প্রয়াত হলেন পোপ ফ্রান্সিস। সোমবার ভ্যাটিকানের একটি ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
ভ্যাটিক্যানের ওই ভিডিয়োবার্তায় জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সম অনুসারে) ভ্যাটিক্যানে তাঁর বাসভবন কাসা সান্টা মার্টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন পোপ। ভ্যাটিক্যানের টেলিভিশন চ্যানেলে কার্ডিনাল কেভিন ফারেল বলেন, “গভীর দুঃখের সঙ্গে আমাকে আমাদের পবিত্র ফাদার ফ্রান্সিসের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করতে হচ্ছে।”
রবিবারই খ্রিস্টান ক্যাথলিক ধর্মালবলম্বীদের উদ্দেশে ইস্টারের বার্তা দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার ব্যালকনি থেকে নিজের বার্তা শুনিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথা শোনার জন্য ভ্যাটিক্যান স্কোয়ারে ভিড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক বার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্বাসনালীর প্রদাহ (ব্রঙ্কাইটিস) সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় পোপকে।
পরে ভ্যাটিক্যান থেকে জানানো হয়, তাঁর নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। তাঁর রক্তে অনুচক্রিকার মাত্রা কমে গিয়েছিল এবং প্রায় অ্যানিমিয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই কারণে তাঁর শরীরে রক্ত পরিবর্তন (ব্লাড ট্রান্সফিউশন) করাতে হয়েছিল। সম্প্রতি রোমের গেমেলি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান। তার পর থেকে ভ্যাটিক্যানে নিজের বাসভবনেই থাকছিলেন তিনি। সোমবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ।
রোমান ক্যাথলিক গির্জার পরবর্তী প্রধান কে হবেন, তা এখনও স্থির হয়নি। সাধারণ, পরবর্তী পোপ বাছাই করা হয় একটি ‘কনক্লেভ’ বা সম্মেলনের মাধ্যমে। কোনও পোপের মৃত্যুর ১৫-২০ দিনের মধ্যে ওই সম্মেলন সাধারণ ভাবে শুরু হয়।
উল্লেখ্য,আর্জেন্টিনায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর আসল নাম ছিল জর্জ মারিও বেরগগলিও। ৭৬ বছর বয়সে পন্টিফ হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। ৬৫টি দেশে সফর করেছেন তিনি। ৯০০-রও বেশি সন্ন্যাসী তৈরি করেছেন তিনি। পোপ হিসাবে তাঁর যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল সমলিঙ্গ যুগলকে আশীর্বাদ। তিনিই প্রথম ভ্যাটিকানের অফিসে কোনও মহিলাকে নিয়োগ করেছিলেন।