Omicron India:দেশে বাড়ছে ওমিক্রন আতঙ্ক, রাজস্থানে ৯, মহারাষ্ট্রে ৭ আক্রান্তের সংখ্যা ৫ থেকে একলাফে ২১

0
490

দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার নতুন প্রজাতি বি.১.১.৫২৯। রবিবার রাজস্থানের জয়পুরে ৯’জন এবং মহারাষ্ট্রে ৭ জন করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলল। প্রত্যেকেই করোনার নয়া রূপ, ওমিক্রনে আক্রান্ত। সূত্রের খবর, এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের চার জন বিদেশ থেকে ফিরেছেন। বাকি তিন জন ওই চার জনের ঘনিষ্ঠ। এর ফলে মহারাষ্ট্রে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা হল আট। দেশে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ২১। মহারাষ্ট্রে আক্রান্তরা সকলেই পুণের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

অন্যদিকে,রাজস্থানের জয়পুরে এবার করোনার সব থেকে ভয়ানক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে (Omicron) আক্রান্ত ৯ জনের খোঁজ পাওয়া গেল। এই ৯ জন একই পরিবারের বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের চার সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে এসেছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। আক্রান্ত ৯ জনের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। জয়পুরে রবিবার ৯ জনের শরীরে করোনার ওমিক্রন রূপের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে বলে রাজস্থানের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।রাজস্থানের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, শিশু দুটির বয়স যথাক্রমে ৭ ও ১২।

আপাতত ওই পরিবারের সদস্যদের রাজস্থান ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস-এ ভর্তি করা হয়েছে। ওই পরিবারের সদস্যরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পরই তাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তাঁদের স্যাম্পেলের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এর পরই জানা যায়, তাঁরা ওমিক্রন আক্রান্ত। ওই পরিবারের ৯ জনের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও আলাদা করে রাখা হয়েছে। রাজস্থানের স্বাস্থ্য সচিব বৈভব গালরিয়া জানিয়েছেন, ওই পরিবারটি সিকর জেলার অজিতগড়ের। তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও ট্রেস করা গিয়েছে। তাঁদেরও টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

২৪ নভেম্বর নাইজেরিয়ার লাগোস থেকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন ৪৪ বছরের এক মহিলা। ওই মহিলার সঙ্গে আসেন তাঁর দুই কন্যা। পুণের ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অব ভাইরোলজি জানায়, তিন জনই করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্ত। ওই মহিলার ৪৫ বছরের ভাই, ভাইয়ের দুই মেয়েও করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পাশাপাশি সদ্য ফিনল্যান্ড ভ্রমণ সেরে পুণেয় ফেরা ৪৭ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তিও করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্ত হয়েছেন। ঘটনাচক্রে প্রাপ্তবয়স্ক চার জনেরই জোড়া টিকা নেওয়া ছিল। বাকি তিন জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় টিকাকরণের আওতায় আসেননি।

অন্য দিকে রাজধানী দিল্লিতেও করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি তানজানিয়া থেকে ক’দিন আগেই দিল্লিতে এসেছেন। তার পরই তিনি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্ত।’’ এর আগে মহারাষ্ট্রের ডোম্বিভলি, গুজরাতে এক জন এবং কর্নাটকে দু’জন করোনার ওমিক্রন রূপে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল।

শনিবার সন্ধেয় মহারাষ্ট্রের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। রবিবার আরও ৭ জন ওমিক্রন আক্রান্তের মিলল হদিশ। এর মধ্যে ৬ জন মহারাষ্ট্রের পিমপ্রি চিঞ্চওয়াদের বাসিন্দা। একজন থাকেন পুনেতে। ছয় জনের মধ্যে এক মহিলা ও তাঁর দুই মেয়ে নাইজেরিয়া থেকে মুম্বই ফিরেছেন। ওই মহিলার সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁর এক ভাই ও দুই সন্তান। মোট ছয় জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

