কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর সরব গোটা দেশ। পাকিস্তানকে জব্দ করার নানা কূটনৈতিক কৌশল নিয়েছে গত কয়েকদিনে ভারত। যদিও পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর একের পর এক মায়ের কোল খালি হয়েছে। বহু গৃহবধূর মুছেছে সিঁদূর। অনেকেই বাবাহারা হয়েছে। বলাইবাহুল্য এটা যে কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না,যোগ্য জবাব দেওয়া হবে, এনিয়ে আগেই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অবশেষে এদিন এনিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন তিনি। এরপরেই এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
কখন, কোথায় কীভাবে হামলা? ঠিক করতে সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন তিনি। মিশনের জন্য তৈরি সেনাবাহিনী, কীভাবে পাকিস্তানকে প্রত্যাঘাত, তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী । এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, NSA, CDS, ৩ বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ, দোভাল, অনিল চৌহান। কাশ্মীর হামলার পর, কীভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া যায়, সেই রোডম্যাপ তৈরি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সারেন তিনি।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিতে চায় ভারত, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সন্ত্রাসকে কোনওভাবে মেনে নেওয়া হবে না। এই বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এবং ভারতবর্ষের সেনাবাহিনীই ঠিক করবে যে, কীভাবে পহেলগাঁওয়ের এই আক্রমণের প্রত্যাঘাত করা হবে। কোথায় করা হবে, কোন সময় করা হবে, এর পূর্ণ স্বাধীনতা তিনি সেনাবাহিনীকে দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র মারফত যেটা জানা যাচ্ছে, এই বৈঠকে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিয়েছেন সেনাবাহিনীকে, যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিতে চায় ভারত।

এই বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এসে হাজির হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আসেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবৎও। তিন জনের মধ্যে আলাদা ভাবে আরও একটি বৈঠক হয়।
পহেলগামে হামলার পরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন যে, এই ক্ষেত্রে ‘কল্পনাতীত পদক্ষেপ’ করা হবে।

এমনিতেই, ওই হামলার পরে কাশ্মীর জুড়ে চলছে সেনাবাহিনীর অপারেশন। সূত্রের খবর, ১০০ জঙ্গিকে টার্গেট করে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, কাশ্মীর ইস্যুতেও এ দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে উচ্চ পর্যায়ের মিটিং হয়। ওই বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন, বিএসএফ, অসম রাইফেলস এবং এনএসজির ডিজি, সিআরপিফ এবং সিআইএসএফ-এর সিনিয়র অফিসাররা ।
পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে কেন্দ্র। এই হামলার পরে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরেও আজকের মতোই একটি জরুরি বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকেও এদিনের অংশ নেওয়া অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সেদিনও ওই বৈঠককে নের্তৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মূলত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, উরিতে সেনা ছাউনিতে ঠিক একইভাবে আক্রমণ হয়েছিল। যেখানে ১৯ জন ভারতীয় সেনাকর্মী নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর তখনও সারা দেশজুড়ে একটা শোকের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। একটা প্রত্যাঘাতের দাবি উঠেছিল। এবং তারপরেই এই বৈঠক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে হয়েছিল।
https://x.com/ANI/status/1917198663312654482?t=5Li7F-tDIRE62inAJfO7aQ&s=19
