গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে— বলেছিলেন কবি। কিন্তু সত্যিই কি সব বন্ধন ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে সঙ্গীত? উত্তর পেলাম রবিবার বিকেলে কলকাতা বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভাগৃহে । ঘরভর্তি শ্রোতার কাছে পেশ করা হল রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিল্পী দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের সঙ্গীত জীবনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে এদিন বিশেষ রবীন্দ্র সংগীত অনুষ্ঠান আয়োজিত হল । শিল্পীর একক রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে। অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে হয়। প্রথম পর্বে ,পুজা পর্যায় এবং স্বদেশ পর্যায় মিলিয়ে মোট চৌদ্দটি গান আর দ্বিতীয় পর্বে, প্রকৃতি, প্রেম, ও বিচিত্র পর্যায়ের শিল্পীর কন্ঠে মোট ১৫টি গান শোনা যায় এদিন ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সুমিতা চক্রবর্তী। শিল্পীকে যন্ত্রসঙ্গীতে সাহায্য করছেন কী বোর্ডে কৌশিক মুখার্জী, এসরাজে দেবাশীষ হালদার, তবলা পলাশ নস্কর ও পারকাশানে সত্যেন্দ্র দেবনাথ। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় ছিলেন সামসের মল্লিক। অনুষ্ঠান শেষ হল করতালির অনুরণনে। দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের রবীন্দ্রগীতের মূর্ছনায় আপ্লুত শ্রোতারা । দেখুন ভিডিও
শিল্পী দীপঙ্কর দীর্ঘদিন ধরে শুধু রবীন্দ্র সাধনাই করে গেছেন। তাই এই লম্বা সময় তিনি অন্য কোন গান করার কথা ভাবেননি। এমন কি কোন সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান তৈরির থেকেও দূরে থেকেছেন। কোন রকম প্রচার ছাড়াই শিল্পী রবীন্দ্রসঙ্গীতকে নিজের মধ্যে লালন করার চেষ্টা করে গেছেন। তাই এই ৫০ বছরের লগ্নটি তাঁর কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
শিল্পী দীপঙ্করের কথায়, ” রবীন্দ্রসঙ্গীত আমার প্রাণ। বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পাই এখান থেকেই। সঙ্গীত জীবনের এই পথ চলা শুরু হয় ১৬ বছর বয়সে। তবে গান আমার রক্তে ছিল। আমার মা বিশিষ্ট সুরকার বাপী লাহিড়ীর দাদুর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা পান। তখন বাংলাদেশে থাকতেন। সে সময় মায়ের সঙ্গীত চর্চা বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাই একটা গানের পরিবেশের মধ্যেই বড় হয়ে উঠেছিলাম।
১৯৭৭ সাল ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আকাশবানীর যুববানীতে গান গেয়েছি। এছাড়া নানা অনুষ্ঠানে আমি রবীন্দ্রনাথের প্রতি শুধু শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে চলেছি। এই ভাবেই আমি আজীবন একান্তভাবে সেই সাধনার মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখতে চাই ।”