অর্পিতা বনিক, বনগাঁ : রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। সেই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই বনগাঁ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমে উঠেছে ঘুড়ির বাজার। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের ৷ দেখুন ভিডিও:
প্রতিবারের মতো এবারও এসে গেছে বিশ্বকর্মা পুজো ৷ আর বিশ্বকর্মা পুজো মানেই রং বেরংয়ের ঘুড়ি। লাল, হলুদ, নীল, সবুজ বিভিন্ন রঙের ঘুড়িতে ভরে যায় আকাশ। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই দেখা মেলে ঘুড়ির। আবার বেশ কিছু জায়গায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতাও হয়। এই সময় বাজারে ব্যাপক ঘুড়ির চাহিদা দেখতে পাওয়া যায়। বাংলার প্রায় সব বাজারেই দেদারে বিক্রি হচ্ছে ঘুড়ি। বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দার বাজারেও এই ঘুড়ি বিক্রেতাদের লাভের মুখ দেখাচ্ছে।
ক্রেতারাও জানালেন, আগে বিশ্বকর্মা পুজো মানে একটা বিশাল বড় উৎসব ছিল। সারা রাত জেগে অনেকেই ঘুড়িতে মাঞ্জা দিতেন। তবে এখন সেসব আর দেখতে পাওয়া যায় না। তা একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এখন আর তার বাজার নেই। তবুও এখনও পর্যন্ত যাঁরা ঘুড়ি ওড়াতে ভালোবাসেন তাঁরা এখনও ঘুড়ি কেনেন। এখন আকাশের দিকে তাকালে গোটা আকাশ হয়তো ঘুড়িতে ছেয়ে যায় না, কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখনও কিছু মানুষ বজায় রেখেছেন। অর্থনৈতিক মন্দার বাজারেও এখনও মানুষ ঘুড়ির জন্য বিশ্বকর্মা পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকেন। তবে অনেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন নানা রঙের ঘুড়ি।
চিনা মাঞ্জায় কি ফের বাড়বে বিপদ? চিন্তা বাড়াচ্ছে শহরতলির বাজার !
নিষিদ্ধ চিনা মাঞ্জা বিক্রি বন্ধে শহরের একাধিক ঘুড়ির বাজারে নজরদারির কথা আগেই বলেছিল প্রশাসন। তা সত্ত্বেও চিন্তা বাড়াচ্ছে শহরতলির বাজারগুলি। সেখান থেকে ঘুরপথে আনা চিনা মাঞ্জায় ফের পুরনো বিপদ লাগামছাড়া হবে কি— বিশ্বকর্মা পুজোর আগে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে পুলিশকর্তাদের একাংশের মনে।
রাত পোহালেই শনিবার বিশ্বকর্মা পুজো। এই উপলক্ষে শুক্রবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমে উঠেছিল ঘুড়ির বাজার। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের ৷
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্দেশ গিয়েছে প্রতিটি ডিভিশনেও। ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা বেশি, এমন এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালানোর কথা ভাবা হয়েছে। শহরের একাধিক জায়গায় বিপজ্জনক অংশে ঘুড়ির কাটা সুতো ধরতে পুলিশকর্মী মোতায়েনের নির্দেশও দিয়েছে প্রশাসন। থানাগুলিকেও এ নিয়ে সচেতনতা প্রচারের কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন শহরের যে যে এলাকায় মাঞ্জা সুতোয় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বাড়তি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷
পুলিশ সূত্রের খবর, চিনা মাঞ্জা বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। নির্দিষ্ট জিনিস বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি তাঁকেও গ্রেফতার করা হতে পারে। তবে শহরের ঘুড়ি ব্যবসায়ীদের দাবি, পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে ঘুড়ি বাজারে চিনা মাঞ্জা বিক্রি হয় না বললেই চলে। যদিও পুলিশি নজরদারির ফাঁক গলে শহরতলির একাধিক বাজারে এখনও বিকোচ্ছে চিনা মাঞ্জা।
বনগাঁর ঘুড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কলকাতায় পুলিশের ভয়ে কেউ সাধারণত চিনা মাঞ্জা রাখেন না। তবে আশেপাশের এলাকায় তা পাওয়া খুব কঠিন নয়।’’
হাওয়া অফিসের কথায় পুজোর সময়ে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। খবর অনুযায়ী বিশ্বকর্মা পুজোর আগে শুক্রবার দুপুরেই প্রবল বৃষ্টিতে ভিজল শহর ও শহরতলি ৷ এদিন সেভাবে আকাশে দেখা মেলেনি কোন ঘুড়ির ৷ তবে আনন্দ প্রিয় বাঙালি পুজোর কেনাকাটা জারি রেখেছে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই৷