Unnatural Death বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটির প্ল্যান! প্রথম শ্রেণির ছাত্রের মাথা থেঁতলে খুন? আটক অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া

0
149

দেশের সময় স্কুলে ছুটির প্রয়োজন, বড়দের কাছে শুনেছিল কোনও পড়ুয়ার মৃত্যু হলে স্কুলে ছুটি পাওয়া যায়। আর সেই কারণে প্রথম শ্রেণির ছাত্রকে খুনের অভিযোগ উঠল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার মানবাজারে।

অভিযুক্ত ছাত্রকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জুভেনাইল আদালতে পেশ করা হয়। হুগলির একটি হোমে রাখা হয়েছে অভিযুক্ত ওই ছাত্রকে। ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছেন শিক্ষামহল থেকে অভিভাবক অভিভাবিকারাও। আতঙ্কিত স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়ারাও।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৩০ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেলে হস্টেল সংলগ্ন মাঠে খেলা করতে গিয়েছিল প্রথম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তার পর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ নেই। পরে হস্টেল সংলগ্ন পুকুর থেকে ওই শিশুর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। শিশুকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে প্রথমে মানবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শিশুর নাক, মুখে ক্ষতচিহ্ন থাকায় ঘটনাটি খুন হিসাবে সন্দেহ হয় সকলের। পর দিন, ৩১ জানুয়ারি দেহের ময়নাতদন্ত হয় পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজে। ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় মৃত শিশুর পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ৫ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়েরই অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে আটক করে।

ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। আবাসিক স্কুলের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কিন্তু অভিযুক্ত ওই ছাত্রের সঙ্গে কথা বলেই তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। কথায় অসংলগ্নতা দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন কোথাও কিছু একটা গণ্ডগোল রয়েছে। তারপরেই তাকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। একটানা পুলিশি প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়ে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্র। কবুল করে অপরাধ।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ছাত্র স্বীকার করেছে যে, চকোলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ক্লাস ওয়ানের ওই পড়ুয়াকে স্কুলের পাশে একটি পুকুরের পাড়ে নিয়ে যায় সে। আর সেখানে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করে ওই পড়ুয়াকে। তারপর দেহ পুকুরের জলে ফেলে দেয়। দু’দিন পর পুকুর থেকে ভেসে ওঠে দেহটি।জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ছাত্র প্রথমে এমনটাই পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিল, যাতে এমনটা মনে হয় যে পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ওই পড়ুয়ার। কিন্তু ছাত্রের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আসল সত্য প্রকাশ পায়। জানা যায় খুন করা হয়েছে ওই পড়ুয়াকে।

তবে কেন ওই পড়ুয়াকে সে খুন করল, সেই কারণের সন্ধান করতে গিয়ে চক্ষুচড়কগাছ তদন্তকারী আধিকারিকদের। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অভিযুক্ত ওই ছাত্র স্বীকার করেছে, কয়েকদিন আগেই ওই আবাসিক স্কুলে ভর্তি হয়েছে সে। থাকে ছাত্রাবাসে। কিন্তু ইতিমধ্যেই তার বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল। কিন্তু স্কুলে ছুটি পাচ্ছিল না। এরইমাঝে সে শোনে যে কোনও পড়ুয়ার মৃত্যু হলে স্কুলে ছুটি পাওয়া যায়। আর তারপরেই এই ছক কষে সে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই স্কুলের আবাসিক প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াকে কে খুন করল, তার তদন্তে নেমে আমরা ওই স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে আটক করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে খুনের কথা। প্রাথমিক ভাবে ছেলেটি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে, ও ভেবেছিল কেউ মারা গেলে ছুটি পাওয়া যাবে। এটা ও আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। আমরা বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে দেখছি।’’

এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার শিক্ষামহলে। স্কুলেও ছড়িয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ।

Previous articleFIRE: মধ্যপ্রদেশে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত ৬, আহত ৫৯ ,আগুনে ভস্মীভূত প্রায় ৬০টি বাড়ি
Next articleYoga Shastra আর মাওয়ের রেড বুক নয়, পতঞ্জলির যোগশাস্ত্রই ধ্যান জ্ঞান সত্তরের প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সম্ময়ের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here