দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ : একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই একের পর এক চমক দিয়েছে বাম শিবির। কখনও মুখ বদলে কখনও সুর বদলে! বিধানসভা নির্বাচনে জনপ্রিয় ‘টুম্পা সোনা’ গানের রিমেকে নির্বাচনী প্রচারের সুর বেঁধে দিয়েছিল বাম শিবির।
ওয়াই জেনারেশনের কথা মাথায় রেখেই কার্যত নতুনভাবে দেখা গিয়েছিল নেতৃত্বকে। সেই জনপ্রিয় রিমেকের সঙ্গে ভাল সঙ্গত দিয়েছিল সেইমতো গ্রাফিক্স। পুরভোটেও একই পদক্ষেপ করল বাম শিবির। তবে এ বার ‘টুম্পা সোনা’ নয়, অশোকনগরে প্রচারের জন্য দক্ষিণী ছবি ‘পুষ্পা’-র জনপ্রিয় গান ‘ও আন্তেভা’-কেই বেছে নিল বাম শিবির। ‘ও আন্তেভা’-র সুরেই তৈরি সিপিএমের ‘থিম সং’।
https://fb.watch/b5ALzwMH2Z/
CPIM Viral Parody ‘Kamala’: ইসলামপুর পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে সিপিএম সমর্থকেরা প্যারোডি বানালো ‘কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া’। বৃহস্পতিবার এই গান প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ইসলামপুর জুড়ে।
https://fb.watch/b5B24p3YtS/
ব্রিগেডে ‘টুম্পা’ থেকে শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ইসলামপুরে ‘কমলা’য় এসে দাঁড়ালো। ইসলামপুর পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে সিপিএম সমর্থকেরা প্যারোডি বানালো ‘কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া’। বৃহস্পতিবার এই গান প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ইসলামপুর জুড়ে।
নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের সমর্থনে এই প্রচার চালানো হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। যেই গানের ভিডিও মূলত সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা হবে। একই সঙ্গে গানটির অডিও বিভিন্ন জায়গায় চালানোর পরিকল্পনা করে ফেলেছে দল। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন এই রকমের প্রচারে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে। কমবয়সীদের মধ্যে সহজেই নিজেদের কথা নিয়ে যাওয়া যাবে। সিপিএমের ইসলামপুর পুরসভা নির্বাচনী প্রচারের সোশ্যাল মিডিয়া আহ্বায়ক গৌতম বর্মণ বলেন, “সময়ের সাথে সাথে প্রচারের ধরনও বদলাতে হবে। মানুষের হাতে সময় কম। ইসলামপুর পুরসভা এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা পুর বোর্ডের ব্যার্থতার কথা ও আমাদের বক্তব্য মাত্র ২ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে মানুষের কাছে আমরা নিয়ে যেতে পারছি এই গানের মাধ্যমে। কয়েকঘন্টার মধ্যে গানটি যেভাবে ভাইরাল হয়েছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে গানটি কতটা জনপ্রিয় হয়েছে।”
গানের গীতিকার রাহুল পাল জানিয়েছেন “আমি নীলাব্জ রিয়া সব সময়েই গান ও প্যারোডি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে থাকি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে কোনও জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে পুরো বক্তব্যটা মানুষের কাছে তুলে ধরা। অনেকেরই পছন্দ হয়। আবার অনেকের হয় না। তবে যাদের অপছন্দও হয় তাঁরাও গানগুলি শোনে”। যদিও সিপিএমের এই প্রচারকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দল তৃণমূল।
বিধানসভা নির্বাচনে ব্রিগেডের প্রচারে ‘টুম্পা সোনা’ গানের প্যারোডি করায় বেশ বিতর্ক হয়েছিলো রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধী রাজনৈতিক দল তো বটেই বামফ্রন্টের একাধিক শরিক দল এমনকি সিপিএমের অভ্যন্তরেও এই গান ব্যবহার করায় প্রশ্ন উঠেছিলো। তবে অনেকেই এই গানকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলো একটা নতুন সংস্কৃতি আসা মানেই সেটা খারাপ ধরে নেওয়া ঠিক নয়। তবে শৃঙ্খলা পরায়ন সিপিএমের গণসঙ্গীতের মিথ ভেঙে এই রকম প্যারোডি ঢোকা যে অনেক কঠিন সেটাও মেনে নিয়েছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
ব্রিগেডের পরে ভোটের প্রচারেও বেশ কয়েকটি প্রচারে প্যারোডি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘টুম্পা সোনা’র পরে ‘টুনির মা’, ‘উরি উরি বাবা’র প্যারোডি করে বামেদের পক্ষে প্রচার চালানো হয়েছে। কান্তি গাঙ্গুলির প্রচারেও প্যারোডি বানিয়েছে রাহুল, রিয়া নীলাব্জরা। পরবর্তী সময়ে বেশকিছু আন্দোলন কর্মসূচীতেও এঁরা গান বেঁধেছেন।
তবে বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন না পাওয়ায় এই গান নিয়ে সমালোচকদের কটাক্ষও হজম করতে হয়েছে বামেদের। তবে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে না থেকে ফের প্যারোডিকেই লড়াইয়ের হাতিয়ার করতে ইসলামপুর পুরসভার প্রচারে ‘কমলা’র উপর ভরসা রাখছে সিপিএম।