৭৫ এর গন্ডি পেরলেও আজও কন্ঠ অটুট তাঁর । এখনও নিয়ম করে গানের রেওয়াজ করে চলেছেন তিনি । পাড়া প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙে তাঁর ভৈরব রাগের মূর্চ্ছনায় । সংগীতে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন মানুষের ভালেবাসা । উত্তর ২৪ পরগনার বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী রীনা রায় সেনগুপ্তের একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দেশের সময় -এর প্রতিনিধি অর্পিতা বনিক । দেখুন ভিডিও
প্রশ্ন:৭৫ এর গন্ডি পার করেছেন ইতিমধ্যেই । সঙ্গীত জগতে কি ভাবে প্রবেশ করলেন?
উত্তর:আমি নিজেও বলতে পারবো না। মা বলতেন ছোটবেলায় আমি একটা জলচৌকির ওপর কালি দিয়ে দাগ টেনে সা রে গা মা করতাম। ঠিক হাতে করআ মাকে কেউ শেখায় নি।
পরবর্তী কালে আমাদের বাড়ীর কাছে বাণী মন্দিরে গুরুজী ওমঙ্কার নাথ রায়চৌধুরী আসেন। ওনার কাছ থেকে পদ্ধতি অনুযায়ী গান শেখার শুরু।
প্রশ্ন: প্রথম দিনের গাওয়া গানটা মনে আছে?
উত্তর: আমার প্রাইমারী স্কুলে প্রথম গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত সঙ্কোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান
প্রশ্ন:সঙ্কোচের বিহ্বলতা এই গান দিয়ে শুরু এরপর কিভাবে এগোলেন?
উত্তর. : গুরুজী ওমঙ্কার নাথ রায়চৌধুরী ওনার কাছ ক্লাসিক্যাল সংগীত শেখা শুরু। তারপর আমার দাদা তানপুরা, হারমোনিয়াম কিনে দেন। সেই সময়
এখানে অনেক গুণী শিল্পীরা এসেছেন। তখন নজরুলগীতির দিকে নজর এলো। তারপর বিমান মুখোপাধ্যায় এর কাছে গান শেখা।
প্রশ্ন: সেই সময়ে আপনার কতজন ছাত্র ছাত্রী ছিল?
উত্তর:অনেক, দুটো ঘরে জায়গা দিয়ে পারা যেত না।
প্রশ্ন: সঙ্গীত জগত নিয়ে কোনো আক্ষেপ আছে?
উত্তর: হ্যাঁ আছে, গান নিয়ে পড়ার ইচ্ছা ছিল। ক্লাসিক্যাল সংগীত যতোটা ভালোবেসেছি তবে নিজেকে সে ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি নি। সেই সময়ে ছাত্রছাত্রীদের শেখাতে গিয়ে নিজেকে সময় দিতে পারি নি।
প্রশ্ন: স্কুলে চাকরি করতেন সাথে গান শেখানো একসাথে করতেন কিভাবে?
উত্তর: ভালোবেসে দুটো একসাথে চালিয়েছি।
প্রশ্ন: ৭৫ পেড়িয়ে ৭৬ এ পা রেখেছেন । এই বয়সে গান রেওয়াজ করেন কিভাবে?
উত্তর : সেভাবে এখন আর হয় না। যেকোনো মন্দিরে যাই সেখানে গান করি।
প্রশ্ন: বর্তমানে সঙ্গীতের সাধনা কঠিন না সহজ বলে মনে হয় আপনার?
উত্তর: আমার সময়ে অশোকনগরে বিদ্যুৎ ছিলো না। হারিকেনের আলোয় লেখাপড়া ও গানের চর্চা করতে হত । আর শুধু রেডিও শুনতাম । এখন অনেক যন্ত্র এসেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে । রঙিন টেলিভিশনে দেখি অনেকে গান গাইছে ।এই প্রজন্ম আলোর জগতে এসেছে আমরা অনেকটাই অন্ধকারে ছিলাম।