দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রতি বছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ছট পূজার আয়োজন করা হয়। ছট উৎসব ভারতের কয়েকটি কঠিন উৎসবের মধ্যে একটি যা ৪ দিন ধরে চলে। এই উৎসবে ৩৬ ঘন্টা উপবাস রেখে সূর্য দেবতা ও ছটি মাইয়াকে পূজা করা হয় এবং তাদের অর্ঘ্য দেওয়া হয়। ইচ্ছা পূরণের জন্যও এই উপবাস করা হয়। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এই উপবাস পালন করেন। কার্তিক মাসের চতুর্থী তিথিতে স্নান, দ্বিতীয় দিনে খরনা এবং তৃতীয় দিনে অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। চতুর্থ দিনে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করে উপবাস ভাঙা হয়। 

মূলত অবাঙালিদের এই পুজোয় সূর্য দেবতার আরাধনা করা হয়। একটাই কামনা সুখে শান্তিতে দিন কাটানো। কিন্তু ইচ্ছা হল আর পুজো করে ফেললেই তো পুণ্যার্জন হবে না। বরং নিয়ম মেনে সারুন ছট পুজো। তাতেই দেখবেন আপনার সংসার ভরে উঠবে সুখ-সমৃদ্ধিতে। যাঁরা ছট পুজো করে থাকেন, তাঁরা ভাইফোঁটার পর থেকেই টানা নিরামিষ খান। এই নিরামিষে পেঁয়াজ রসুনও জায়গা পায় না। পুজোর দু’দিন আগে লাউয়ের যেকোনও পদ খেতে হয়। পুজোর ঠিক আগের দিন ‘খারনা’ নামের একটি নিয়ম পালিত হয়।

হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে শ্রী হরি বিষ্ণু কলায় বাস করেন। কলাও ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় ফল। কলা একটি খাঁটি ফল হিসাবে বিবেচিত হয়। কলা ছটি মায়ার প্রিয় ফল বলে তাকে খুশি করতে কলা নিবেদন করা হয়।

ছট উৎসবে নারকেল নিবেদনের বিশেষ গুরুত্ব আছে বলে মনে করা হয়। কথিত আছে যে এটি নিবেদন করলে লক্ষ্মীর কৃপা সর্বদা ঘরে থাকে।

আখ ছটি মাইয়ার অন্যতম প্রিয় ফল। কথিত আছে যে এটি করলে ষষ্ঠী মা সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। ছট পূজায় আখ থেকে তৈরি গুড়ের প্রসাদও দেওয়া হয়।

এই লেবু সাধারণ লেবুর চেয়ে আকারে বড়। এই লেবু মা বিশেষভাবে পছন্দ করেন এবং তাই তাকে খুশি করার জন্য, প্রসাদে বাতাবি লেবু দেওয়া হয়।

ছট পুজোর সময়, ষষ্ঠী মাকে পানি ফল দেওয়া হয়। পানি ফল এমন একটি ফল যে ছটি মাইয়াকে নিবেদন করলে তিনি পুরো পরিবারকে আশীর্বাদ করেন।

হিন্দু ধর্মে সুপারি ছাড়া যে কোনো পূজা অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। সুপারি মা লক্ষ্মীর প্রিয় ফল হিসেবে পরিচিত। এই কারণেই ষষ্ঠী মাকেও সুপারি দেওয়া হয়। বিশ্বাস করা হয় এতে করে ঘরে প্রবেশ করেন মা লক্ষ্মী।

কালীপুজোর আগে থেকেই বাজারদর ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।পুজো, পার্বণ কাটিয়ে মাসের শেষে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শাক সবজি থেকে শুরু করে ফল। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আজকে কলকাতায় কত যাচ্ছে মাছ, মাংস, শাক-সবজির বাজার দর। (স্থানীয় বাজার দরে সামান্য হের ফের হওয়ার সম্ভাবনা)।

ছট পুজোর সময় এই লাউয়ের দাম কার যত দ্বিগুণ দিন গুণ হয়ে যায়। ছট পুজো উপলক্ষে বাজারে লাউয়ের দাম রীতিমতো আগুন। ২০ টাকার লাউ বিকোলো ৮০ টাকা দরে। ছট পুজো করতে গেলে নিয়ম অনুযায়ী দুদিন আগে থেকে লাউ ভাত খেতে হয়। এজন্য প্রতিবছর ছট পুজো এলে বাজারে লাউয়ের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়ে যায়। কুড়ি টাকার লাউ হয়ে যায় ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

