দেশের সময়: দিল্লির শ্রদ্ধাকাণ্ডের ছায়া এবার মুম্বইয়ে| রাগের বশে লিভ ইন পার্টনারকে খুন করলেন এক ব্যক্তি| শুধু খুন নয়, সঙ্গিনীর দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে লুকিয়ে রেখেছিলেন ফ্ল্যাটে| দুর্গন্ধ পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা খবর দেন পুলিশকে| পুলিশ এসে টুকরো টুকরো দেহগুলি উদ্ধার করে|
মুম্বইয়ের মীরা রোডের এই নৃশংস ঘটনায় ৫৬ বছরের অভিযুক্ত ওই প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
খুনে অভিযুক্ত ওই প্রৌঢ় মনোজ সাহানির সঙ্গে দীর্ঘ দিন একত্রে বাস করতেন ৩৬ বছরের সরস্বতী বৈদ্য। মীরা রোডের গঙ্গানগর অঞ্চলের আকাশদীপ নামের একটি আবাসনে ৩ বছর ধরে ভাড়া থাকতেন তাঁরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বোরিওয়ালি এলাকায় একটি ছোট দোকান চালাতেন মনোজ। তাদের ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধ আসতে থাকায় থানায় খবর দেন আবাসনের অন্য বাসিন্দারা। পুলিশ এসে ওই ফ্ল্যাট থেকে সরস্বতীর পচাগলা দেহাংশ উদ্ধার করে। ফ্ল্যাটের অন্য প্রান্তে পাওয়া যায় আরও কিছু দেহাংশ।
মুম্বই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জয়ন্ত বজবলে বলেছেন, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন মনোজ। এমনিতে তাদের মধ্যে ভাল বোঝাপড়া ছিল| কিন্তু সম্প্রতি কোনও বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হচ্ছিলো। তারই জেরে রাগের মাথায় কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে সে খুন করে সরস্বতীকে| তারপর দেহ পিস্ পিস্ করে। কয়েকটা টুকরো গরম জলেও ফোটায়|
পুলিশের অনুমান, খুনের পর প্রমাণ লোপাট করার জন্যই এই কাজ করেছিল মনোজ। তবে ঠিক কী কারণে খুন, তা মনোজকে জেরা করে এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে বুঝতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
এ ঘটনায় কয়েক মাস আগের শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শ্রদ্ধার খুনেও প্রায় একইভাবে তাঁর লিভ ইন পার্টনার আফতাব পুণাওয়ালার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল। শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা এবং অল্প অল্প করে জঙ্গলে ফেলে আসার অভিযোগ ওঠে আফতাবের বিরুদ্ধে। দিল্লির এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে।
সেই শ্রদ্ধাকাণ্ডেরই ছায়া দেখা গেল মুম্বইয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, লিভ ইন পার্টনারের দেহ টুকরো টুকরো করার পর প্রেসার কুকারে ফোটায় অভিযুক্ত, কিন্তু তাতেও প্রমাণ লোপাট করতে পারেনি| প্রতিবেশীরা ফোন করে পুলিশকে জানান, আকাশদ্বীপ বিল্ডিংয়ের ৭০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে কয়েকদিন ধরে। এমনকী দু’দিন থেকে ওই ফ্ল্যাট থেকে কাউকে বের হতেও দেখা যায়নি। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি পুলিশ সেখানে পৌঁছে দেখে এই কাণ্ড। হাড়হিম করা এই খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণে আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।