দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মঙ্গলবার সকালেও কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের আকাশে ছিল সূর্যের দাপট। কিন্তু দুপুর পেরোতেই পাল্টে যায় আকাশের ছবি। কোথাও ঝড় ওঠে, কোথাও আবার সেই সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। ফলে তীব্র দাবদাহ থেকে সাময়িক মুক্তির আশা দেখছেন বাংলার মানুষ।
এদিন বিকেল গড়াতেই কলকাতা সহ সীমান্তশহর বনগাঁর আকাশ কালো করে ঝড় উঠলো। ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে কলকাতার ওপর দিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তছনছ হয়ে গেছে কলকাতা ও জেলার একাধিক জায়গা।
রেললাইনে গাছ পড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত শিয়ালদহ মেন শাখায়। উত্তর ২৪ পরগনার পলতা স্টেশনের কাছে গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
এদিন জেলার কয়েকটি জায়গায় প্রবল ঝড় হয়। সেই ঝড়েই পলতায় দু’টি আপ লাইনের একটিতে গাছ পড়ে গিয়েছে। যার জেরে বিকেল ৫টা ২০ থেকে বন্ধ ট্রেন চলাচল। পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ট্রেন চলাচল। ঘটনাস্থলে আমাদের টিম চলে গিয়েছে। যত দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’
গত কয়েকদিনে প্রবল দাবদাহে পুড়ছিল রাজ্যের একাধিক জেলা। কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ছুঁইছুঁই, কোথাও আবার তাপমাত্রার পারদ ৪৫ ছাড়িয়েছে। সেইসঙ্গে পশ্চিমের জেলা গুলিতে বয়েছে তাপপ্রবাহ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল, মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে রাজ্যজুড়ে। উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে।
বৃষ্টিপাত না হলেও মঙ্গলবার বিকালে ঝোড়ো হাওয়ার ইনিংস চলল সারা কলকাতা জুড়ে! ঝড়ের দাপটে গাছ ভেঙে পড়ল খিদিরপুরের কেপি রোডে। ফলে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় সেই গাছ ইতিমধ্যেই সরানো হয়েছে। স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল। ঝড়ের প্রকোপে পলতায় গাছ ভেঙে শিয়ালদহ মেন শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিকাল পাঁচটা নাগাদ উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা ঝড় সর্বোচ্চ ৭৮ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে আলিপুরের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। দমদমের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে সর্বোচ্চ ৭২ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে।
সেইমতোই দুপুর থেকেই ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে দুর্গাপুর, বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও ঝড়ের বেগ ৪০-৫০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ৫০-৬০। দক্ষিণের মতো উত্তরের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
উল্লেখ্য, এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। এদিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে, ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। বাতাসে আপেক্ষিত আর্দ্রতার পরিমাণ ৪৪ থেকে ৮৪ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফের তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে বাধা। বৃষ্টির জেরে বাতিল সভা। মঙ্গলবার বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় তৃণমূলের সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রোড শোতে তিনি অংশ নিলে বাকি কর্মসূচি অর্ধসমাপ্ত রেখেই বাঁকুড়ার সিমলাপাল থেকে ফিরে গেলেন অভিষেক।