অর্পিতা বনিক দেশের সময় বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে সোমবার সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বনগাঁয় সীমান্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত ল্যান্ডপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের অধীনে নিয়ে আসায় এবং রাজ্য সরকার তার ট্যাক্স নেওয়ায় বনগাঁ পুরসভার তরফে ল্যান্ডপোর্টের তরফে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বজিৎ যদি জেতে তবে আমি, বিশ্বজিৎ, মমতাবালা সবাই একসঙ্গে বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব। যাতে ওদিকটাও ঠিক থাকে। আর গরীব মানুষগুলোরও কর্মসংস্থান হয়। দেখুন ভিডিও
লক্ষ্য মতুয়াগড় ,পুরাতন তৃণমূল কর্মীদের চাঙ্গা করতে বনগাঁর জনসভা মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত ভূপেন্দ্রনাথ শেঠকে স্মরণ করে রতন ঘোষকে রাখলেন সামনের সারিতে : দেখুন ভিডিও
লোকসভা ভোটে বিজেপি বড়জোর ১৯৫, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ কত পাবে? হিসাব দিলেন মমতা
তৃতীয় দফা পর্যন্ত দেশে কী ট্রেন্ড চলছে? সেই ব্যাপারে নিজের মতামত প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘কাল পর্যন্ত আমাদের কাছে যা হিসেবে এসেছে, তাতে ওঁরা বড়জোর ১৯০-১৯৫টি আসন পাবে। ইন্ডিয়া জোট তিন-চারটি দল বাদ দিয়ে হিসেবে করে দেখা গিয়েছে ৩১৫টি আসন পেতে পারে।’ এবার লোকসভা ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করবে বলেই দাবি করেন তিনি।
রাজ্যে তিনটি দফায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আজ, সোমবার গোটা দেশ জুড়ে চতুর্থ দফায় নির্বাচন চলছে। গোটা দেশ জুড়ে বিজেপি এবার কয়টি আসন পেতে পারে? বনগাঁর একটি রাজনৈতিক সভা থেকে সেই কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি, ইন্ডিয়া জোট সরকারে আসছে, তাঁদের কয়টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেটাও জানিয়ে দিলেন মমতা।
যে চার দফা ভোট হয়ে গেছে তাতে স্পষ্ট বিজেপি আর থাকছে না। বনগাঁর জনসভা থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট প্রচারে বাংলায় এসে নরেন্দ্র মোদী বারবার যে গ্যারান্টির কথা বলছেন তাকেও কার্যত ‘জুমলা’ বলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, মোদী সকাল-সন্ধে যা বলছেন তা আসলে নো-গ্যারান্টি। পুরোটাই ভুয়ো।
মতুয়াদের নিঃশর্তে অধিকার দিচ্ছেন না কেন মোদী? প্রশ্ন তুললেন মমতা : দেখুন ভিডিও
মমতা বললেন, ‘‘মতুয়াদের প্রতি যদি মোদীর এত ভালবাসা, তবে তাঁদের নিঃশর্তে অধিকার দিচ্ছেন না কেন মোদী? ফর্ম ফিল আপ করতে বলছেন না কেন? এমনিই দিয়ে দিন। করবে না। আপনারা বরং এক কাজ করুন। এখানকার যে বিজেপি প্রার্থী তাঁকে বলুন আবেদন করতে, ফর্ম ফিল আপ করতে। দেখবেন করবে না। কেন করেনি? তার কারণ তিনি বিদেশি হয়ে যাবেন। কেউ করেনি। আসলে এটা একটা চক্রান্ত।’’
বনগাঁর সভা মঞ্চ থেকে মমতার হুঙ্কার, ‘‘সিএএ করতে দেব না। আপনাদের সংরক্ষণ কেউ আটকাতে পারবে না। কিছু করতে হলে আমার লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে মোদীকে।’’
শান্তনুকে নাম না করে আক্রমণ মমতার
বনগাঁর বিদায়ী বিজেপি সাংসদ এবং লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরকে নাম না করে আক্রমণ মমতার। বললেন, ‘‘এখানকার বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন, কী করেছেন?’’ দর্শকাসন থেকে সমস্বরে জবাব কিছু করেননি। শুনে মমতা বললেন, ‘‘না করেছে। আমরা ধরে ফেলেছি। নাগরিকত্ব দেব বলে কিছু কিছু জায়গায় টাকা তুলেছে।’’
একাধিক প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে না, তৃণমূলের এই অভিযোগ নতুন নয়। এই নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এদিন মমতা বলেন, ”বাংলার বাড়ির টাকা দিচ্ছে না, সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। ফুড ডিপার্টমেন্টের টাকাও বন্ধ। ১০০ দিনের কাজের টাকাও দিচ্ছে না। এদিকে রোজ বড় বড় কথা বলছে।” এই প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, ”সকাল-সন্ধে নিজের নো গ্যারান্টি মুখ দেখাচ্ছে। যা বলছে পুরোটাই ভাঁওতা। একমাত্র তৃণমূল গ্যারান্টি দিতে পারে, বিজেপি যে গ্যারান্টির কথা বলছে তা আসলে ৪২০ গ্যারান্টি!”
মারছে তৃণমূলে পড়ছে বিজেপির ফুলে, আমরা ধরে ফেলেছি! মোদীর গ্যারান্টি ৪২০: মমতা
ইভিএম কারচুপির অভিযোগও এর আগে করেছে তৃণমূল। সোমবার বনগাঁর সভা থেকে এই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ”জানেন, আমরা ধরে ফেলেছি। ভোট দিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে মারছে তৃণমূলে পড়ছে বিজেপির ফুলে। সঙ্গে সঙ্গে হাতেনাতে ধরে সেই মেশিন বদল করিয়েছি আমরা।” কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও ফের এই সভা থেকে নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। দাবি করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী সীমান্তে গিয়ে গিয়ে বিজেপি পার্টির টোটো লাগিয়ে জোর করে ভোট করাচ্ছিল। সেটাও হাতেনাতে ধরা হয়েছে।
বনগাঁ থেকে এবার বিজেপির টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন গতবারের জয়ী সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিজেপি প্রার্থী ‘অনেক জায়গায় টাকা তুলেছে’ বলে দাবি করেন তিনি। শান্তনু ঠাকুরকে আক্রমণ করে দর্শকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আপনারা এক কাজ করুন। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির যিনি প্রার্থী তাঁকে বলুন আগে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে, ফর্ম ফিল আপ করতে। আপনারা দেখবেন করবে না। কেন করেনি আবেদন? তার কারণ তিনি বিদেশি হয়ে যাবেন। কেউ করেনি। আসলে এটা একটা চক্রান্ত।’
মমতার আরও দাবি, ভোটের জন্য বিজেপি যে বিজ্ঞাপন করছে তাতেও তাঁর নাম ব্যবহার করছে! জল দেওয়ার নামে ভোটারদের মিথ্য কথা বলছে তারা। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পে ৭০ শতাংশ টাকা, জমি এবং রক্ষণাবেক্ষণ সব রাজ্য সরকার করে বলে জানিয়েছেন মমতা। একই সঙ্গে তাঁর কথায় উঠে আসে সেই সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। সন্দেশখালির মা বোনেদের অসম্মান করার জন্য টাকা খরচ করছে বিজেপি, এমন অভিযোগ ফের এদিন করেন তৃণমূল নেত্রী।