দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বেঙ্গালুরুতে বিরোধী শিবিরের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন মমতা ৷ সোমবার রাতে বিরোধী শিবিরের নৈশভোজে দেখা গেল এক ‘শক্তিশালী ‘ছবি ৷ দিল্লির মসনদ দখলের লড়াই যত এগিয়ে আসছে, ততই কাছে আসছেন বিরোধীরা।
এদিন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার আমন্ত্রণে বেঙ্গালুরুতে নৈশভোজে যোগ দিল ২৬টি দলের নেতা-নেত্রীরা। বিজেপি বিরোধী দলগুলির এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
নৈশভোজের আসরে দেখা গেল কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে উদ্ধব ঠাকরে, অখিলেশ যাদবরা। বৈঠকে যে বিরোধীদের ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে, সে কথাই শোনা গেল নেতা-নেত্রীদের মুখে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে মমতা বলেন, ‘মিটিং বহুত আচ্ছা রাহা (খুব ভাল বৈঠক হয়েছে)।’
UNITED WE STAND!
— Congress (@INCIndia) July 17, 2023
📍 Bengaluru, Karnataka pic.twitter.com/qw95lfotLx
চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বিরোধীদের একজোট করার চেষ্টা যাঁরা শুরু করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম ছিল মমতা। বিজেপি বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে দেখা গেছে তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এই ‘মহাজোট’-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল।
শুধু মমতা নন, বিরোধী ঐক্য যে ক্রমশ জোরদার হচ্ছে, সে কথা উল্লেখ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও। বৈঠক শেষে টুইটে তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক ন্যয়, সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন আর দেশের উন্নতির স্বার্থে সম-মনোভাবাপন্ন দলগুলি একজোট হয়ে কাজ করবে। সংবিধান মেনে যাতে দেশ চালানো হয়, তার পক্ষেই বিরোধী জোটের এই লড়াই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,২৩ জুন পাটনায় বিরোধী বৈঠকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। তবে সেই বৈঠকে ছিলেন না সনিয়া। এসেছিলেন রাহুল গান্ধী। ওই বৈঠকের যত ছবি সামনে এসেছে, প্রায় সব ছবিতেই দেখা গেছে রাহুলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বই রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেঙ্গালুরুর বৈঠকে প্রথম দিনেই সেই দূরত্ব উধাও। কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করা ছবিতে দেখা গেছে, সনিয়া-মমতা পাশাপাশি।
সনিয়ার সঙ্গে মমতার সম্পর্ক খুবই ভাল। রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকলেও কেউ কেউ কাউকেই কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। ২০১১ সালে যখন ভোটে জিতে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠন করলেন, তখনও কংগ্রেস ছিল তাঁর সঙ্গেই। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি পাল্টেছে। বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে এখন আর ‘সুসম্পর্ক’ নেই তৃণমূলের। তাতে কি, সনিয়ার সঙ্গে মমতার সখ্যতা যে এখনও অটুট তা এই ছবি দেখলেই বোঝা যায়।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলায় তুমুল অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় দেখা গেছে, বাম-কংগ্রেস এক জোটে শাসক দল তৃণমূলকে আক্রমণ করছে। পাল্টা তৃণমূলও ছেড়ে কথা বলেনি। কিন্তু বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি বিরোধী বৈঠকে কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএম পাশাপাশি।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, এম কে স্টালিন, অরবিন্দ কেজরীবাল, নীতীশ কুমার, লালু প্রসাদ যাদব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। বৈঠকের শুরুটা যে খুব ভাল হয়েছে, সে কথা জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা বিকে হরিপ্রসাদ।
এদিকে, এদিনে বৈঠককে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য উল্লেখ করেছেন, দিল্লি যখন জলে ভাসছে, তখন বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন অরবিন্দ কেজরীবাল আর পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যখন তলানিতে এসে ঠেকেছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঙ্গালুরু যাচ্ছে। তবে সোমবারেই শেষ নয়, মঙ্গলবারও বৈঠকে বসবেন বিরোধীরা।