দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সারা জীবন দুস্থদের সেবা করেছেন তিনি। যাঁদের পপিত্যাগ করেছিল নিজের পরিবার। নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন। মৃত্যুর ১৯ বছর পর তাঁকে সন্ত উপাধি দেয় ভ্যাটিকান। সেই মাদার টেরিজার সংগঠন মিশনারিজ অফ চ্যারিটি এবার বিপাকে। নেপথ্যে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত।
প্রথমে জানা গিয়েছিল, সংগঠনের সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু নাহ্। এখন চ্যারিটির তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছিল সংগঠন। সেই আবেদন খারিজ হয়েছে। বৈদেশিক সাহায্য পেতে গেলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে ফরেইন কন্ট্রিবিউশনস রেগুলেশন আইনে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হয়। সেই আইনে লাইসেন্স রিনিউ করার আবেদন করেছিল মিশনারিজ অফ চ্যারিটি। তা খারিজ হয়ে যায়। এদিন একটি বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে মাদার টেরিজার সংগঠন।
জানিয়েছে, কেন্দ্রের এই নির্দেশ যাতে অমান্য না হয়, তাই সংগঠনের সমস্ত শাখাকে ব্যাঙ্কের লেনদেন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। মোদ্দা কথা বৈদেশিক সাহায্য নিতে বারণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, তারা চ্যারিটির অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেনি। বরং সংগঠনই চিঠি লিখে এসবিআই–কে অনুরোধ করেচে, তাদের অ্যাকাউন্টে লেনদেন আপাতত বন্ধ রাখা হোক। মিশনারিজ অফ চ্যারিটির লাইসেন্স রিনিউয়ের আবেদন খতিয়ে দেখতে গিয়ে কিছু ‘অনিয়ম চোখে পড়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে (এফসিআরএ) চ্যারিটির এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশন পুনর্নবীকরণের আবেদন গত ২৫ ডিসেম্বর খারিজ করা হয় এই সংক্রান্ত ২০১০ এর আইন ২০১১র ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন রুলসে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতার মাপকাঠি পূরণ করতে না পারায়। কেন্দ্রের আরও দাবি, রেজিস্ট্রেশন রিনিউয়ালের আবেদন প্রত্যাখ্যানের পরও তার রিভিউ চেয়ে চ্যারিটির তরফে কোনও আবেদন তাদের কাছে আসেনি।
চ্যারিটি এফসিআরএ-র আওতায় রেজিস্টার্ড হয়েছিল। তাদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর 147120001এবং তার বৈধতা ছিল ২০২১ এর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে সেই বৈধতার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কিন্তু তাদের রিনিউয়ালের আবেদন বিবেচনা করতে গিয়ে কিছু ক্ষতিকর ইনপুট কেন্দ্রের নজরে আসে। তাই তাদের এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশনের রিনিউয়াল অনুমোদন করা হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাদের কোনও অ্যাকাউন্টই ফ্রিজ করেনি। স্টেট ব্যাঙ্কই কেন্দ্রকে জানিয়েছে যে, চ্যারিটির তরফেই তাদের অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করার আবেদন পাঠানো হয়েছিল।
এই নিয়ে টুইটারে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে লিখেছেন, ‘শুনে হতবাক, যে বড়দিনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ভারতে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি–র সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে। তাদের ২২ হাজার রোগী, কর্মী এখন খাবার এবং ওষুধ পাবেন না। আইন যখন সর্বশ্রেষ্ঠ, তখন মানবিক উদ্যোগ বন্ধ করা উচিত নয়।’
কলকাতার আর্চ ডায়োসিসের ভিকার জেনারেল ফাদার ডমিনিক গোমসও দাবি করেন, এটা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর জঘন্য আক্রমণ।