দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi)। দেখুন ভিডিও স্ট্রিমিং এবং হাইলাইটস।
ভারতে ১০০ কোটি মানুষের ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ হয়েছে। এই সাফল্য গোটা দেশের সাফল্য, প্রতিটি দেশবাসীর সাফল্য। আমি সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
এটা ঐতিহাসিক সাফল্য। এটা নতুন ভারতের ছবি। নিজের সমকল্প পূরণে এ দেশ বহু পরিশ্রম করেছে।
পৃথিবীর অন্য বড় বড় দেশ ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করেছে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। ভারত প্রথমে তাদের ওপরেই নির্ভরশীল ছিল।
প্রশ্ন উঠেছিল, ভারত কি এত বড় মহামারী লড়তে পারবে? কবে ভারত আদৌ ভ্যাকসিন পাবে!
এই সব প্রশ্নের জবাব ১০০ কোটির ভ্যাকসিন। তাও আবার বিনা পয়সায়!
সারা দুনিয়া এখন ভারতকে করোনার থেকে নিরাপদ বলে চিনছে। এই স্বীকৃতি আমাদের দেশকে আরও পোক্ত অবস্থান দিল।
ভারতের ভ্যাকসিনেশন যেন ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এবং ‘সবকা প্রয়াস’-এর সবচেয়ে জীবন্ত উদাহরণ।
ভারতের এই বিশাল জনবহুলতার কাছে এই মহামারী বেশ কঠিন ছিল। এত নিয়ম, এত বিধি কেমন করে পালন করা সম্ভব হবে!
কিন্তু আমাদের কাছে লোকতন্ত্রই শেষ কথা। গরিব, বড়লোক, গ্রাম, শহর– সকলের জন্য ভ্যাকসিনেশন হয়েছে। অসুখের যেহেতু কোনও ভেদাভেদ নেই, ভ্যাকসিনেও নেই। যে যতই ধনী হোক, ভ্যাকসিন সবাই নিয়ম মেনেই পেয়েছে।
অনেকে আবার বলেছিলেন, টিকা নিতে মানুষ আসবেনই না। দুনিয়ার বহু দেশে এমন হচ্ছেও। কিন্তু ভারতের ১০০ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন নিয়ে এই সমস্যার জবাব দিয়ে দিয়েছেন।
যখন সবার প্রয়াস একসঙ্গে জুড়ে যায়, তখন তার ফলাফল দুর্দান্ত হয়।
এত কম সময়ে ১০০ কোটি ছুঁয়ে ফেলা মুখের কথা ছিল না। আমরা এক দিনে এক কোটি মানুষের টিকা দেওয়ার রেকর্ডও করেছি। এটা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দারুণ আশীর্বাদ, যা বহু বড় বড় দেশে নেই।
আমাদের গর্বের বিষয় হল, ভারতের ভ্যাকসিনেশন পুরোটাই বিজ্ঞাননির্ভর পদ্ধতিতে হয়েছে। সারা দেশের নানা প্রান্তে সময়মতো ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া সেইজন্যই সম্ভব হয়েছে।
কোন রাজ্যকে কত ভ্যাকসিন কখন পৌঁছতে হবে, কোন এলাকায় বেশি দরকার– এগুলি সবই বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ঠিক করা হয়েছে। এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজও সহজ হয়েছে।
আজ আমরা আশার আলো দেখছি। ইতিবাচকতা দেখছি চতুর্দিকে। বিশেষজ্ঞরা ভারতের সামগ্রিক অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট। দেশের বিভিন্ন সংস্থায় রেকর্ড লগ্নি আসছে। চাকরির সুযোগ বাড়ছে।
হাউসিং সেক্টরে অনেক রকম কাজ হচ্ছে, নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভারতের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে, মজবুত হচ্ছে এই করোনা আবহেও।
ভ্যাকসিনের পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়নও মজবুত হচ্ছে। আরও বেশি করে হবে আগামীতে।
আজ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র শক্তি সারা বিশ্ব দেখছে। ছোট, বড় যে জিনিসই ভারত বানাক, তা কেনার জন্য জোর দিতে হবে। এটার জন্য সকলের প্রয়াস দরকার।
যেমন ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ একটি আন্দোলন, তেমনই ‘ভোকাল ফর লোকাল’ আমাদের অভ্যেস করতে হবে। সমবেত চেষ্টায় এটা সম্ভব হবে।
আমরা ১০০ কোটির ভ্যাকসিনের মাধ্যমে একটা বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। আমার দেশের ভ্যাকসিন যদি আমাদের সুরক্ষা দিতে পারে, তাহলে আমাদের দেশের জিনিসও সেরাই হবে।
দীপাবলির সময়ে বাজারে বিক্রিবাটা বেড়ে যায়। এবার ছোট ছোট প্রায় সমস্ত দোকানদারের আশার আলো বেড়েছে এই ভ্যাকসিনেশনের জন্য।
আমাদের এই সাফল্য আমাদের এক নতুন আত্মবিশ্বাস জোগাল। আমরা বলতে পারি, দেশ এখন বড় স্বপ্ন দেখা এবং তা পূরণ করতে সক্ষম।
কিন্তু তাই বলে আমাদের নিয়ম ভাঙলে চলবে না। রক্ষাকবচ যতই দৃঢ় হোক, আধুনিক হোক, যুদ্ধ চলা অবস্থায় অস্ত্র নামানো যাবে না হাত থেকে। তাই উৎসব পালন করুন পুরোপুরি সতর্কতার সঙ্গেই।
মাস্ক পরুন। অনেক রকম ডিজাইনার মাস্ক এসেছে। আমাদের যেমন জুতো পরে বাইরে যাওয়ার অভ্যেস, তেমনই মাস্ক পরে বেরোনোর অভ্যেস করতে হবে।
যাঁরা ভ্যাকসিন নেননি তাঁরা নিয়ে নিন, যাঁরা নিয়েছেন অন্যদের নিতে বলুন। তাহলেই আমরা করোনাকে দ্রুত হারাতে পারব। আপনাদের উৎসবের শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ।