হাওড়া: চার মাস আগে আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে সারা বাংলায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ন্যায়ের দাবিতে পথে নেমেছিলেন বিবেকবান মানুষের দল। শনিবার সেই ঘটনার চার মাস পূর্তিতে হাওড়া মন্দিরতলার ‘ নারী সুরক্ষা কমিটি’ আবার বহু মানুষকে একত্রিত করে। ‘ বিবেকবান লহরী’ নামে এক পথসভার আয়োজন করে তারা। এই পথসভায় শত শত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের উপস্থিতি লক্ষণীয়।
অন্যদিকে শুক্রবার অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের জামিনের খবরে বিবেকবান মানুষের দল তাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতাতেও মিছিল বের হয়। বহু মানুষ আবারও গর্জে ওঠেন। শনিবার সভা শেষে হাওড়ার মন্দিরতলায় মশাল প্রজ্জ্বোলন করা হয় এবং সন্দীপ ঘোষের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। সভায় এদিন বক্তব্য রাখেন অন্দোলনের প্রথম সারির মুখ রিমঝিম সিনহা, ডাঃ দেবাশীষ হালদার, ডাঃ উৎপল ব্যনার্জি, ডা: অগ্নিবান কুন্ডু, ডা : স্নিগ্ধা হাজরা, ডাঃ চান্দ্রেয়ী গুপ্ত, ডা: আকিব আশরাফ প্রমুখ।
অন্যদিকে,আরজি কর কাণ্ডে দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার দাবিতে, সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের প্রতিবাদে ধর্মতলায় ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের। ডিসেম্বরের ১৭ থেকে ২৬ তারিখ ডোরিনা ক্রসিংয়ে ধর্নায় বসবেন ডাক্তাররা।
৯০ দিন পেরোলেও আরজি কর কাণ্ডে চার্জশিট পেশ করতে পারেনি সিবিআই। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় শুক্রবারই জামিন পেয়েছেন কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এরই প্রতিবাদে চলতি মাসে ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডাক্তাররা।
রবিবার নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই মঞ্চ বাঁধার অনুমতি চেয়ে পুলিশ কমিশনারকে ই-মেল পাঠিয়েছে তারা। যদি কলকাতা পুলিশ অনুমতি না দেয় তাহলে ডাক্তাররা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডাক্তারদের কথায়, ‘সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে, তার পরেও এঁদের ছেড়ে দেওয়া হল। তার বিরোধিতায় এবং রাজ্য যে এঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের অনুমোদন দিচ্ছে না, তার প্রতিবাদে আমরা ধর্নায় বসছি। এছাড়াও পুলিশের যে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, তারও প্রতিবাদে আমাদের এই সিদ্ধান্ত।’
প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে নেমে সন্দীপকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরবর্তীতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার দেখায় সিবিআই।
পাশাপাশি সন্দীপের সঙ্গে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও। কিন্তু, সিবিআই ৯০ দিনেও চার্জশিট না দিতে পারায় জামিন পান দু’জনই।