দেশের সাময়,নদিয়া: বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরের পালপাড়ায় পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পদযাত্রা শেষে তিনি সড়কপথে শান্তিপুর রওনা হন। সেখানেই প্রশাসনিক সভা করেন। প্রশাসনিক সভার পাশাপাশি দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে মমতার। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি কেমন চলছে, তারও খোঁজখবর নিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি গোষ্ঠীকোন্দল নিয়েও দলীয় নেতাদের কড়া বার্তা দিতে পারেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে শান্তিপুরের সভা থেকে একাধিক প্রকল্পের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কী কী বলেন, তা দেখে নিন এক নজরে –
নদিয়ার শান্তিপুর থেকে ফের একবার বিজেপিকে নিশানা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এজেন্সি দিয়ে ভোটে জিততে চাইছে বিজেপি। ক্ষমতায় আছে তাই এজেন্সিকে ব্যবহার করছে। কাল নাও থাকতে পারে। মহুয়াকে জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ফের মানুষের ভোটে মহুয়া জিতবে। বিজেপি ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেয়, পরে পালিয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা এদিন ফের একবার শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, রাজ্যের বকেয়া পাওনা দেওয়া হচ্ছে না। তবে এতসবের মধ্যেও বাংলায় উন্নয়ন থমকে থাকবে না। শনিবার থেকে ধরনায় বসার কথা এদিন সভামঞ্চ থেকে ফের একবার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরাজ্যে জোট প্রসঙ্গেও এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো ছিল সরব। তিনি বলেন, বাংলায় তৃণমূল একলা লড়বে। কংগ্রেস জোট করেনি। সিপিএম-কংগ্রেস একজোট হয়ে বিজেপিকে সহায়তা করছে। নদিয়ার শান্তিপুর থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী নবদ্বীপ হেরিটেজ টাউন করার কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করাই প্রধান টার্গেট। নদিয়াতে অনেক কলেজ, থানা তৈরি হয়েছে। কৃষ্ণনগর- রানাঘাটে দুটি বড়বাজার তৈরি হবে ফলে এখানেই তাঁতশিল্পীরা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
*PG তে মিল্ক ব্যাঙ্ক তৈরি করেছি।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে শুধু প্রণাম করলে হয়ে গেল. বলছে একটাই আইন থাকবে। তাহলে তফসিলিদের বিয়ে, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দুদের বিভিন্ন কাস্টের মানুষ নিজেদের রীতিতে বিয়ে করে। বলছে একটাই করতে হবে, কেন?
*আমি কারোর কাছ থেকে এক পয়সা নিই না। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়। সিপিএমেরও কিছু লোক আমাদের দলে ঢুকেছিল। কেউ দোষ করলে তাড়িয়ে দিন, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলবেন না।
*কোটি কোটি টাকা খরচ করে শুধু প্রণাম করলে হয়ে গেল. বলছে একটাই আইন থাকবে। তাহলে তফসিলিদের বিয়ে, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দুদের বিভিন্ন কাস্টের মানুষ নিজেদের রীতিতে বিয়ে করে। বলছে একটাই করতে হবে, কেন?
*NRC হতে দেব না। CAA নামে মিথ্যা কথা বলছে। আমরা সবাই নাগরিক। মতুয়ারা নাগরিক নন? এগুলো ওদের রাজনৈতিক চাল।
*আমি ডিএম দের বলবো ইনার লাইন পারমিশন দিতে হলে প্রশাসনিক কর্তারা দেবেন, কিন্তু BSF দেবে না। ওদের বর্ডার পাহারা দেওয়ার কাজ।
*তুমি বিহার. উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে গরু পাঠাবে, আর দোষ হবে আমাদের। কয়লা কাদের আন্ডারে? তোমরা চুরি করা বেড়াবে, আর তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ…
*রাস্তাগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেলে দুধারে কেবল ইন্ডাস্ট্রি আর ইন্ডাস্ট্রি, দোকান।
*আগে ফুড কর্পোরেশন থেকে চাল কিনত, এখন আমরা চাষির ঘর থেকে চাল কিনি।
*তোমরা মহুয়াকে যতই তাড়িয়ে দাও, কিন্তু মানুষের ভোটে মহুয়া জিতবে।
*রানাঘাটে আপনারা একজনকে জিতিয়েছিলেন, আমার কিছু বলার নেই। মা বোনেরা ভালো করে জানেন তিনি কী, কী করে বেড়াচ্ছেন। এবার কিন্তু রানাঘাটে দয়া করে আমাদের সমর্থন করবেন।
*মনে রাখবেন, নির্বাচনে জেতার জন্য সবাইকে জেলে পুরে দিচ্ছেন। আমাদের সবাই চোর, আর আপনারা সাধু?
