Tangra Unnatural Deaths ঘুমের মধ্যেই ‘নিখুঁত ভাবে’ স্ত্রীদের শিরা কাটেন দুই ভাই?  ময়নাতদন্তের পর প্রকাশ্যে এল ট্যাংরাকাণ্ডের তথ্য

0
14

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই বদলে গেল ট্যাংরার দুই গৃহবধূ সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে এবং নাবালিকা কিশোরীর মৃত্যুর ছবিটা!

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানাচ্ছে, আত্মহত্যা নয়, ট্যাংরা কাণ্ডে খুনই করা হয়েছে তিন জনকে। কীভাবে? পুলিশ সূত্রের খবর, খাদ্য বিষক্রিয়া থেকেই মৃত্যু হয়েছে নাবালিকা কিশোরীর। তবে দুই গৃহবধূর মৃত্যুর জন্য অতিরিক্ত রক্তক্ষরণকে দায়ী করা হয়েছে।

বুধবার সকালে রুবি এলাকার কাছে একটি পথ দুর্ঘটনা হয়। সেই দুর্ঘটনায় এক আহতের বয়ানের সূত্র ধরে ট্যাংরার অতুল শূর রোড এলাকার ওই বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। সেই সূত্রে ওই বাড়ির দরজা ভেঙে বাড়ির দুই বউ ও এক মেয়ের নিথর দেহ উদ্ধার হয়।

পুলিশ রিপোর্ট সূত্রের দাবি, বাড়ির বধূ রোমির গলায় একটি ক্ষত ছিল। এছাড়াও দুই হাতের কব্জির শিরা কাটাছিল। হাতের শিরা কাটাছিল সুদেষ্ণাদেবীরও। তাঁরও দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে নাবালিকা কিশোরীর দেহেও।

সূত্রের দাবি, বিষ মেশানো খাদ্য খাওয়ার ৩ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ওই তিনজনের। যা থেকে পুলিশের অনুমান, খাদ্য বিষক্রিয়ার পাশাপাশি মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে দুই বধূর হাতের কব্জি কেটে দেওয়া হয়েছিল।

ট্যাংরার দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁরা গলা পর্যন্ত ঋণে ডুবে ছিলেন। কোটি কোটি টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল, যা পরিশোধের ক্ষমতা ছিল না তাঁদের। এমনকি, ট্যাংরার ওই চারতলা বাড়িটিও বন্ধক রাখা হয়েছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, মোট ছ’টি ব্যাঙ্ক এবং সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন দুই ভাই।

প্রণয় এবং প্রসূনের বয়ান অনুযায়ী, ১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার তাঁরা সপরিবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সকলেই ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন পায়েসের সঙ্গে মিশিয়ে। কিন্তু ঘুম ভেঙে যায় দুই ভাই এবং কিশোর প্রতীপের। রোমি এবং সুদেষ্ণা তখনও ঘুমোচ্ছিলেন। সেই সময়ে তাঁদের হাতের শিরা কেটে এবং গলায় আঘাত করে খুন করা হয়। ১৪ বছরের প্রিয়ম্বদার মৃত্যু হয়েছিল খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলেই।

মৃতদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুর অন্তত তিন থেকে ছ’ঘণ্টা আগে তাঁরা শেষ বার খাবার খেয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল ময়নাতদন্তের অন্তত ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে। তাঁদের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বৃহস্পতিবার দুপুরে।

এই হিসাব অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাতের মধ্যে কোনও এক সময়ে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই বধূকে খুন করা হয়। বাড়ির যে সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ পেয়েছে, তাতে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা গিয়েছে প্রণয় এবং প্রসূনকে। সঙ্গে ছিল কিশোর।

এর পর বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ তাঁদের গাড়ি বাইপাসে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি পিলারে ধাক্কা মারে। প্রণয়দের দাবি, আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই গাড়িটি নিয়ে তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে পিলারে ধাক্কা মেরেছিলেন। তবে সেই দাবির সত্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে, মেনেছেন তদন্তকারীরাও।

রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় কিশোরকে নিয়ে কোথায় ঘুরছিলেন দুই ভাই? কেনই বা ঘুমের ওষুধের প্রভাব তাঁদের উপর পড়ল না? এখনও স্পষ্ট নয় এমন একাধিক প্রশ্নের উত্তর। দে পরিবারের প্রতিবেশী এবং আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, পরিবারের এই অবস্থার কথা তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।

Previous articleLeadership Institute ভবিষ্যতের নেতা গড়বে স্কুল! নরেন্দ্র মোদীর নিজস্ব পরিকল্পনার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন শিল্পপতিদের
Next articleBangladesh-Pakistan: বাংলাদেশে এসে চিকেনস নেকের কাছেই ঘুরঘুর করছে পাকিস্তান? সমঝে দিলেন ভারতের সেনা প্রধান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here