দেশের সময়: এবার বিদেশের মঞ্চ মাতালেন বনগাঁর শ্রীলা। চতুর্থ গ্লোবাল মিউজিক্যাল ফেস্টিভ্যালে বিশেষ শিল্পী হিসেবে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। তাঁকে এই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ওয়েসিস ফাউন্ডেশন। ইন্দো-থাই চেম্বার অফ কমার্সের উদ্যোগে ২৮ অক্টোবর ভারত ও থাইল্যান্ডের শিল্পীরা তাঁদের নৃত্য পরিবেশন করেন। আর বিদেশি শিল্পীদের সঙ্গে রীতিমতো টক্কর দিয়ে নিজের পারফরম্যান্সে সকলের মন জয় করে নেন বনগাঁর মেয়ে শ্রীলা ৷
তখন সবে ক্লাস থ্রি। বাবা মারা যান। সাধারণ মধ্যবিত্ত সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েন মা রীনা চ্যাটার্জী। সংসারের হাল ধরতে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বাড়িতেই একটি বুটিক খোলেন। নিজের রোজগারের টাকায় ছেলে মেয়েকে মানুষ করাই জীবনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল রীনাদেবীর। ছোট থেকেই নাচ পছন্দ ছিল মেয়ে শ্রীলার। মেয়ের শখ দেখে পাশে দাঁড়ান মা। আর মায়ের সমর্থন পেয়েই আনন্দে নেচে ওঠে মেয়ের মন। দেখুন ভিভিও
বনগাঁর আমলাপাড়া থেকে যে জার্নি শুরু হয়েছিল একদিন, দিনে দিনে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। এমনকী বাংলার বাইরে। কিন্তু ভালোবেসে একদিন যে নাচ বেছে নিয়েছিলেন শ্রীল, তা যে এমন খ্যাতির মুকুট পরাবে ভাবতে পারেননি শিল্পী নিজেই। কিছুদিন আগেই ভুবনেশ্বরের উৎকল মঞ্চে যখন তাঁর হাতে উঠেছে ‘গুরু পদ্ম’ পুরস্কার। কত্থক শাস্ত্রীয় নৃত্যে বিশেষ পারদর্শিতার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে শ্রীলাকে।
শিল্পীর কথায়, বিদেশে পারফরম্যান্স, দেশে সম্মান, পুরস্কার দ্বায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিল। আরও ভাল কাজ করার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে এই পুরস্কার। আগেই গায়ক কুমার শানুর সঙ্গে তাঁর একটি এলবাম প্রকাশিত হয়েছে, যার নাম ‘নাচব আমি গাইবে তুমি’। কথায় কথায় আরও একটি সুখবর জানাতে ভুললেন না। বললেন, তাঁর দ্বিতীয় এলবামও আসছে নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে। ওই এলবামে গেয়েছেন শিল্পী ইমন চক্রবর্তী। শ্রীলার কথায়, মা না থাকলে উত্তরণের সিঁড়িটাই খুঁজে পেতাম না। আর এখন বিরাটি কলেজের অধ্যাপক স্বামী সুমিত মুখার্জীর সাহায্য ও অনুপ্রেরণা আমাকে ভালো কাজ করার ইচ্ছে জাগায় সবসময়। তাঁর নাচের স্কুল ‘সৃষ্টি’ কে নিয়েও অনেক ভাবনা রয়েছে শ্রীলার।