দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ পদের দৌড় শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলে। পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতি কে হবেন,জেলা পরিষদের সভাধিপতি কে হবেন, কর্মাধ্যক্ষ কারা হবেন তা নিয়ে ইতি মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় তাঁদের ছবি চোখে পড়তে শুরু করেছে ৷
বিজয়ী প্রার্থীদের অনেকেই সোশাল মিডিয়ায় নিজের অনুগামীদের দিয়ে নাম ভাসিয়ে দিচ্ছেন। কেউকেউ আবার ফোন করতে শুরু করে দিয়েছেন, রাজ্য নেতা ও জেলা পর্যবেক্ষকদের।
তবে বাস্তব চিত্রটা কিন্তু ভিন্ন ৷ ভোট মিটলেও পঞ্চায়েত সমিতি গঠন এবং জেলা পরিষদে শপথ গ্রহণ এখনই হচ্ছে না। তৃণমূলসূত্রের খবর, অন্তত দু’মাসের অপেক্ষা করতে হবে ।
কারণ , অধিকাংশ জেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। যেমন পূর্ব বর্ধমান জেলায় জেলা পরিষদের শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর।
অর্থাৎ বর্তমান বোর্ড পদাধিকারিদের মেয়াদ শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। তার আগে বোর্ড ভেঙে শপথ নেওয়াতে গেলে আদালতে মামলা হতে পারে। একই ভাবে বাঁকুড়া জেলায় জেলা পরিষদের শপথ সম্ভবত ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর হয়েছিল। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় জেলা পরিষদে শপথ গ্রহণ হয়েছিল আরও পরে।
আবার পঞ্চায়েত সমিতি গঠনও একই শর্তে করতে হবে। আগের সমিতির পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নতুন সমিতি গঠন করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া প্রতিটি জেলা ধরে বহু পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা অনেক। সব কটি সমিতি একদিনে গঠিত হবে না। সেক্ষেত্রেও সময় লাগবে।
কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বা অন্য পদের জন্য কারা দৌত্য শুরু করে দিয়েছেন, তার উপরেও নজর রাখছে দল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েতের উপর এবার কেন্দ্রীয় ভাবে নজর রাখা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবার পরিচ্ছন্ন ও গ্রহণযোগ্য মুখ খুঁজেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ স্তরে কিছু নেতা ও পদাধিকারীর কারণে স্থানীয় স্তরে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অর্থাৎ ব্যক্তির উপর রাগ গিয়ে পড়ছে মানুষের। তা দলের নির্বাচনী সম্ভাবনার উপর প্রভাব ফেলছে। তাই এবার পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের পদাধিকারী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দল অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে৷
ওই প্রবীণ নেতার কথায়, আপাতত জেলা পরিষদ গঠন নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা চলছে না। এখন দলের পুরো ফোকাস রয়েছে ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে।
গ্রাম বাংলায় অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত এবারও তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। সব জেলা পরিষদেই বিপুল ব্যবধানে জিতেছে জোড়াফুল। এবার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে অনিবার্যভাবে সেই ‘সাফল্যের’ উদযাপন হবে। অনেকের মতে, ওই সভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময়ে তৃণমূল কর্মীরা খুবই উজ্জীবিত থাকেন।
এবার আরও বেশি জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, যেহেতু জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির গঠন এখনও হয়নি, তাই অনেকেই এবার নিজের প্রভাব দেখাতে প্রচুর লোক নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। তার সমষ্টিগত ফলাফলে এবার প্রচুর ভিড় হতে পারে ধর্মতলার সভায় ৷