উৎসবের প্রথম দিন সকালে স্নান সেরে পরিষ্কার কাপড় পরে রান্না করেন মহিলারা। এদিন দুপুরের খাবারে থাকে লাউ ভাত। অর্থাৎ ভাতের সঙ্গে লাউয়ের তরকারি। সঙ্গে চানা ডাল সঙ্গে নানারকম সবজি। তবে এই সব রান্নায় নুন ব্যবহার করা যাবে না। পরিবারে যে ব্রত রাখেন তিনি ছাড়া এদিন পরিবারের সকলকেই দুপুরে এই লাউয়ের তরকারি দিয়ে ভাত খেতে হয়। তবে রাতে যেকোনও রকমের নিরামিষ খাবার খাওয়া যেতে পারে।

ছটপুজো উপলক্ষে কলকাতার বাজারে কলার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা৷ ছবি- সুবীর হালদার ৷

পাঁকা কলা এক কাঁধি ৩০০-৪০০ টাকা৷ জ্যোতি আলুর দাম ২৮-৩০ টাকা কেজি, পাইকারি দাম ২০-২২ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ৩৫-৪০ টাকা কেজি, পাইকারি দাম ২৮-৩২ টাকা। পেঁয়াজের দর আজ খুচরো বাজারে ৪০ টাকা কিলো (পাইকারি দর কিলোতে ৩০-৩৫ টাকা), রসুন কিলো ৮০-১০০ টাকা, আদা কিলোতে ১০০-১২০ টাকায়, কাঁচালঙ্কা কিলোতে ১০০-১২০ টাকায়, ক্যাপসিকাম/ বেলপেপার ৩০০-৩৫০ টাকা কিলো, পাতিলেবু ১০ টাকায় ৩-৪ পিস।

গাঁটি কচু ২৫-৩০ টাকা কেজি, কুঁদরি প্রতি কেজি ২০ টাকা, উচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ধনেপাতা ৫ টাকা আঁটি (১৮০-২০০ টাকা কেজি), পুই শাক ১০ টাকা আঁটি, লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, পাটশাক ১০ টাকা আঁটি। কুমড়ো প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা প্রতি কেজি, মটরশুঁটি ৩০-৪০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ইঁচড় ৪০ টাকা কেজি, শসা ৩০-৪০ টাকা কেজি, টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা কেজি।

ছট পুজোকে কেন্দ্র করে এদিন লাউয়ের বাজার ছিল বেশ জমজমাট। এদিন বিভিন্ন মার্কেটে , ও স্থানীয় বাজারগুলিতে লাউয়ের আমদানি প্রচুর। কৃষকরা এদিন ভালো দাম পেয়ে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছেন। কোথাও কোথাও প্রায় তিনগুণ নামে লাউ বিক্রি করে মুখে হাসি ফুটেছে সবজি ব্যবসায়ীদেরও।

এদিকে মাছের দাম একই রয়েছে। গোটা রুই মাছ ১২০-১৬০ টাকা। আর কাটা রুই মাছের দর ১৬০-১৮০ টাকা। গোটা কাতলা ২২০-২৫০ টাকা। কাটা কাতলার দর ২৬০-৩২০ টাকা কিলো, পার্শে মাছের দর ৩০০-৩৫০ টাকা কিলো, পাবদা মাছ ৩০০-৪০০ টাকা কিলো দরে।

তেলাপিয়া মাছ ১২০-১৬০ টাকা কেজি, আমুদি মাছ ৮০-১২০ টাকা কেজি, ট্যাংরা মাছ বিকোচ্ছে ১৮০-২২০ টাকা কেজি প্রতি, মৌরোলা ৩৫০-৩৫০ টাকা কেজি, ভোলা মাছের দাম ১২০ টাকা কেজি। আর মুরগির মাংস (গোটা) কেজি প্রতি ১৪০-১৪৮ টাকা, মুরগির মাংস (কাটা) ১৯০-২০০ টাকা কেজি, পাঁঠা / খাসির মাংস ৭০০-৮০০ টাকা কেজি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here