দেশের সময় ,কলকাতা : শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে দেখতে এসেছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী কথা বললেন সন্দেশখালি থেকে শুরু করে দেব, মিমি চক্রবর্তী, শেখ শাহজাহান এমনকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও।
রাজ্য জুড়ে সম্প্রতি ঘটে চলা ঘটনাগুলি নিয়ে করা প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিলেন মিঠুন।
ক’দিন আগেই নিজে অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। তাঁকে দেখতে এসেছিলেন সুকান্ত। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। হাসপাতালে শয্যাশায়ী সুকান্ত। আর তাঁকে দেখতে এসেছেন মিঠুন। সুকান্তকে দেখে বাইরে বেরোনোর পর মিঠুনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সুকান্ত কেমন আছেন? দেখা গেল সে কথা বলতে গিয়ে মিঠুন নিজেই টেনে আনলেন সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। মিঠুন বললেন, ‘কলার বোনে আঘাতটা বেশি। তবে (সুকান্ত মজুমদার) এখন অনেক ভাল আছেন। উনি আজই ছুটি পেতে চান। বার বার সন্দেশখালিতে যেতে চাইছেন। আমাকে বললেন সন্দেশখালিতে কী হচ্ছে এক বার দেখো দাদা! কিন্তু চিকিৎসকেরা ওঁকে আজ ছাড়বেন না। কালকে ছাড়বেন।’
সন্দেশখালি প্রসঙ্গ উঠতেই মিঠুনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চান কি না। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জবাব আসে, ‘‘টাইম হ্যাজ কাম, দ্যাট ইউ রাইজ় (অর্থাৎ এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে)!’’ মিঠুনের মতে, সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। তাঁর কথায়, ‘‘যদি মহিলাদের সঙ্গে এই ব্যবহার করা হয়, বা যদি মহিলাদের ব্যবহার করা হয়, তবে তার থেকে ঘৃণ্য কাজ আর কিছু হতে পারে না। মহিলাদের সঙ্গে যে খেলা হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য। রাজনীতির লড়াই হোক। কিন্তু মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা সবার দেখা উচিত। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দেখা উচিত। যাঁরা নিজেদের সম্মানের জন্য সরব হয়েছেন, প্রকাশ্যে কথা বলেছেন, তাঁদের কণ্ঠস্বর যেন থামিয়ে না দেওয়া হয়।’’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর আরএসএস নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওই সংগঠন সম্পর্কে নিজের মত জানিয়েছেন।সন্দেশখালির ঘটনার পিছনে আরএসএস-এর মদতের কথা শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত নন তিনি। আরএসএস-কে পজিটিভ ফোর্স বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিষয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেছেন, “আরএসএস নেগেটিভ ফোর্স নয়। পজিটিভ ফোর্স। পুরো ভারতে, পুরো বিশ্বে আছে। ১২ কোটির বেশি সদস্য রয়েছে। এর মতো আর কোনও সংস্থা নেই, যা দেশের জন্য এত কাজ করেছে।”
এরপরই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল। শুক্রবার এ ব্যাপারে মুখ খুললেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীও। বলা ভাল, ইডির সমন সম্পর্কে দেবকে সার্টিফিকেট দিলেন মিঠুন।
মিঠুনের কথায়, “আমার মনে হয় না দেব ওই ধরনের ছেলে, পার্সোনালি যতটা চিনি।”
বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে দেখতে এসেছিলেন অভিনেতা। সেখানেই একথা বলেন মিঠুন।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মিঠুনকে দেখা যাবে কি না, সে কৌতূহল স্বাভাবিক ভাবেই রয়েছে সাংবাদিকদের মধ্যে। তাঁরা সেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন ‘মহাগুরু’কে। এর জবাবে মিঠুন জানান, তিনি দেওয়ার লোক, নেওয়ার লোক নন। অর্থাৎ তিনি যে প্রার্থী হচ্ছেন না, তা প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব যে তিনি আগেও ফিরিয়েছেন তা মনে করিয়েছেন। প্রার্থী হয়ে একটি কেন্দ্রে আবদ্ধ থাকার ইচ্ছা যে তাঁর নেই, তাও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, “প্রার্থী হলে নিজের জায়গায় বেশি মনোযোগ করতে হবে। এর থেকে বড় অফার ছিল কিন্তু আমি দেওয়ার লোক, নেওয়ার নয়।” এর পাশাপাশি ১ তারিখ থেকে প্রচার শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন মিঠুন। বলেছেন, “এক তারিখ থেকে প্রচারে নামব। শেষ অবধি থাকব।” অর্থাৎ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ‘চিতার ছোবল’ যে ঘাসফুলের দিকে ধেয়ে যাবে তা পরিষ্কার হয়ে গেল মহাগুরুর কথাতেই।