পাচারের টাকায় দুবাইতে বাড়ি বানানোর অভিযোগও তুললেন তিনি,,,,,
রাজ্য সরকার দেওয়া “ছাট ” মাংসে কুর্মি সমাজের মানুষকে মন না ভরাতে অনুরোধ করলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। সম্প্রদায়গত ভাবে শালবনির এম এল এ শ্রীকান্ত নিজেও কুর্মি সমাজ ভুক্ত। শুক্রবার পুরুলিয়ায় কুর্মি সমাজের নানা স্তরের মানুষদের নিয়ে আয়োজিত এক মহতী সভায় তিনি আদিবাসি মানুষদের জীবনের দুঃখ ও বঞ্চনার বারোমাস্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রীতি মতো সোচ্চার হয়েছেন। রাজনীতিতে দুর্নীতি বাড়বাড়ন্ত নিয়ে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক নেতার নাম না করলেও তিনি এমন কটাক্ষও করতে ছাড়েন নি ,” নাদির শাহরা দেশের টাকা লুটে বিদেশে পাচার করছে আর দুবাই তে বাড়ি বানাচ্ছে! “
নিজে রাজ্য মন্ত্রীসভার সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত কুর্মি ডেভলপমেন্ট বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েও, তিনি কিন্তু বলতে দ্বিধা করেন নি, ” কুর্মি ডেভেলপমেণ্ট বোর্ড, কুরমালি ভাষা বা সারনা ধর্ম নিয়ে কিছু কিছু ছাড় রাজ্য সরকার দিচ্ছে। এগুলো তো ছাট। আসল জিনিসটা আমরা পাই না। তুচ্ছ তুচ্ছ কিছু দেওয়া হয়। তাতে তুষ্ট হবেন না। এতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন আটিটা নিয়ে পালাচ্ছে অন্য লোক।”
গড় পড়তা অন্যান্য তৃণমুল নেতা বা মন্ত্রীরা যেভাবে রাজ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুন্নয়ন বা বঞ্চনার জন্য এক তরফা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন, ঠিক সেই পথে হাঁটেন নি শ্রীকান্ত। তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য কাউকেই ছেড়ে কথা বলতে নারাজ। তার মন্তব্য,” কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার, যাকেই যা বলুন, এক কান দিয়ে শোনে অন্য কোন দিয়ে বের করে দেয়। কেউ আমাদের জন্য কিছু করে না। ” তিনি এই ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতাও বিধৃত করেন। মন্ত্রীর কথায়, ” রাজ্য সরকারকে তো অনেক কিছু বলি, জানাই। কিন্তু রাজনৈতিক দলের লোক জন তো আছে। বুঝতেই পারছেন। “
তার সাফ কথা, ” কেউ যদি খারাপ হয়, তো খারাপই বলব। সোজা কথা বলব। তা সে তৃণমুলের লোক হোক আর বি জে পি” র হক।” তার প্রশ্ন, কুর্মি রা তপশিলি জাতি ভুক্ত হবে না। সাংবিধানিক অধিকার বা ন্যায় থেকে কেন তারা বঞ্চিত হবেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘ যেটুকু অধিকার আছে, তা থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। বিচার ব্যবস্থায় কি এক জনও কুর্মি সম্প্রদায়ভুক্ত বিচারক আছেন? বঞ্চনার নিরসনে আমাদের বড় মাপের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যা নেহাতই আন্দোলনের জন্য আন্দোলন নয়। লাগাতার উন্নয়ন পাখির চোখ করে আন্দোলন। “
তিনি কুর্মিদের নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যেও শিক্ষার বিকাশের বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার দিতে বলেন। তার অনুযোগ, ” বড় লোকের ছেলে মেয়েরা সি বি এস সি , আই সি এস সি তে পড়ে। কুর্মিদের ঘরের অনেক ছেলে মেয়ে তো নুন্যতম শিক্ষার সুযোগও পায় না। সামান্য যে টুকু পড়া শোনা হল তো হল, এর পর গরু ভেড়া চড়াও! “
শনিবার বিকালে মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। একটু পরেই তিনি কলকাতা রওনা হবেন রবিবারের তৃণমূলের জন গর্জন সভায় যোগ দিতে। তিনি বললেন, ” আমি সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই কুর্মিদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। ” কিন্তু দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে কে বা দুবাইতে প্রাসাদ বানাচ্ছে! এই প্রশ্নের উত্তরে নিরুত্তরই থেকেছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত।