
বাগদা: প্রায় তিন মাস স্কুলের মিড ডে মিল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে শতাধিক পড়ুয়া। ঘটনা ঘিরে অসন্তোষ অভিভাবকদের মধ্যেও। দ্রুত মিড ডে মিল চালুর দাবি জানান পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকেরা। দেখুনভিডিও
এক যেন হয়ে উঠেছে এক আজব স্কুল, আছে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকারা। চলে পড়াশোনাও, তবে দেখা মেলে না প্রধান শিক্ষকের। দু’বছর ধরে বাড়ি থেকেই বাগদা কনিয়াড়া যাদবচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন অনুপম সরদার। তবে, স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ মন্ডল-ই এতদিন চালিয়ে আসছিলেন সবকিছু। একজন শিক্ষক হয়ে তিনি যেমন স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব সামলাতেন, পাশাপাশি মিড ডে মিল থেকে শুরু করে পরীক্ষা সহ নানা প্রশাসনিক কাজ সবকিছুই সামলানো যেন দুঃসহ হয়ে উঠেছিল শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হওয়া অভিজিৎ মন্ডলের কাছে।
বারংবার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। অবশেষে নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে শিক্ষা দফতর সহ বিডিওর কাছেও দরবার করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দায়িত্ব ছেড়ে দিতেই, প্রায় তিন ‘মাস ধরে স্কুলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলের খাবার। প্রধান শিক্ষকের এমন অনুপস্থিতির কারণেই চরম সমস্যায় পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রী থেকে স্কুল শিক্ষকরাও। সহকারী প্রধান শিক্ষকও এই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় সমস্যা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ । এখন তাহলে কি হবে! বিষয়টি নিয়েই চিন্তায় স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরাও।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে রয়েছে প্রায় ৭০০ স্টুডেন্ট, প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে ১৭০ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল পরিষেবা পেত। কিন্তু কাঁচামালের বকেয়া থেকে, স্কুল পরিচালনার প্রয়োজনীয় সমস্ত ক্ষেত্রেই বাকি পড়ে গিয়েছে অনেক টাকা। তাই বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না। এর আগে প্রধান শিক্ষকের গাফিলতের কারণেই মাসের বেতন পেতেও সমস্যা তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েক জন শিক্ষকদের। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে ছাত্র ছাত্রীরা পড়তে আসেন এই বিদ্যালয়ে। মিড ডে মিল বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টির ক্ষেত্রেও তৈরি হচ্ছে ঘাটতি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অনুপম সর্দার অবশ্য জানিয়েছেন, মিড ডে মিল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বঞ্চিত করা এবং সরকারি প্রকল্পটাকে বন্ধ করা -এটা সম্পূর্ণ একটা পরিকল্পনা। । বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। পাল্টা স্কুল পরিচালন সমিতিসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলে প্রাণ সংশয়ের কারণ দেখিয়ে স্কুলে আসতে পারেন না বলে দায় এড়ান।
আগামী ১৭ এপ্রিল স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তরের তরফে স্কুলে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। এখন দেখার কোন দিকে গড়ায় জল।তবে অভিভাবক থেকে ছাত্রছাত্রীরা চাইছেন সুষ্ঠু পরিস্থিতি বজায় রেখে, মিড ডে মিল থেকে পঠন-পাঠন সবই হোক নিয়ম মেনে।