দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার চার পুরনিগমের ফলাফল ঘোষণা। ১২ ফেব্রুয়ারি পুর নির্বাচন হয়েছে বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি পুরনিগমে। আজ এই চার পুরনিগমেই চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা। এই চার পুরনিগমে পুরবোর্ড গঠনে কোন দল অগ্রাধিকার পাবে তা চূড়ান্ত হবে ভোট গণনার পর।
সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। ৪১ টি ওয়ার্ড সমন্বিত বিধাননগর পুরনিগমে প্রার্থী ২০৩ জন। এই পুরনিগমে ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার। বিধাননগরের পাশাপাশি ভোট গণনা রয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগমেও। ৪৭ টি ওয়ার্ড সমন্বিত শিলিগুড়ি পুরনিগমে ভোটার সংখ্যা ৪ ক্ষ ২ হাজার। ২০০ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ আজ। কড়া নিরপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ভোটগণনা হবে আসানসোল এবং চন্দননগর পুরনিগমেও।
শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের দুই দলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে একজন জিতলেন, একজন হারলেন। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতলেন তৃণমূলের গৌতম দেব। বিধানসভার পর পাড়ার ভোটেও হারলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তিনি শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অশোক ভট্টাচার্যকে হারিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের আলম খান। এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়িতে ৪৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল, বামেরা পেয়েছে ১৮ শতাংশ ভোট, বিজেপি পেয়েছে ১৪ শতাংশ ভোট আর কংগ্রেসের খাতায় ১১ শতাংশ ভোট। ২০১৫ সালে তৃণমূলের প্রতাপের মাঝেও শিলিগুড়ি পুরনিগম ধরে রেখেছিল সিপিএম। ফলে এই পুরনিগমেরকে ঘিরে অনেক আশায় ছিল লাল শিবির।
সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। সাড়ে দশটার সময় ৩১টি ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল (এর মধ্যে কয়েকটি জয়ী ঘোষিত হয়েছে)। দুটি করে ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে সিপিএম ও বিজেপি। একটিতে এগিয়ে কংগ্রেস।
যা ছবি তাতে শিলিগুড়ি দখল করা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে তৃণমূল। অনেকের মতে, সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে পরবর্তী মেয়রের নামও ঘোষণা করে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল-সহ রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের বক্তব্য, পরবর্তী মেয়র প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবই।
প্রসঙ্গত, গতকালই অশোক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ‘সব বুথে বামেদের পোলিং এজেন্ট বসেছেন। কোনও জায়গাতেই গোলমালের কোনও খবর নেই। সবাই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন।’ শনিবারই ভোট দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিল অশোক ভট্টাচার্য। সম্প্রতি স্ত্রীকে হারিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এর আগে কোনও দিন আমি একা ভোট দিতে যাইনি।’ শিলিগুড়ি পুরসভায় অশোক ভট্টাচার্যের মন্ত্রেই ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিল সিপিএম। ২০১৫ সালেও শিলিগুড়িতে জয় পায় বামেরা। যার কারিগর ছিলেন খোদ অশোক ভট্টাচার্য।
সেইসঙ্গে অশোকবাবুকেও রাজনৈতিক জীবনের সায়াহ্নে এসে পাড়ার ভোটে হারতে হল। যা তাঁর পক্ষে অস্বস্তির বলেই মত অনেকের। ভোট ঘোষণার আগে অশোকবাবু জানিয়েছিলেন তিনি আর পুরনির্বাচনে লড়বেন না। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অনুরোধ ও পার্টির চাপে শএষ পর্যন্ত লড়তেই হয় অশোক ভট্টচার্যকে। কিন্তু পাড়ার ভোটেও হারতে হল তাঁকে।