*চোরেদের জমিদার। আজ ক্ষমতায় আছে, তাই এজেন্সি নিয়ে ঘুরছে। কাল ক্ষমতা থাকবে না, সব চলে যাবে।
বসন্তের কোকিলের মতো কুহু কুহু করে ডাকে!
*সিপিএম কংগ্রেসের জোট হয়েছে, বিজেপিকে সাহায্য করবার জন্য। আমি জোট করি না, আমি মা মাটি মানুষ।
*আমি ক্ষমতায় এসে দেখলাম, মাত্র ৬ জন মসলিন তাঁতি বেঁচে রয়েছেন। সেই ৬ জনকে আমরা ৬০ জনের ট্রেনিং দিলাম। তারপর মসলিন তীর্থ তৈরি করলাম। আর এখন সেই মসলিন তীর্থ আপনাদের সবার নাম কেড়েছে।
এত সামাজিক সংস্কার কেউ কখনও করেছে? আগে বাবা-মা ভাবত মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিই। কোথায় কী করবে! এখন মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে।
*বাংলা এগিয়ে যাবে। ভারতবর্ষের সবাইকে ভয় দেখিয়ে জেলে পুরে দিলেও কিচ্ছু হবে না। আমাকেও জেলে পুরে দিলে, জেল ফুটো করে বেরিয়ে আসব।
*৩ কোটি মা বোনেরা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন। সংখ্যালঘুরা ৩ কোটি ঐক্যশ্রী কন্যাশ্রী ৯৫ লক্ষ মেয়েরা পেয়েছে। শিক্ষাশ্রী প্রায় ৭৪ লক্ষ।
বিনা পয়সায় রেশন আমরা দিই। নির্বাচনের আগে বিজেপি বলে. পাঁচ কেজি চাল দেব।
আবার বলে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের স্কাই ওয়াক ভেঙে দেবে। আমার বুকের পাটা থাকতে আমি হাত দিতে দেব না।
*আমি গর্বিত নদিয়ার তাঁতশিল্পীদের জন্য। আমি যত শাড়ি পরি সব নদিয়ার। আমি নিজের হাতে এঁকে ডিজাইন করে দিই। কিন্তু যে তাঁতিরা আমাকে শাড়িগুলো বুনে দেয়। কখনও ধনেখালি, কখনও নদিয়া। এর কোনও তুলনা আছে, তুলনা নেই।
*অনেকে বলেন, নির্বাচনের সময়ে মতুয়া। আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম না, ১৫ বছর ধরে বারবার ওঁর কাছে ছুটে গিয়েছি। ওঁর যত চিকিৎসা আমি নিজের টাকায় করেছি। আজ বড় বড় কথা। মতুয়া বিকাশ পর্ষদকেও ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
*ঠাকুরবাড়ির কাছাকাছি হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। বড়মার কাছে গিয়ে বঙ্গভিভূষণ নিজে তুলে দিয়ে এসেছিলাম।
*ঠাকুরনগরে ফুল মাণ্ডি তৈরি হচ্ছে, নতুন সাবস্টেশন হচ্ছে।
*হাবড়া, গাইঘাটায় কাজ হচ্ছে। কৃষক মারা গেলে, তাঁকেও ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
*যাঁরা হাতে মূর্তি তৈরি করেন, হাতের কাজ করেন, যাঁরা সিল্ক তৈরি করে, তাঁত, ডোকরা বানান, অন্তত সবাইকে উৎপাদনের সব সামগ্রী বিশ্ব বাংলা, বাংলার শাড়ি, তন্তুজ, মঞ্জুসায় জায়গা করে দিন।
*কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে দুটি বিগ বাজার তৈরি করার নির্দেশ জেলাশাসকের।
*রাস্তার মান ভাল হয়েছে। কৃষ্ণনগর রানাঘাট, নবদ্বীপ, জলঙ্গী, দেবীপুর যাওয়ার রাস্তা এখন কী হয়েছে বলুন। পূর্ব বর্ধমানের কালনা থেকে শান্তিপুর পর্যন্ত ব্রিজ তৈরি করে দিচ্ছি।
*কল্যাণীতে দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে ব্রিজ হচ্ছে।
*নবদ্বীপকে ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে হেরিটেজ শহর করা হচ্ছে।
*জল স্বপ্ন প্রকল্পে ১১ লক্ষ ৮৬ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া হবে। আর এক বছরের মধ্যে। চার পাঁচ মাসের মধ্যে ৯ লক্ষ ২৯ হাজার বাড়িতে জল পৌঁছে গিয়েছে। আর ৫-৬ মাসে বাকিদের পৌঁছে যাবে।
*নদিয়ায় কন্যাশ্রী, হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ তৈরি করেছি। কল্যাণীতে এডুকেশন হাব, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্য়ালয় করেছি।