দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দার্জিলিঙে প্রশাসনিক সভায় একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি-সহ পাহাড় ইস্যু নিয়ে সরব রাজ্যের মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মঙ্গলবার বিজেপিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘বাংলাকে ভালবাসে না বিজেপি। শুধু বদনামের চেষ্টা করে। এদিকে বড় বড় ভাষণ দেয়। রোজই পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভোটের পরই জ্বালানির দাম বাড়ছে। মানুষ কী খাবে? বিজেপি খাবে? নাকি দিল্লির লাড্ডু খাবে?’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট এলেই একটি রাজনৈতিক দল আসে, পুরো ভোট নিয়ে চলে যায়, তারপর আর পাত্তা পাওয়া যায় না। দিল্লির লাড্ডুর দরকার নেই, দার্জিলিংয়ের লাড্ডু চাই।’
বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন থেকে ১৭ হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ফিরে এসেছে। দেশে কোর্স শেষ করার ব্যবস্থা হোক। সংসদে বলছে, নাকি হবে না। বাংলারও ৪০০ পড়ুয়া ছিল। আমি দাবি জানাচ্ছি, অনুমতি দেওয়া হোক। ফ্রিতে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেব।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট এলেই একটা রাজনৈতিক দল আসে। ভোট নেয়, চলে যায়। কেউ দিল্লির লাড্ডু খাবেন না।’ সেই অনুষ্ঠানেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এরাজ্যে স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে চিকিৎসা মেলে। এই কার্ড কেউ না পেলে ‘দুয়ারে সরকারে’ আবেদন জানান, পেয়ে যাবেন।
২১ লক্ষ বিধবাকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ২০ বছর ধরে পাট্টা দেওয়া হয়নি, এখন আমরা সকলকে পাট্টা দেওয়া শুরু করেছি। এখন দার্জিলিং হাসছে, পর্যটকেরা আসছেন। খুব তাড়াতাড়ি জিটিএ নির্বাচন হবে। আগামী ১০ বছর শুধু উন্নয়ন হবে।’
শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোভিডের সময় আসার সুযোগ হয়নি। ২-৩ মাস আগে কার্শিয়ঙে এসেছিলাম। দু’বছর পরে এলাম দার্জিলিঙে।’’ সভায় বেশ কয়েকটি রাস্তা, হস্টেলের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পাহাড়ে তিন লক্ষ ৮০ হাজার চা শ্রমিকের নতুন বাড়ি হয়েছে। ২১ লক্ষ বিধবাকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ১০ লক্ষ পড়ুয়াকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে।’’ কেউ যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না পেয়ে থাকেন তবে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সাহায্য নিতে বলেন তিনি।
এ ছাড়াও পাহাড়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘পাহাড়ে একটি হিল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। এ নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হল জিটিএ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করা। সে কারণে তিনি সোমবার চার দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। মঙ্গলবারও সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে খুব তাড়াতাড়ি জিটিএ নির্বাচন হবে।’’ ভাষণে বিজেপি-কে খোঁচা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দার্জিলিং যখন হাসে তখন একটি দল এসে ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়ে যায়।’’
প্রসঙ্গত, পাহাড় সফরে যেমন একাধিক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক তেমনই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। এদিন বিজেপিকে নিশানা করে পাহাড়ে রাজনীতির বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি।