দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ খড়্গপুর: সক্রিয় রাজনীতি থেকে আপাতভাবে দূরে থাকা মুকুল রায়ের দিল্লিযাত্রাকে কেন্দ্র করে শোরগোল বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহলে।
রায়সাহেব যে দিল্লিতে যাচ্ছেন, তা জানতেনই না মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। বাবাকে খুঁজে পেতে পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরিও করেছেন তিনি। এরই মধ্যে মুকুলের দলবদলের সম্ভাবনা নিয়েও গুঞ্জন ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, শুভ্রাংশু দাবি করছেন তাঁর বাবাকে নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল নোংরা খেলায় নেমেছে। যদিও সরাসরি কোনও দলের নাম উল্লেখ করেননি তিনি। এদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার মুকুল রায়কে ‘লস্ট কেস’ হিসেবেই দেখছেন।
মুকুল রায় কি আবার বিজেপিতে যাচ্ছেন? সেই নিয়ে এদিন খড়্গপুরে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘নিখোঁজ তো উনি অনেকদিন আগেই হয়ে গিয়েছেন। উনি তো একজন বিধায়ক। আপনারা ছয় মাসের মধ্যে ওনার কোনও খবর পেয়েছেন? উনি বাংলার রাজনীতিতে খুব বড় একজন ব্যক্তিত্ব। কেন তাঁর কোনও খবর নেই? আমার মনে হয় এটা লস্ট কেস। মুকুল রায়কে নিয়ে আর কেউ চিন্তা করে না। অসুস্থ ছিলেন। আমি চাইব উনি সুস্থ থাকুন।’
মুকুলের হঠাৎ দিল্লিযাত্রা প্রসঙ্গে। তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাকেও প্রশ্ন করেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ৷ তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি যে কাল তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা জানি, তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন। নিউরোলজিক্যাল ব্যাপারে ভালই অসুস্থতা ছিল। সেই জন্য চিন্তা হচ্ছিল তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে।’ যদিও শশী পাঁজা শুভ্রাংশুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এও জানান, ‘যদি রাজনৈতিক কোনও বিষয় থাকে, তাহলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টি দেখছেন বলেই আমি মনে করি। তবে তাঁর স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রাখতে হবে।’ মন্ত্রীর কথায়, ‘তিনি (মুকুল রায়) আগাগোড়া তৃণমূল কংগ্রেস করেছেন। তিনি (বিজেপির থেকে) জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। কিন্তু তারপর তো তিনি আবার বিবেকের আওয়াজ শুনে এলেন (তৃণমূলে)।’
এদিকে মুকুল রায়কে খুঁজতে দিল্লি গেল বিধাননগর কমিশনারেটের টিম। ছেলে শুভ্রাংশুর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে এয়ারপোর্ট থানা। এদিকে কলকাতায় মুকুল রায়ের দিল্লি যাওয়ার বিষয় নিয়ে বিজেপি নেতা পীযূষ কানোরিয়া-সহ একাধিক জনকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডেকেছে পুলিশ। অন্যদিকে মুকুলের খোঁজে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের টিম।
সোমবার রাতে মুকুল রায় দিল্লি পৌঁছেছেন। তারপর তিনি কোথায় তা একটা রহস্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে শুভ্রাংশুর অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণের মামলা রুজু করেছে বিধাননগর পুলিশ।
মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার হাতে প্লেনের টিকিট কাটার টাকা ছিল না। একটি এজেন্সির মাধ্যমে এক অবাঙালি ব্যক্তি সেই টাকা দেন বলে দাবি করেন শুভ্রাংশু। সেই ব্যক্তিই পীযূষ কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে মুকুলের গাড়ির চালক রাজু মণ্ডল ও তাঁকে যিনি দেখাশোনা করেন সেই ভগীরথ মাহাত মুকুলবাবুকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছেন। শুভ্রাংশুর বক্তব্য, একজন মানসিক অসুস্থ মানুষকে নিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে।
এখন দেখার দিল্লি পৌঁছে মুকুলকে কোথায় পায় বিধাননগর কমিশনারেটের টিম এখন সেটাই দেখার। রাজধানীতে মুকুলের গতিবিধি সম্পর্কে নতুন কী তথ্য জানা যায় সে ব্যাপারেও প্রবল কৌতূহল রাজনৈতিক মহলের।