, আগরতলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিমানকে ডিলেইড দেখান হচ্ছে। পাশাপাশই অনেকগুলি বিমান এখনও বাতিলও করা হয়েছে। আর শুধু কলকাতা নয়, শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরের ছবিটাও একই বলে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছে বেলা বাড়লে তবে বোঝা যাবে পরিস্থিত।
অন্যদিকে এদিন মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে গঙ্গাসাগরে চলছে পুন্যস্নান। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে ব্যাহত সড়ক ও জলযান যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, কুয়াশার কারণে গঙ্গাসাগর থেকে কচুবেড়িয়ার মধ্যে বাস পরিষেবা বন্ধ রেখেছে জেলা প্রশাসন।
পাশাপাশি কাকদ্বীপ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত মুড়িগঙ্গা নদীর ওপরে যে ভেসেল পরিষেবা চলে, সেটিও বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ রাখা হয়েছে নামখানা পয়েন্টের লঞ্চ পরিষেবাও। যাত্রীদের মধ্যে যাতে বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারেবরেই পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের মাধ্যমে পরিস্থিতি সম্পর্কে ঘোষণাও করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও বেলা বাড়লে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেই দিকেই নজর রাখছে প্রশাসন।
এদিকে একই কারণে ঢেকে গিয়েছে হাওড়া শহর এলাকায়। ঘন কুয়াশা চাদরে ঢেকে গেছে গোটা জেলা। ফলে রেল ও সড়কপথে যান চলাচল স্বাভাবিকভাবে থমকে গিয়েছে। ধীর গতিতে চলছে রেল ও যানবাহন। সকাল আটটা বেজে যাওযার পরেও রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্ন পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, শীতকালে কুয়াশার কারণে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটতে দেখা যায়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শীতের ভোরে কুয়াশার কারণে মাঝে মধ্যেই বন্ধ থাকে ফেরি পরিষেবা। ফত বিকল্প পথে অনেক দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় সাধারণ মানুষকে। আবার একইসঙ্গে রাস্তাতেও ধীরে চলে যানবাহন। কখনও কখনও ঘটে যায় দুর্ঘটনাও।