কলকাতা, এক শহর যেখানে ইতিহাস আর আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটে প্রতিনিয়ত। শহরের সেই নস্টালজিয়া আরও একবার জীবন্ত হয়ে উঠল কলকাতা রোয়িং ক্লাবে অনুষ্ঠিত ভিনটেজ কার র্যালির মাধ্যমে। ঐতিহ্যবাহী এবং বিরল গাড়ির সমাহার দেখতে শহরবাসী ভিড় জমিয়েছিলেন এই বিশেষ ইভেন্টে।
অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (AAEI) এবং কলকাতা রোয়িং ক্লাবের (CRC) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই র্যালিতে প্রায় ৬০টি ভিনটেজ গাড়ি ও বাইক প্রদর্শিত হয়।
র্যালিতে অংশ নিয়েছিল প্রায় ৬০টিরও বেশি ভিনটেজ এবং ক্লাসিক গাড়ি, যার মধ্যে ছিল ১৯২০-এর দশকের ফোর্ড, ১৯৩০-এর দশকের অস্টিন, ১৯৫০-এর মার্সিডিজ, এমনকি কিছু বিরল ব্রিটিশ ও আমেরিকান গাড়িও। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল উত্তম কুমারের সিনেমায় ব্যবহৃত একটি ফোর্ড গাড়ি, যা ‘ধন্যি মেয়ে’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল।
এইসব গাড়ি শুধু বাহন নয়, বরং একেকটি সময়ের সাক্ষী। মালিকরা গাড়িগুলোর যত্ন নেওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন দর্শকদের সঙ্গে। তারা বলেন, কেবল রক্ষণাবেক্ষণই নয়, এই গাড়িগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে স্মৃতি, আবেগ এবং ঐতিহ্য।
র্যালিটি কলকাতা রোয়িং ক্লাব থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক রাস্তা ঘুরে পুনরায় একই স্থানে ফিরে আসে। র্যালিটি ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে সাদার্ন অ্যাভিনিউ, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, হাজরা মোড়, পার্ক স্ট্রিট, রবীন্দ্র সদন, মিন্টো পার্ক, শরৎ বোস রোড, দেশপ্রিয় পার্ক, ম্যাডক্স স্কোয়ার হয়ে গোলপার্কে এসে শেষ হয়।
শহরবাসী রাস্তায় দাঁড়িয়ে করতালি ও উল্লাসের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ দেন। অনেকেই পুরনো দিনের গাড়িগুলো দেখে স্মৃতিচারণ করেন, কেউ আবার ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন।
অনেকেই মনে করেন, ভিনটেজ গাড়ির প্রতি আকর্ষণ কেবল শৌখিনতার বিষয় নয়, এটি একধরনের ঐতিহ্যের সংরক্ষণও বটে। কলকাতার মতো শহরে এই ধরনের র্যালি শুধুমাত্র গাড়িপ্রেমীদের নয়, বরং সাধারণ নাগরিকদেরও অতীতের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে দেয়।
কলকাতা রোয়িং ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই ভিনটেজ কার র্যালি কেবল গাড়িপ্রেমীদের জন্য নয়, বরং শহরের প্রতিটি মানুষের কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে। এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও কলকাতার ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।