দেশের সময় , কলকাতা : পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে বুধবারও উত্তপ্ত ভাঙড় ৷ সকাল থেকে তুমুল বোমাবাজি, সংঘর্ষ চলেছে।
এদিকে এদিন বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ দেখা যায় ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি সটান পৌঁছে গিয়েছেন নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে রাজ্যের সচিবালয়ে পৌঁছেছিলেন তিনি। কিন্তু মমতা সময় না দেওয়ায় না দেখা করেই নবান্ন ছাড়তে হল নওসাদকে।
নবান্ন থেকে বেরিয়ে নওসাদ বলেন, ‘আজকেও সকাল থেকে আরাবুল ইসলাম, শওকত মোল্লারা গন্ডগোল করেছেন। আমি রাজ্যের অভিভাবিকাকে জানাতে এসেছিলাম। নির্বাচন কমিশন ভোট পরিচালনা করছে ঠিকই। কিন্তু তাদের ভরসা পুলিশ। তাই আমি পুলিশের বসকেই বলতে এসেছিলাম ভাঙড়ের কথা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর হয়তো ব্যস্ততা রয়েছে। তাই আমায় তিনি সময় দিতে পারেননি।’
নওশাদ জানান, জনপ্রতিনিধি হিসাবে ভাঙড়ের সমস্যার দিকে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাই নবান্নে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভাঙড়ের বিডিও অফিস ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ঘিরে রাখা হয়েছে। বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজ্যের অভিভাবিকা। তাই আমার মনে হয়েছে, ওঁকে জানানো উচিত। তাই জানাতে এসেছিলাম। তার আগে দেখা করব জানিয়ে মেলও করেছিলাম। কিন্তু আমার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সময় হয়ে ওঠেনি। আজ আবেদন জানিয়ে গেলে হয়তো আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেখা করতে পারব। কিন্তু আগামিকালই মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ হয়ে যাবে। পরে কখনও প্রয়োজন হলে আবার আসব।’’
ভাঙড়ের বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘আমি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। যাতে তাঁর নজর আলাদা করে ভাঙড়ের দিকে থাকে। আমি জনপ্রতিনিধি। সাধারণ মানুষ ভাঙড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁরা যে দলেরই হন না কেন। আমি মানুষের জন্য ছুটে এসেছি। ভাঙড়ে যিনি তৃণমূল করেন আমি তাঁরও জনপ্রতিনিধি, যিনি বিজেপি করেন তাঁরও জনপ্রতিনিধি, যিনি আইএসএফ বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, আমি প্রত্যেকের জনপ্রতিনিধি। সকলে যাতে সুরক্ষিত থাকেন, নিরাপদে যাতে সকলে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, যাতে নির্বিঘ্নে ভোট হয়, তা নিশ্চিত করতে আমি এখানে এসেছিলাম। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেই কমিশন পুলিশের উপর আস্থা রাখছে এবং পুলিশের শীর্ষে আছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁর কাছে আমি এ সব জানাতে এসেছিলাম।’’
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, নওসাদ যে পরিপক্কতা নিয়ে রাজনীতি করেন তাতে এটা তাঁর অজানা নয় যে নবান্নে গেলেই মুখ্যমন্ত্রীর দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এই যাওয়াটার মধ্যে দিয়ে তাঁর কর্মী বাহিনী ও সামগ্রিকভাবে বাংলার রাজনীতিতে একটা ধারণা তৈরি করতেই তিনি নবান্নে পৌঁছেছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে বোঝাতে চাইলেন, শান্তির আর্জি নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসেছিলেন কিন্তু তাঁকে সময় দেওয়া হয়নি।