দেশের সময়, হাবড়া: বিরোধী দলের প্রার্থীদের বাধাপ্রদান, এমনকি মারধর-হমকির খবর উঠে আসছে একাধিক জেলা থেকে। তবে, তার মাঝেই ‘ভুল করলে মানুষের পায়ে ধরে ক্ষমা’ চাওয়ার নিদান দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শাসন ক্ষমতায় থেকে অনেক সময়ই ভুল-ভ্রান্তি হচ্ছে, সেক্ষেত্রে জনসাধারণের দরবারে ক্ষমা চাওয়ার জন্য কর্মীদের নিদান দিলেন তিনি।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে বিভিন্ন প্রান্তে রাজনৈতিক হিংসা মারামারির ঘটনার ছবি যেখানে উঠে আসছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিরোধীদের নানা অভিযোগের মাঝে মানুষের উপরই আস্থা রাখছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এমনটাই মনে করছেন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী।
শুক্রবার হাবড়া এলাকায় দলীয় সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন বিধায়ক। ঠিক হয় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের রণকৌশল। তারপরই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণও করেন। তিনি বলেন, “সারা বাংলায় ৯০% আসন দখল করার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে থাকবে।” জেলায় ভালো ফলের ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করেন রাজ্য সরকারের মন্ত্রী।
চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “বিরোধীরা এখন ছন্নছাড়া। ওদের কিছু নেই। বিজেপি, সিপিএমকে মাইক্রোস্কোপে দেখতে হবে।” এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় থাকছে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ প্রসঙ্গ উঠতেই জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “আমরা নির্বাচনে কোনও অশান্তি হতে দেব না। এত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তা দেখে বিজেপি, সিপিএমের লোকেরা চমকে যাবে। মানুষ মানুষের অধিকারটা পাবে। আমরা মনে করি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তৃণমূল জিতবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আসুক না। বাংলার ৯০ শতাংশ আসন তৃণমূল দখল করবে।”
তারপরই তাঁর গলায় শোনা যায় সংশোধনের বার্তা। স্পষ্ট বলছেন, “আমরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। মানুষের অভিযোগ শুনছি। যদি ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমা চেয়ে নেব। আমাদের কোনও কর্মী যদি মানুষকে আঘাত করে থাকে তাহলে আমরা মানুষের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেব।” যদিও তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে মাথানত করতে রাজি নন। মাথানত হলে তা হবে একমাত্র মানুষের কাছেই। জ্যোতিপ্রিয় বলছেন, “মাথা নত করলে মানুষের কাছে করব।
কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে করব না। আমাদের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমাদের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” প্রসঙ্গত, আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে একদফায় হতে চলেছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১১ জুলাই পঞ্চায়েত ফলপ্রকাশ। এদিকে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে শাসক থেকে বিরোধী সব পক্ষই। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই চলছিল দড়ি টানাটানি। জল গড়িয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে ৷
প্রসঙ্গত, শাসক দলের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ উঠে আসছে প্রতিদিনই। এমনকি যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন সংগঠিত করার ব্যবস্থা হচ্ছে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করানোর ব্যাপারে মত দেন বিরোধী দলনেতা।