দেশের সময় মঙ্গলবারই কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এন্টালি থেকে একটা পদযাত্রা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। ওই একটা রোড-শোতে কলকাতা উত্তর এবং দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রকে মিলিয়ে দেন মমতা। সুদীপের পাশাপাশি, কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের সমর্থনে রোড-শো করেন তিনি। বুধবার আবার উত্তর কলকাতায় রোড-শো করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
মিছিল যত এগোতে থাকে, ভিড়ও ততই বাড়তে থাকে। ভিড় থেকে এক মহিলা দড়ির ব্যারিকেড টপকে চলে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তুলে বুকে জড়িয়ে নেন। বাড়ির ব্যালকনি থেকে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘মমতা তুমি ভাল থেকো।’ হাত নাড়েন তিনি।
এন্টালি থেকে পদযাত্রা করে বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে এসে তা শেষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫০ মিনিটের বেশি সময় ধরে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখান থেকেই তিনি সোজা চলে যান বেহালায় জনসভা করতে। প্রথমে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে পদযাত্রা করেন তৃণমূলনেত্রী।
তারপর কলকাতার দুই কেন্দ্রের প্রার্থীদের সমর্থনে হাঁটেন দলনেত্রী। লোকসভা নির্বাচন এখন শেষ পর্য়ায়ে। আগামী শনিবার সপ্তম দফার ভোট। কলকাতা–সহ দুই ২৪ পরগনায় তা হবে। উত্তর ২৪ পরগনার দমদম কেন্দ্রে এবারও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌগত রায়। তাঁর সমর্থনে দমদমের বিরাটি বণিক মোড় থেকে এয়ারপোর্টের ২ নম্বর গেট পর্যন্ত পদযাত্রা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই পদযাত্রার দু’ধারে অগণিত সাধারণ মানুষ আওয়াজ তুললেন, ‘দিদি আমরা তোমার সাথে আছি।’
এদিকে তাঁর আজকের পদযাত্রায় সঙ্গে ছিলেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী মালা রায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে রাস্তার দু’পাশে ভিড় করেন উৎসাহী জনতা। দলীয় কর্মী–সমর্থকেরা স্লোগান দিতে থাকেন। আর রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতার দিকে হাত নাড়তে নাড়তে এগিয়ে যান তৃণমূলনেত্রী।
রাস্তার দু’পাশে ভিড় করা কর্মীদের উল্লাসের ছবি ধরা পড়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন সকলের উদ্দেশে করজোড়ে প্রণাম করতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে সেলফি তোলার হিড়িকও দেখা গেল মানুষজনের মধ্যে। অনেকেই এগিয়ে এসে তৃণমূলনেত্রীর হাতে পুষ্পস্তবক দেন। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু, ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং ব্যারাকপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী পার্থ ভৌমিকও।
মঙ্গলবার কলকাতা উত্তরে রোড-শো করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার মোদীর যাত্রাপথেই রোড-শো করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা যে কলকাতা উত্তরে বুধবার রোড-শো করবেন তা আগেই ঠিক ছিল। তবে কোন পথে তা হবে, সেটা চূড়ান্ত ছিল না। মোদীর রোড-শো শুরু হওয়ার আগে মঙ্গলবার তৃণমূল সূত্রে জানা গেল, বুধবার মমতার রোড-শো শুরু হবে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে। শেষ হবে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে। ঘটনাচক্রে, মোদীও মঙ্গলবার এই একই পথে রোড-শো করেছেন।
মঙ্গলবার দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে বিরাটিতে রোড শো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । পরে এন্টালি মার্কেট থেকে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ গ্রহণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে মিছিল যত এগোতে থাকে, ভিড়ও ততই বাড়তে থাকে। ভিড় থেকে এক মহিলা দড়ির ব্যারিকেড টপকে চলে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তুলে বুকে জড়িয়ে নেন।
বাড়ির ব্যালকনি থেকে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘মমতা তুমি ভাল থেকো।’ তখন তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁর দিকে হাতজোড় করে প্রণাম জানান। এরপর মিছিল এগিয়ে চলে দক্ষিণ কলকাতার বুক চিড়ে। চেনা ছন্দেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করে হেঁটে চলেন। এমন অবস্থায় কয়েকজন যুবতীও ‘দিদি দিদি’ বলে আওয়াজ তোলেন। ভিড় থেকেই চোখ চলে যায় সেখানে দিদির। তাঁদের দেখেও হাত নাড়েন তিনি।
এরপরই ঘটে আসল ঘটনা। তৃণমূল সুপ্রিমোকে দেখতে ততক্ষণে রাস্তার দু’ধারে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। সেখানে এগিয়ে এসে সকলের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনেকেই হাত মেলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আর সেখানেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিজওয়ানুরের মা।তাঁকে দেখে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেন ঘরের মেয়ে। তখনই মুখ্যমন্ত্রী রিজওয়ানুরের মাকে বলেন, ‘আমাদের আর্শীবাদ করো’। দু’হাত তখন মাথায় রাখলেন তিনি।
বুধবার এই রোড-শো ছাড়াও কলকাতার আরও তিনটি কর্মসূচি রয়েছে। দুপুর ১টা নাগাদ বারুইপুরের সাগর সঙ্ঘ মাঠে জনসভা করবেন মমতা। তার পর সেখান থেকেই সোজা চলে আসার কথা উত্তর কলকাতায়। দুপুর ৩টে নাগাদ শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে শুরু হবে মমতার রোড-শো। সেই কর্মসূচি সেরে মেটিয়াবুরুজ এবং কালীঘাট মোড়ে দু’টি জনসভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।