School Student:অসুস্থ বাবা কর্মহীন,টোটো চালিয়ে পড়াশোনা,
অন্নসংস্থান স্কুল ছাত্রীর: দেখুন ভিডিও

0
395

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ উপার্জনের আশায় টোটো কিনেছিলেন মধ্য বকচরার অলোক ৷ ভালই চলছিল সব কিছু। কিন্তু ভাগ্য বিরূপ, কিছুদিন যেতে না যেতেই শরীরে থাবা বসাল বিরল রোগ। এখন কর্ম ক্ষমতা নেই বললেই চলে ৷ তাই বাধ্য হয়ে তাঁর পেশা সামলাচ্ছেন ছোটো মেয়ে গায়ত্রী৷ ঘরে এক দিকে অসুস্থ বাবার ওষুধের খরচ সেই সঙ্গে মা, দিদি সহ গোটা পরিবারের দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে টোটো চালাচ্ছে গাইঘাটার ঢাকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্ৰেণির এই ছাত্রী। গোটা সংসার বাঁচাতে টোটোতে যাত্রী নিয়ে তাঁদের পৌঁছে দিচ্ছে গন্তব্যে।

সংসারে মোট সদস্য চার জন। তবে সংসার চালানোর পুরো দায়িত্বই তাঁর । উত্তর ২৪পরগনার গাইঘাটার ঢাকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী গায়ত্রী গাইঘাটার মধ্য বকচরা এলাকায় টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন৷ কিশোরীর এই বয়সে টোটো চালানো শিশুশ্রমের মধ্যে পড়ে ৷ কেন তাঁর এই পরিস্থিতি? কি বলছেন নবম শ্রেণির সেই ছাত্রী ! দেখুন ভিডিও

সংসারের হাল ধরতে কচি হাতে টোটো চালাচ্ছে কিশোরী:


পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগেও সংসারের অবস্থা ছিল অন্য রকম। গায়ত্রীর বাবা অলোক টোটো চালাতেন। অনটনের মধ্যেও কোনও রকমে সংসার চলে যাচ্ছিল। বিপত্তি বাধে গত বছর কালীপুজোর পরে। অলোকের ব্রেনস্টোক হয়। তারপর থেকে তিনি শয্যাশায়ী। পরিবারের একমাত্র রোজগারে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংসার ভেসে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখনই ছোট্ট মেয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, সে-ই ধরবে সংসারের হাল।

গায়ত্রী বলেন, “বাবা অসুস্থ হওয়ার পরেই এই ভাবনা আমার মাথায় আসে, একদিন বলেছিল, সংসারটা ভেসে যাবে বুঝতে পারছিলাম, এক দিন দুপুরেই বাবার টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায় ৷ দ্রুত শিখে নিই টোটো চালানো।”


বাড়িতে বাবা, মা, দিদি আছে গায়ত্রীর। তার কথায়, “দিদির ইচ্ছে, পুলিশে চাকরি করবে। তাই আমি কাজ করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছি।” গায়ত্রীর মা কৃষ্ণা অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। তিনি বলেন, “মেয়ে টোটো চালাচ্ছে সংসারটা বাঁচানোর জন্য। কিন্তু আমার এটা ভাল লাগে না। কোনও উপায়ও নেই। সরকারের কাছে আবেদন, যদি ওর বাবাকে ভাল চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলা যায়। তা হলে আর মেয়েটাকে টোটো চালাতে হবে না। মন দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে।”


টোটো চালানোর অভিজ্ঞতা কেমন?
ঢাকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী গায়ত্রী বলে, “প্রথম দিকে লোকজন দেখে হাসত। অনেকে কটূ কথাও বলত। আমি কানে নিতাম না। আমি টোটো চালাই, রাতে বাড়ি ফিরি বলে মাকেও অনেকে অনেক কথা শোনায়। এ কারণে এক বাড়ি থেকে মাকে কাজ ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমি হাল ছাড়ছি না এখন এই কাজটা ভালই লাগে ৷ মন থেকে করছি৷ উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা আছে।”


গায়ত্রীর এই বয়সে টোটো চালানো শিশুশ্রমের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সে কাজ না করলে পরিবারের হাল খারাপ হবে। সে কারণে অনেকেই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখছেন। তাঁরা চান, সরকার যেন পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়। বিষয়টি জেনে শনিবার বিকেলে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর গায়ত্রীর বাড়িতে যান। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে পরিবারটির খোঁজ-খবর নেওয়া। মেয়েটির বাবার সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছিল। হার্টের সমস্যা আছে। আমি ওঁকে কল্যাণী এইমএস-এ চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। সব রকম ভাবে পরিবারটির পাশে থাকব। দুই বোনের পড়াশোনা করতে যাতে অসুবিধা না হয়, তা-ও দেখব।”

শিশুশ্রম বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি দেবদাস মন্ডল বলেন, “রাজ্যে সুশাসন না থাকায় এই পরিস্থিতি। রাজ্য তো এখন আদালত চালাচ্ছে, এটা বাংলার লজ্জা!”

বনগাঁ জেলা সাংগঠনিক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, ” গায়ত্রী আমাদেরই মেয়ে,ওর পরিবারকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, তা নিয়ে বিডিওর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা মেয়েটির মায়ের একটা কাজের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি এবং স্বাস্থ্য- সাথী একল্পের মাধ্যমে ওর বাবার চিকিৎসা করানোর জন্যও উদ্যোগ্ নেওয়া হয়েছে।”

Previous articleRailways Minister : চাঁদপাড়া সহ দেশের ৫০৮ টি স্টেশনের আধুনিকীকরণ হলে ট্রেনের ভাড়া কি বাড়বে? কি জানালেন রেলমন্ত্রী
Next articleRahul Gandhi: সংসদে ফিরলেন রাহুল, অধীর-সুদীপদের মিষ্টিমুখ , ‘ইন্ডিয়া’র উৎসব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here