দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-র ভোট বয়কট, অশান্তির মধ্যেই রবিবার সম্পন্ন হল বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হল। আর এই নির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লিগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ঢাকা প্রশাসনিক বিভাগের অন্তর্গত গোপালগঞ্জ জেলার গোপালগঞ্জ -৩ আসনের প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন। এই গোপালগঞ্জ হাসিনার জন্মস্থান। ১৯৯১ সাল থেকেই টানা এই কেন্দ্রে ভোটে লড়ছেন হাসিনা। প্রতিবারই জয়ী হয়েছেন। তবে এ বারের প্রাপ্ত ভোট গত ছ’বারের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো লিখেছে, ‘‘গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) আসনে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’’
গোপালগঞ্জ -৩ আসন থেকে ২,৯০,৩০০ ভোটের মধ্যে হাসিনার ঝুলিতে পড়েছে ২,৪৯,৯৬২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এনপিপি-র শেখ আবুল কালাম পেয়েছেন মাত্র ৪৬০টি ভোট। আর মাত্র ৪২৫টি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন জাকের পার্টির মাহাবুর মোল্লা।
কেবল শেখ হাসিনা নয়, রবিবার নির্বাচন শেষে গণনা যত এগোয় ততই আওয়ামী লিগের প্রার্থীদের জয়জয়কার শুরু হয়। এবারে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল আওয়ামী লিগ। তিনিও বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই সাকিব ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি মাগুরা-১ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। সাকিবের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ কংগ্রেসের কাজি রেজাউল হোসেন পেয়েছেন ৫,৯৯৪ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী মহম্মদ সিরাজুস সায়েফিন পেয়েছেন ২,১৪৩ ভোট। এরপর যত সময় এগোয় ততই হাসিনা মন্ত্রিসভার একের পর এক মন্ত্রীদের জয়জয়কারের খবর আসে। হাসিনা সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও জয়ী হয়েছেন।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ২৮টি রাজনৈতিক দল। মোট প্রার্থীর সংখ্যা ১৯৬৯ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন।
প্রসঙ্গত, এদিন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল। যদিও প্রথম থেকেই এই নির্বাচন বয়কট করেছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ভোট বয়কট করার দাবি তুলে বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ-অবরোধও করেন বিএনপি কর্মী সমর্থকেরা। বাসে, চলন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মতো নাশকতার ঘটনাও ঘটে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন সকাল ৮টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যেই ভোটপর্ব হয় এবং ভোটদান শেষ হয় বিকেল ৪টেয়। মোট ৩০০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও নওগাঁ-২ কেন্দ্রের এক প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল হয়। ফলে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। তবে ভোটদানের হার ছিল অনেকটাই কম। সব মিলিয়ে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে বলে জানান বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজি হাবিবুল আউয়াল। যদিও এই পরিসংখ্যান নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হওয়ার পরই গণনা শুরু হয় এবং স্থানীয় সময়, সোমবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।