দেশের সময় : আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১-তম জন্মদিন। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে পালিত হল এই দিনটি। উত্তর কলকাতার সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজির বাড়িতেও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই ভক্ত সমাগম হয়েছে। সকাল থেকে সিমলা স্ট্রিটে বিবেকানন্দের ভিটেয় গিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে সিমলা স্ট্রিটে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বিবেকানন্দের পৈতৃক ভিটেয় স্বামীজির ছবিতে মাল্যদান করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ৷ এদিন শ্রদ্ধা জানান, মাল্যদান করেন রামকৃষ্ণদেব ও সারদাদেবীকে। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ছিলেন তিনি।মহারাজদের সঙ্গে কথাবার্তার শেষে সিমলা স্ট্রিট থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে রওনা হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।সঙ্গে ছিলেন শশী পাঁজা, তাপস রায়, শ্রেয়া পাণ্ডা।
গোটা দেশে বিবেকানন্দের জন্মদিনটি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। সেই উপলক্ষ্যেও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির জেরে গত কয়েক বছর স্বামীজির সিমলা স্ট্রিটের বাড়ির ভিতরে ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। তাঁদের জন্য বাইরেই শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হত। আপাতত অবশ্য বদলেছে পরিস্থিতি। ফের আগের মতো ভক্তরা বাড়ির সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। স্বামীজির স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখার সুযোগও মিলছে ভক্তদের। একই ছবি ধরা পড়েছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন কেন্দ্রেও। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সারদাপীঠের সভাগৃহে সকালে প্রার্থনা ও ভক্তিগীতি দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দেশাত্মবোধক গান, শারীরিক কসরত্, মার্শাল আর্ট, ছাড়াও বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়।
১৯৮৫ সালে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনটিকে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে ঘোষণা করে তত্কালীন কেন্দ্রীয় সরকার। যারপর থেকেই দেশজুড়ে স্বামী বিবেকানন্দর-র জন্মদিন হিসেবে যে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
যুব সমাজের প্রতি স্বামীজির বার্তা ছিল “ওঠো , জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” কাজ সম্পর্কে বিবেকানন্দর বার্তা, “সারাদিন চলার পথে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হও, তাহলে বুঝবে তুমি ভুল পথে চলেছ।” শিকাগোর বক্তৃতা রাখতে গিয়ে বিবেকানন্দ শুরু করেছিলেন, ‘ভাই ও বোন’ বলে সম্বোধন করে। তাঁরই বক্তব্য, ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’
চরিত্র গঠন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য ছিল, “নিজের উপর বিশ্বাস না এলে, ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস আসে না।’ তাঁর কথায়, “যে রকম বীজ আমরা বুনি, সে রকমই ফসল আমরা পাই। আমরাই আমাদের ভাগ্য তৈরী করি, তার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই, কাউকে প্রশংসা করারও কিছু নেই। ”
সঙ্গে ভয়ডরহীন হয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘ভয়ই মৃত্যু, ভয়ই পাপ, ভয়ই নরক, ভয়ই অসাধুতা, ভয়ই ভুল জীবন, এই বিশ্বের সমস্ত নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা ও ধারণা’ এই ভয়ের অসৎ শক্তি থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।’