দেশের সময় , কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। এ বার শাস্তি ঘোষণার পালা। আজসোমবারই শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়ে দেবেন, কী শাস্তি দেওয়া হবে আরজি কর মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়কে।
সোমবার সকাল সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় সঞ্জয় রায়কে। র্যাফ-পুলিশে ছয়লাপ শিয়ালদহ আদালত চত্বর। ইতিমধ্যে পুলিশভ্যান থেকে সিভিক সঞ্জয় রায়কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোর্ট লকআপে।
দুপুরের মধ্যেই পরিষ্কার হবে দোষী সঞ্জয় রায়ের কী শাস্তি হবে। শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসে সাড়ে ১২টা নাগাদ শুরু হবে প্রক্রিয়া। প্রথমে দোষী ও তাঁর আইনজীবীর কথা শোনা হবে। শোনা হবে নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্যও। তার পর দুপুরে শাস্তি ঘোষণা হবে। আরজি করে জুনিয়র ডাক্তারকে খুন ও ধর্ষণের মামলায় শনিবার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিচারক সেদিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধ প্রমাণিত। শাস্তি পেতে হবে। যে সকল ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে বলে জানান বিচারক।
শনিবার সঞ্জয়কে এজলাসে পেশ করার পর ১২ মিনিটে শেষ হয়ে যায় কোর্ট। বিচারক জানিয়ে দেন, ৯ অগস্ট ভোরে সঞ্জয় আরজি কর হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারকে আক্রমণ করেন এবং যৌন হেনস্থা করেন। ওই ডাক্তারকে গলা টিপে খুনও করা হয়। সাক্ষীদের বয়ান ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর এই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এদিকে সিবিআই প্রথম থেকেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়রের ফাঁসির আবেদন করেছিল। চার্জশিটেও তাঁকে একা দোষী হিসেবে দাবি করা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় রায়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন।
সঞ্জয় যদিও শনিবার ফের দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এজলাসে দাঁড়িয়েই চিৎকার করে সঞ্জয় রুদ্রাক্ষের মালার যুক্তি দেন। বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। এই মালা পরে আমি এই অপরাধ করব?’ আরজি করে কিছু করলে তাঁর রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে যেত বলেও দাবি করেন তিনি। যদিও পুলিশ তাঁকে আদালত কক্ষের বাইরে নিয়ে যায়। বিচারক জানিয়ে দেন, সোমবার অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি তাঁর বক্তব্য শোনা হবে।
সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করার পর বিচারকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা এজলাসে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেলেন। জানান, বিচারক তাঁদের আস্থার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনায় আরও কেউ কেউ জড়িত বলে তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁদের কথাও শোনা হবে আজ।