শেষমেশ বালুচিস্তানের জাফফর এক্সপ্রেসে হামলা চালিয়ে ট্রেন ছিনতাইয়ের জন্য ভারতকেই দায়ী করল পাকিস্তান। শুক্রবার পাকিস্তান দাবি করে, আফগানিস্তানের কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ট্রেন ছিনতাই করে জঙ্গিরা। যে পরিকল্পনার নাটের গুরু ভারত সরকার। অন্যদিকে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি ২১৪ জন পণবন্দিকে হত্যার দাবি জানিয়ে হুমকি দিয়ে বলেছে, এরপরের লক্ষ্য ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের এই দাবির সঙ্গে সঙ্গে নয়াদিল্লি অবশ্য ইসলামাবাদের অভিযোগ নস্যাৎ করে দেয়। ভারত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে যে, গোটা দুনিয়া জানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর কোনটা! এনিয়ে ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালে কেউ বিশ্বাস করবে না।
গত শুক্রবার ইসলামাবাদে পাক সেনাবাহিনীর মিডিয়া বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, আমরা স্পষ্ট টের পেয়েছি যে, বালুচিস্তানের জঙ্গি হামলা এবং এর আগের হিংসাত্মক ঘটনাগুলির প্রধান কারিগর হল আমাদের পূর্ব-প্রতিবেশী ভারত। চৌধুরি একইসঙ্গে বালুচ হামলা নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যেভাবে প্রচার করা হয়েছে এবং বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির পাঠানো ভিডিও দেখানো হয়েছে, তারও দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনার এআই ইমেজ ও পুরনো ঘটনার ছবি দেখানো হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের।
এই দাবির পরেই ভারতের বিদেশ মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জোরাল ভাষায় জানিয়ে দেন, গোটা বিশ্ব জানে সন্ত্রাসবাদের মূল কেন্দ্র কোথায়! পাকিস্তানের উচিত হয়নি আগে নিজের দিকে না তাকিয়ে অন্যের দিকে আঙুল তোলা। নিজের ব্যর্থতা ও সমস্যা ঢাকতে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অভ্যাস ত্যাগ করুক পাকিস্তান।
এদিকে, পাকিস্তান অপারেশন বোলান গ্রিন নামে উদ্ধারকারী অভিযান শেষ করার দাবি জানালেও বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এ ধরনের কোনও অভিযানের কথা নাকচ করে দিয়েছে। উপরন্তু, তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তান তাদের ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা উপেক্ষা করায় তারা পণবন্দি ২১৪ জনকেই মেরে দিয়েছে। সংগঠনটি একইসঙ্গে পাক বাহিনীর হাতে নিহত ১২ জনকে শহিদের মর্যাদা দিয়ে শেষকৃত্য করার দাবি জানিয়েছে।
বিএলএ-র দাবি, পাকিস্তান মিথ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছে। আমরা ওদের ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা কথা কানে তোলেনি। পাকিস্তানি এসএসজি কমান্ডো উদ্ধারের চেষ্টা করলেও টানা লড়াইয়ে ওরা হেরে গিয়েছে। তারপরেই যে যাত্রীরা হেফাজতে ছিল, তাদের মেরে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।