দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এসএসসি দুর্নীতি মামলায় চমকদার মোড়।স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে শুক্রবার সকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়ি এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেখলিগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছেছে ইডির টিম।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট । নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে সকাল সকাল তল্লাশি অভিযানে নামে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। শুধু তাই নয় ইডি এসেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা পুলিশদের সকলের মোবাইল নিয়ে নিয়েছে বল খবর। বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
শুক্রবার সকালে তদন্ত অভিযানে নেমেছে ইডি। প্রায় ৫ জনের প্রতিনিধি দল গিয়েছে পরেশ অধিকারীর বাড়িতে। একইসঙ্গে বাগদায় চন্দন মণ্ডলের বাড়িতেও ইডির দল পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর। মেখলিগঞ্জ ও বাগদাতেও ইডির সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্যের একাধিক জায়গায় শুক্রবার ইডির তল্লাশি অভিযান চলছে বলে খবর।আসল নাম না নিয়েই প্রথম বোমা ফাটিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস। তাঁর ইউটিউব ভিডিয়োয় উঠে এসেছিল বাগদার রঞ্জনের কথা। যিনি টাকার বিনিময়ে চাকরি করে দিতেন। সেই রঞ্জনের আসল পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর চন্দনের ‘কীর্তি’ও বাগদার বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরছে। এই অবস্থায় চন্দন মণ্ডলের প্রভাব ও প্রতিপত্তি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর (Dulal Bar)। তাঁর দাবি,২০১২ সালের পর থেকে বাগদায় যত চাকরি হয়েছে, তার ৯৯ শতাংশ টাকা দিয়ে হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আসল নাম না নিয়েই প্রথম বোমা ফাটিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস। তাঁর ইউটিউব ভিডিয়োয় উঠে এসেছিল বাগদার রঞ্জনের কথা। যিনি টাকার বিনিময়ে চাকরি করে দিতেন। সেই রঞ্জনের আসল পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর চন্দনের ‘কীর্তি’ও বাগদার বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরছে। এই অবস্থায় চন্দন মণ্ডলের প্রভাব ও প্রতিপত্তি নিয়ে কিছু দিন আগেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর । তাঁর দাবি,২০১২ সালের পর থেকে বাগদায় যত চাকরি হয়েছে, তার ৯৯ শতাংশ টাকা দিয়ে হয়েছে।
সাংবাদিক বৈঠকে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ করতে শোনা যায় দুলাল বরকে। তিনি বলেন, চন্দন মণ্ডলের জাল কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত। অনেককে টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন। আবার অনেকে টাকা দিয়েও চাকরি পাননি। তবে যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁদের টাকা ফেরত দেননি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পরের প্যানেলে চাকরি করে দেবেন। কিন্তু, অনেকের চাকরি হয়নি।
দুলাল বর জানান, ২০১২ সাল থেকে চন্দন টাকা নিয়ে চাকরির বন্দোবস্ত করে দিত। সিপিএমের আমলে তাঁর চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেন। এর জন্য আলাদা দরও বাঁধা থাকত।
দুলাল বরের কথায়, “আমি যতদূর জানি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বেশি। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দনের পুজোর উদ্বোধন করতে এসেছেন।”এলাকার তৃণমূল নেতারা চন্দনকে সমীহ করে চলতেন বলে দাবি দুলালের। তবে চন্দন কোনওদিন সক্রিয় রাজনীতি করেননি। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পরিতোষ সাহার তৃণমূল টিকিট পাওয়ার পিছনে চন্দনের হাত রয়েছে বলে দাবি দুলাল বরের।
সূত্রের খবর, মোট ১৩ টি জায়গায় ইডি তল্লাশি চালাচ্ছে। ইডি এসএসসি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বাগদা রঞ্জন, পরেশ অধিকারীর বাড়ি সহ রাজ্য মোট ১৩ টি জায়গায় ইডি তল্লাশি চালাচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, পার্থ ও পরেশের পাশাপাশি এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিনহার বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছে ইডির একটি দল। সব মিলিয়ে এই নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে সাতসকালে।
এসএসসি দুর্নীতিতে আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই। ঘটনা হল, এই মামলায় সিবিআই দফতরে পার্থ, পরেশ, শান্তিপ্রসাদ তিনজনই এক এবং একধিকবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিয়েছেন। এবার তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে গেল আর এক তদন্ত এজেন্সি ইডি।
এসএসসি নিয়োগে বিপুল টাকার আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি অনেকের। সেই সূত্রেই এই মামলায় তদন্ত শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এদিন রাজ্যের মোট তেরোটি জায়গায় এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে অভিযান চালাচ্ছে ইডি। সকাল দশটার সময়েও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে রয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। পার্থর বাড়ির বাইরের সামনে ও পিছনে মোতায়েন রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেইসঙ্গে নেতাজি নগর থানার পুলিশও পৌঁছেছে।
শন্তিপ্রসাদ সিনহার সার্ভে পার্কের বাড়িতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়েই হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিটি।
শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছয় ইডি-র টিম। জানা যাচ্ছে, সেই সময়ে পার্থবাবু ঘুমাচ্ছিলেন। বাড়ির পরিচারক পার্থবাবুকে ঘুম থেকে তুলে জানান, ইডি এসেছে। এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রায় সব সদস্যের বাড়িতে এদিন ইডি আধিকারিকরা পৌঁছেছেন।
ইতিমধ্যে মামলাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি যে সকল তথ্য পেয়েছে, তাতে টাকার বিনিময়ে কম নম্বর প্রাপ্ত ও অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাতে শিক্ষা দফতরের একাংশ এবং জেলা স্তরে এই চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে যারা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। দফতরের তৎকালীন মন্ত্রী হিসেবে এই আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত ছিলেন কিনা এবং তার ঘনিষ্ঠ কোন পদাধিকারী এই আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না সেই বিষয়গুলি নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
পাশাপাশি যাদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ তাদের একাংশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যে তথ্য সিবিআই পেয়েছিল তা ইডিকে দেওয়া হয়েছে।