জিনোম সিকোয়েন্সিং করার পর জানা যায়, তাঁরা সকলেই ওমিক্রন-এ আক্রান্ত। আরও এক ব্যক্তি ফিনল্যান্ড থেকে মুম্বইয়ে ফিরেছেন। ওই ব্যক্তির শরীরেও ওমিক্রন-এর খোঁজ মিলেছে। রবিবার সকালেই কর্নাটক, গুজরাত, মহারাষ্ট্রের পর পঞ্চম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মেলে দিল্লিতে। ৩৭ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি তানজানিয়া থেকে দিল্লিতে আসেন।

বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁর। ওই ব্যক্তির শরীরে মৃদু উপসর্গ ছিল এবং করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া ছিল।  চলতি সপ্তাহেই বেঙ্গালুরুতে দুইজন ওমিক্রন আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। একজন বেঙ্গালুরুর স্বাস্থ্য কর্মী, অন্য একজন বিদেশি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পা রাখার পর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েন। তিনি যদিও ২৭ নভেম্বর বেঙ্গালুরু ছেড়ে দুবাই পাড়ি দিয়েছেন।

তাছাড়াও গুজরাতের জামনগরে জিম্বাবোয়ে ফেরত এক ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়ে। মহারাষ্ট্রের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত ৩৩ বছরের এক ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেই ফিরেছেন। করোনার দুটি টিকা নেওয়া ছিল তাঁরও। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম করোনার এই নতুন প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। একলাফে সেই দেশে করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ায় একে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘উদ্বেগের কারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। 

স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে ইতিমধ্যে দেশের বহু মানুষ মাস্ক পরা ছেড়েছেন। কোভিড বিধির পালন হচ্ছে না বহু জায়গায়। এমনটা চলতে থাকলে যে বড় বিপদ আসতে পারে, তা আন্দাজ করাই যায়। ইতিমধ্যে কর্ণাটক, গুজরাট, রাজস্থান, মুম্বই, দিল্লিতে ওমিক্রনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

এদিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক করোনা আক্রান্ত বেড়ে আবার ১০০ পার, রাজ্যে নতুন সংক্রমণ ৬২০

রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬২০ জন। কলকাতায় দৈনিক আক্রান্ত সামান্য কমে হল ১৭৭। বহু দিন পর শনিবার উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ১০০-র নীচে নেমেছিল। রবিবার তা আবার বেড়ে হল ১০৭। কিছুটা বাড়ল নদিয়ায়। তবে কমল কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ওই তিন জেলায় নতুন আক্রান্ত যথাক্রমে ২৯, ৪৮ এবং ৪৭। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙেও দৈনিক সংক্রমণ অনেকটাই কমে হল ১৯।

রবিবার ধরে টানা পাঁচ দিন রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছ’শোর ঘরেই রয়েছে। শনিবারের তুলনায় কলকাতায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা কমলেও উত্তর ২৪ পরগনায় তা বেড়ে আবার ১০০ ছাড়াল। তবে দৈনিক সংক্রমণের হার একই রইল। কমল মৃত্যুও।

শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিডে মারা গিয়েছেন ১০। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় চার জন, হুগলিতে তিন জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দু’জন এবং কলকাতায় এক জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১৯ হাজার ৫৪৪ জন।

রবিবার রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার হল ১.৫৪ শতাংশ। কোভিড পরীক্ষায় হয়েছে ৪০ হাজার ২৩১ জনের। এ দিন সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন ৬২৭ জন। বাংলায় বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়াল সাত হাজার ৬৩৯।

রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে টিকা পেয়েছেন তিন লক্ষ ৬১ হাজার ৮১২ জন। এখনও পর্যন্ত মোট টিকাপ্রাপ্তি ন’কোটি ৪৫ লক্ষ ৪২ হাজার ১০৮।

Previous articleথ্যালাসেমিয়া সচেতনতায় সেরামের উদ্যোগে বৃষ্টি ভেজা কলকাতায় র‍্যালি
Next articleCyclone Jawad: নিম্নচাপ হয়েই বাংলায় প্রবেশ করল ‘জওয়াদ’, রাজ্যে কবে স্থায়ীভাবে পড়বে শীত?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here