PHOTO STORY : ছবির গল্প
” রাস্তাঘাটে এমন অনেক দৃশ্য চোখে পড়ে যার মধ্যে কোনও একটা গল্প লুকিয়ে থাকে। তা আনন্দ বা কষ্টেরও হতে পারে। আবার অনুপ্রেরণা বা সাফল্যেরও। আপনার দূরদর্শিতাই বলে দেবে আপনি এক জন ভাল ফোটোগ্রাফার। একটা ছবির মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক না-বলা কথা। একটা ছবি হয়ে উঠতে পারে যোগাযোগের মাধ্যম। একটা মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি হয়ে অনন্তের দিকে ধাবিত হয়। ক্যামেরা বা লেন্স উন্নতমানের হলেই যে ভাল ছবি আসবে, তা নয়। ফোটোগ্রাফিক সেন্স থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। একটা দৃশ্য নানা দিক থেকে নানারকম দেখায়। আপনার দেখার চোখই বলে দেবে ঠিক কোন জায়গা থেকে সেরা ছবিটি উঠবে। যাঁরা মুহূর্তকে লেন্সবন্দি করতে ভালবাসেন, তাঁরা নিশ্চয়ই চান, তাঁদের তোলা ছবিটি হয়ে উঠুক পিকচার পারফেক্ট। সেই সমস্ত ফোটোগ্রাফার দের জন্য দেশের সময়- এর উপস্থাপনা “ছবির গল্প”।” তাহলে আর অপেক্ষা কেন! আপনার তোলা প্রিয় ছবিগুলির সঙ্গে গল্প লিখে পাঠিয়ে দিন ” দেশের সময়” এর দফতরে : e-mail- deshersamay@deshersamay@gmail
আকাশ জুরে ঘন ধূসর মেঘমালা… একলা মন জুরে সেই ফেলে আসা দিন… “মেঘ পিওনের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা…”। মেঘেদের সেই মন খারাপ বুঝি বৃষ্টি অশ্রু হয়ে ঝরে পরে…। আমি দেখি দূরের সবুজ কি মহানন্দে ভিজছে, তার সাখাপ্রশাখ বিস্তার করে মাথা দুলিয়ে। পাখি গুলো সব কেমন জোড়ায় জোড়ায় বর্ষার তান শুনছে। আচ্ছা ওদের কি অভিমান হয়? বিরহ কিংবা বিচ্ছেদ?
কার্নিশ থেকে টুপ টাপ জল ঝরছে। অনেক ভাবনা ভীড় করে আসে আমার মন আকাশ জুড়ে। ওদের উড়ে যাওয়া, ওদের ভাগ করে খাওয়া, ওদের আদরের সাক্ষী থাকি আমি। ওরা কি বুঝতে পারে কেউ ওদের নিরীক্ষণ করছে! আমাদের চার পাশে কতো কীই তো ঘটে যায়, আমরা কি সব খবর রাখি?
হারিয়ে যায় সেই সব মুহূর্তরা চোখের আড়ালে। বর্ষার একটা খুব প্রিয় গান মনে পরে রবিঠাকুরের “মন মোর মেঘের সঙ্গী” সত্যি উড়ে যায় দেশ কাল সীমানার গন্ডি পেরিয়ে মহাসাগর… মহাদেশ…।
প্রতি টা জলবিন্দু কচুপাতায় হিরের মতো প্রভা দেয়। দমকা বাতাসে বৃষ্টির অবাধ্য ফোঁটা আমার গায়ে এসে লাগে। আচ্ছা এই বৃষ্টি তে ওই মানুষ গুলো কোথায় আশ্রয় নিয়েছে যাদের ঠিকানা ফুটপাথ? রাস্তায় হাটুজল পেরিয়ে কতো মানুষ তো রাস্তায় তাদের জরুরি প্রয়োজনে। বর্ষা তো শুধু রোমান্টিক নয়, বর্ষা দুঃখেরও।
আমরা নাগরিক জীবনে যতটুকু দেখতে পাই তার থেকে না দেখা টা ঢের বেশি। কাদা মাখা গ্রামের মেঠো পথ, চাষী বউয়ের জমিতে ধান রোযা, বাড়ির গরুটা অঝোর ধারায় ভিজে যায় উঠানে। কথা বলার চেয়ে নীরবতা অনেক বেশি সবাক। যেমন ঘন অমানিশার একটা নিজস্ব আলো থাকে যেমনই নীরবতার নিজস্ব ভাষা আছে। অনেকের মধ্যে থেকে যেমন একলা হওয়া যায়, তেমনই একলা থেকেও প্রকৃতি নিবিড় সঙ্গী হয়। মন বলল চলো ফিরে যাই সেই ছেলেবেলায়… যখন ছিল না ভাবনা মনখারাপ একাকীত্ব দুশ্চিন্তা… মুক্ত ডানা মেলার পরিসর ছিল।
জলে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে ছেয়ে থাকা… সে কতদূর চলে যাচ্ছে, চোখের আড়ালে। হয়তো বা অবচেতন মন চাইছিল জীর্ণ গ্লানি মুক্ত হতে। ভিজতে চাইলো সে সেই বারিধারায়। মন না কি শরীর… তা তো ঠিক জানিনা… এক ছুটে গেলাম ছাদে। অঝোর ধারে স্নাত হলাম আমি… বৃষ্টি ছুঁয়ে গেল আমার ওষ্ঠ গণ্ড চিবুক।
অনেক আনুভুতি উপলব্ধি রা আমাকে আচ্ছন্ন করে দিলো… ঠিক কতক্ষন জানিনা… যখন সম্বিত ফিরল অনুভব করলাম আমার দুচোখেও বৃষ্টিধারা… নিজেকেই প্রশ্ন করলাম এই অশ্রু আনন্দের না কি দুঃখের্, উত্তর পেলাম না, বৃষ্টি ভিজে কাঁদলে কেউ বুঝতে পারেনা আলাদা করে চোখের জল কে।
শরীর মন জুড়ে এক নৈস্বগিক অনুভূতি। বৃষ্টির আদর মাখা স্পর্শ আমার সারা শরীর জুরে… তৃপ্ত আমি সিক্ত আমি। স্পর্শকাতর মন আবেগে মাখামাখি… “আমি ভিজতে চাই আমি ভিজতে চাই বারবার… সুখে যন্ত্রণায় এ ঠিকানায় বাঁচবার”………………।