দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ খারিজ রাহুলের আর্জি।
আজ গুজরাট হাইকোর্টের নির্দেশের দিকে তাকিয়ে ছিল সবপক্ষ। বেলা গড়াতেই দেখা গেল কংগ্রেস নেতার আর্জি খারিজ করে দিল আদালত। মোদী-পদবী মন্তব্য মামলায় ২৩ মার্চ তৎকালীন সাংসদ রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
ঘটনার সূত্রপাত , ২০১৯ সালে কর্নাটকের এক জনসভায় ‘সব মোদী চোর’ মন্তব্য করার জেরে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন রাহুল (Rahul Gandhi In Modi Surname Case)। খুইয়েছেন নিজের সাংসদ পদও। দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল সুরাতের সেশন কোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই গুজরাত হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিলেন তিনি। তবে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির সেই আবেদন খারিজ করে দিল উচ্চ আদালত। জানা গেছে, এবার সুপ্রিম কোর্টে যাবেন রাহুল।
২০১৯ সালে কর্নাটকের ভোটের প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেছিলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যাঁরাই দুর্নীতি করছেন তাঁদেরই পদবী মোদী। আইপিএলে লুঠ করেছিলেন ললিত মোদী। নীরব মোদী টাকা লুঠ করে পালিয়ে গিয়েছেন। আর যিনি তাঁকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন তিনিও একজন মোদী। দু’জনেই একই রাজ্যের।’
এরপরেই গুজরাতের বিজেপির এক প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমান সাংসদ সুরাতের আদালতে মামলা করেন। তাঁরও পদবি মোদী। তিনি আদালতে বলেন, মোদী পদবীকে রাহুল গান্ধী অপমান করেছেন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে সেই মামলারই চূড়ান্ত রায় দান করে সুরাতের আদালত। সেদিন সশরীরে সুরাতের আদালতে হাজির ছিলেন রাহুল। দোষী সাব্যস্ত করার পর, সাজা ঘোষণার আগে রাহুলকে বিচারক জিজ্ঞেস করেন, আপনার কিছু বলার আছে? আপনি কি অনুতপ্ত? জবাবে রাহুল বলেন, ‘রাজনীতির মঞ্চ থেকে রাজনীতির কথা বলেছি। এখানে অনুতাপের কোনও বিষয় নেই।’ মামলাকারীর আইনজীবীরা তখন আর্জি জানান, রাহুল গান্ধী একরোখা মনোভাব দেখাচ্ছেন। ওঁকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।
তারপর বিচারক রাহুলকে দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনান। পাল্টা রাহুল বলেন, তিনি এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাবেন। যেহেতু তিন বছরের কম কারাদণ্ডের সাজা তাই সুরাতের ওই আদালতই রাহুলের জামিন মঞ্জুর করে। তাঁকে নির্দেশ দেয়, জেলযাত্রার এই সাজা আপাতত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করা হল। এই সময়ের মধ্যে রাহুলকে উচ্চতর আদালতে পিটিশন দাখিল করতে হবে।
তার পরেই গুজরাত আদালতে সাজা মকুবের পিটিশন দাখিল করেন রাহুল। কিন্তু তাঁর সাজা মকুবের আর্জি ২ মে মৌখিক ভাবে খারিজ করে দিয়েছিল গুজরাত হাইকোর্ট। মৌখিক রায় ঘোষণার তিন দিনের মাথায় ৫ মে থেকে হাইকোর্টে গরমের ছুটি পড়ে যায়। ছুটি শেষে ৩ জুন হাইকোর্ট খোলে। তারও এক মাস পরে, এতদিনে বেরোল রায়। যদিও তাঁর জামিনের মেয়াদ আদালত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সাজার উপর স্থগিতাদেশ না মেলায় তিনি সংসদে ফিরতে পারছেন না।
হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই লিখিত রায় পাওয়ার পরেই রাহুল গান্ধী গুজরাত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করতে পারবেন বলে জানা গেছে। যদিও রাহুল তা না করে এবার যাবেন সুপ্রিম কোর্টে।